বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের দ্বিতীয় দিন
নাশকতা ঠেকাতে কক্সবাজারজুড়ে আইনশৃংখলা বাহিনীর তৎপরতা
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১৬ | অনলাইন সংস্করণ
এএইচ সেলিম উল্লাহ, কক্সবাজার
বিএনপি-জামায়াত ও তাদের সমমনা দলগুলো দ্বিতীয় দফায় টানা ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে কক্সবাজারে নাশকতা ঠেকাতে তৎপর রয়েছে আইনশৃংখলা বাহিনী। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকলেও মহাসড়ক, উপসড়কে ছোট যানবাহন চলাচল রয়েছে। সকাল থেকে কক্সবাজার শহর থেকে উপজেলা সমুহে সকল প্রকার যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলছে।
কয়েকজন পরিবহন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, কক্সবাজার থেকে দূরপাল্লার কোন বাস ছেড়ে যায়নি। তবে নানা সূত্র মতে, সকালে মহাসড়কে কিছু বাস চলাচল করতে দেখেছেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী জানিয়েছেন, কক্সবাজারের পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে। কিছু লোকালবাস সহ বিছিন্ন ভাবে মানুষ চলাচল করছে। তিনি আরো বলেন, বিশেষ করে রাতে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার বাস গুলো যাতে নিরাপদে পৌঁছতে পারে সে জন্য জেলা পুলিশের বিশেষ নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
সোমবার সকাল থেকে কক্সবাজারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্ট ও মহাসড়কে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। প্রতিটি সড়কে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাব, বিজিবির টহল ও অবস্থান দেখা মিলেছে। টহল দিতে দেখা গেছে নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মিজানুর রহমান বলেন, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় পুলিশ সকল প্রকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গুরুত্ব পয়েন্টে পুলিশের অবস্থান নিশ্চিত করার পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে টহল। র্যাব ও বিজিবি সদস্যরাও মাঠে রয়েছে। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকা বা নাশকতার চেষ্টার খবর পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
সোমবার সকালের এ প্রসঙ্গে কুমিল্লা রিজিয়ন চট্টগ্রাম জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. নাসিম খান বলেন, হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়নের এসপি মহোদয়ের নির্দেশে কক্সবাজার চট্রগ্রাম মহাসড়কে চলাচলরত ছোট বড় যানবাহন গুলো চলাচলের ক্ষেত্রে বিশেষ নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে হাইওয়ে পুলিশের পেট্রোল টিম সতর্ক অবস্থান রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, নিরাপদে যাতে যানবাহন চলাচল করতে পারে সেই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ইউনিটের দায়িত্বশীলদের কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) মো. রাসেল জানান, উখিয়া-টেকনাফের মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রয়েছ। মাঠে টহলে রয়েছে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রটের নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক টিম। সরকারি-বেসরকারি অফিস গুলো খোলা, স্বাভাবিক রয়েছে যান চলাচল।
টেকনাফ মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, টেকনাফে পুলিশ সতর্ক অবস্থান রয়েছে। নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্ব পুলিশের পৃথক কয়েকটি টিম সবধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কাজ করছে।
পেকুয়া থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ওমর হায়দার বলেন, বিএনপি- জামায়াতের অবরোধে পেকুয়া কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্তক অবস্থায় রয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট সহ পুলিশের পৃথক টিম মাঠে রয়েছে।
রামু থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু তাহের দেওয়ান বলেন, অবরোধের নামে নাশকতা ঠেকাতে বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। এই পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। পুলিশের পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা মাঠে রয়েছে।
মহাসড়কের চকরিয়া অংশে দায়িত্বরত চিরিঙ্গা হাইওয়ে থানার ইনচার্জ খোকন কান্তি রুদ্র জানান, কক্সবাজার মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে হাইওয়ে পুলিশ সতর্ক অবস্থান রয়েছে। পুলিশের পৃথক টিম মাঠে দায়িত্বপালন করছে।
তার দাবি মতে, বিশেষ করে হয়তাল বা অবরোধের সময় ছদ্মবেশ এ মোটরসাইকেল যোগে চলাচল কালে কিছু দূস্কৃতকারী হঠাৎ যানবাহনে 'পেট্রোল বোমা' নিক্ষেপ করে দ্রুত ছিটকে পড়ে। যার কারনে সন্দেহ জনক লোকজনকে তল্লাসী করা হচ্ছে।
এদিকে, সোমবার ভোর থেকে কক্সবাজার শহরের লালদিঘীর পাড়স্থ জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে জড়ো হচ্ছেন কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নজিবুল ইসলামের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা। সেখানে শান্তি সমাবেশ ও অবরোধ বিরোধি বিক্ষোভ মিছিল বের করার কথা রয়েছে। শহীদ সরণীস্থ কক্সবাজার জেলা বিএনপির কার্যালয় সকাল থেকে তালাবদ্ধ থাকলেও অবস্থান করতে দেখা গেছে পুলিশের একটি দল।