আজ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের ৪০ নেতাকর্মী আটক

কক্সবাজারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক, দূরপাল্লার বাস বন্ধ

প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২৩, ১৫:২১ | অনলাইন সংস্করণ

  এএইচ সেলিম উল্লাহ, কক্সবাজার

 

বিএনপি-জামায়াত ও তাদের সমমনা দলগুলো দ্বিতীয় দফায় অবরোধের ডাক দিয়েছে। আজ রোববার (৫ নভেম্বর) থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এতে  দূরপাল্লার বাস বন্ধ রয়েছে। কক্সবাজারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সকাল থেকে কক্সবাজার শহর থেকে উপজেলা সমুহে সকল প্রকার যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলছে। 

পরিবহণ শ্রমিক নেতা শফিউল্লাহ আনসারি দাবি করেছেন অবরোধে এ পর্যন্ত কক্সবাজারের কোথাও তাদের যানবাহন আটকানো বা প্রতিবন্ধকতায় পড়েনি। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে স্বাভাবিক নিয়মে পরিবহণ চলাচল করছে।

তবে কয়েকজন পরিবহন সংশ্লিষ্ট  দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, কক্সবাজার থেকে দূরপাল্লার কোন বাস ছেড়ে যায়নি। তবে নানা সূত্রে, সকালে মহাসড়কে কিছু বাস চলাচলের ছবি প্রতিবেদকের কাছে এসেছে।

বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী জানিয়েছেন, কক্সবাজারের পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে। কিছু লোকালবাস সহ বিছিন্ন ভাবে মানুষ চলাচল করছে। তিনি আরো বলেন, বিশেষ করে  রাতে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার বাস গুলো যাতে নিরাপদে পৌঁছতে পারে সে জন্য জেলা পুলিশের বিশেষ নজরদারি জোরদার করা হয়।

কক্সবাজার শহরে সাথে মহেশখালী দ্বীপ উপজেলায় নৌ রুটেও চলাচল করতে স্প্রীড বোটসহ অন্যান্য ট্রলার সমুহ।

সকাল থেকে কক্সবাজারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্ট ও মহাসড়কে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। প্রতিটি সড়কে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির টহল ও অবস্থান দেখা মিলেছে। টহল দিতে দেখা গেছে নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় পুলিশ সকল প্রকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গুরুত্ব পয়েন্টে পুলিশের অবস্থান নিশ্চিত করার পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে টহল। র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যরাও মাঠে রয়েছে। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকা বা নাশকতার চেষ্টার খবর পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

এদিকে কক্সবাজার-চট্রগ্রাম মহাসড়কের মালুমঘাট হাইওয়ে থানার ইনচার্জ মো. ইকবাল বাহার মজুমদার ও চকরিয়া চিরিঙ্গা হাইওয়ে থানার ইনচার্জ খোকন কান্তি রুদ্র জানান, কক্সবাজার মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে  হাইওয়ে পুলিশ সতর্ক অবস্থান রয়েছে। পুলিশের পৃথক টিম মাঠে দায়িত্বপালন করছে। অবরোধের  নামে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনায় ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তাদ্বয়।

টেকনাফ মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, টেকনাফে পুলিশ সতর্ক অবস্থান রয়েছে।নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্ব পুলিশের পৃথক কয়েকটি টিম সবধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কাজ করছে।

পেকুয়া থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ওমর হায়দার বলেন, বিএনপি- জামায়াতের অবরোধে  পেকুয়া কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্তক অবস্থায় রয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট সহ পুলিশের পৃথক টিম মাঠে রয়েছে।

এদিকে একটি সুত্র বলছে, সকালে পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদল একটি মিছিল বের করার চেষ্টা করে। তবে আইনশৃংখলা বাহিনীর উপস্থিতি দেখে তারা ফটোশেসন করে ছিটকে পড়েন।

এদিকে  স্থানীয়দের সূত্র মতে, বিএনপি ঘোষিত অবরোধে রামুতে কোন চিহ্নই দেখা যায়নি। সকাল থেকে সতর্ক অবস্থান নেয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। মাঠে রয়েছে আওয়ামী লীগ অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

রামু থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু তাহের দেওয়ান বলেন, অবরোধের নামে  নাশকতা ঠেকাতে বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। এই পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। পুলিশের পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা মাঠে রয়েছে।

 

রোববার বেলা ১১ টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) মো. রাসেল জানান, উখিয়া-টেকনাফের মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রয়েছ। মাঠে টহলে রয়েছে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রটের নেতৃত্বে  পুলিশের একাধিক টিম। সরকারি-বেসরকারি অফিস গুলো খোলা, স্বাভাবিক রয়েছে যান চলাচল। 

এদিকে, ভোর থেকে কক্সবাজার শহরের লালদিঘীর পাড়স্থ জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে জড়ো হচ্ছেন কক্সবাজার পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. নজিবুল ইসলামের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা। সেখানে শান্তি সমাবেশ ও অবরোধ বিরোধি বিক্ষোভ মিছিল বের করার কথা রয়েছে। শহীদ সরণীস্থ কক্সবাজার জেলা বিএনপির কার্যালয় সকাল থেকে তালাবদ্ধ থাকলেও অবস্থান করতে দেখা গেছে পুলিশের একটি দল।

রোববার সকালে কক্সবাজার জেলা কারাগারের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, পুলিশের নাশকতা মামলার আজ রোববার পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের ৪০ জন নেতাকর্মী কারাগারে রয়েছে।