বিএনপি-জামায়াতের হরতাল ও অবরোধকে কেন্দ্র করে পুলিশের দায়ের করা নাশকতার মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে কক্সবাজার সদর থানার পুলিশ ৭ জনকে এবং উখিয়া থানার পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি রকিবুজ্জামান জানিয়েছেন, পুলিশ কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে ৪ জন বিএনপি ও ৩ জন জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত। বুধবার দুপুরে গ্রেপ্তার ৭ জনকে সোমবার সদর থানায় দায়ের করা ২ টি নাশকতার মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
কক্সবাজার সদর থানায় গ্রেপ্তার ৭ জন হলেন, বিএনপি নেতা নতুন ফিশারী ঘাট এলাকার মো. ওসমান গণি (২৬), দক্ষিণ রুমালিয়ার ছড়ার নুরুল আলম (৪৭), জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক উত্তর নুনিয়ার ছড়ার মো. আব্দুল্লাহ (২৯), পৌরছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শাহিনুল ইসলাম (৪১), জামায়াত নেতা বাঁশখালী এলাকার আব্দুল কাদের (২৬), আলীর জাহান এলাকার নুরুল আলম (৫৩), পূর্ব লারপাড়ার মো. দ্বীন ইসলাম (২০)।
অপরদিকে উখিয়া থানায় দায়ের করা মামলায় ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক হেলাল উদ্দিন সিকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী।
তিনি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে উখিয়া থানায় দায়ের করা নাশকতার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার দুপুরে গ্রেপ্তারকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
হরতাল ও অবরোধকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারে দুই দিনে ৬ টি থানায় ৭ টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এই ৭ টি মামলায় ১২২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এর মধ্যে মঙ্গলবার উখিয়া থানায় উপ পরিদর্শক আবদুল ওয়াহেদ বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। যেখানে এজাহার নামীয় আসামি ৩৫ জন। কোটবাজার এলাকায় নাশকতার চেষ্টার ঘটনায় এই মামলাটি দায়ের করা হয়। মঙ্গলবার টেকনাফ থানার উপ-পরিদর্শক মিল্টন মন্ডল বাদি হয়ে দায়ের করা মামলায় ২১ জনের নাম এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। টেকনাফের হ্নলি ইউনিয়নের মিনাবাজার এলাকায় নাশকতার চেষ্টা, পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ককটেল বিস্ফোরণের দায়ে এই মামলা হয়েছে।
এর আগে সোমবার পুলিশ বাদি হয়ে কক্সবাজারের ৪ টি থানায় ৫ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যেখানে বিএনপি ও জামায়াতের ৬৬ জন নেতা-কর্মীদের নাম উল্লেখ্য করে এজাহার নামীয় আসামি করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হলেও তার সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি।
এর মধ্যে কক্সবাজার সদর থানায় ২ টি, রামু, মহেশখালী ও ঈদগাঁও থানায় ১ টি করে ৩ টি মামলা হয়েছে। রামু থানায় দায়ের করার মামলার বাদি উপ-পরিদর্শক মুহাম্মদ ইয়াছিন। যেখানে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে ৮ জনকে। ঈদগাঁও থানায় দায়ের করা মামলাটির বাদি উপ-পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম। মামলায় এজাহারনামীয় আসামী ১৫ জন। কক্সবাজার সদর থানায় দায়ের করা ২ টি মামলার মধ্যে একটি বাদি উপ-পরিদর্শক ওবাইদুল হক। যে মামলাটিতে এজাহারভূক্ত আসামির নাম রয়েছে ১৯ জন। কক্সবাজার সদর থানার অপর মামলাটির বাদি উপ-পরিদর্শক মিঠুন সিংহ। যে মামলায় এজাহারে আসামি হিসেবে ১৪ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, দায়ের করা মামলার এজাহাভূক্ত আসামি এবং সংঘটিত ঘটনার ছবি ও ভিডিও দেখে শনাক্ত হওয়াদের গ্রেপ্তারের পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।