ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

বরিশাল-১ আসনে আ. লীগের একক প্রার্থী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ

বরিশাল-১ আসনে আ. লীগের একক প্রার্থী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বরিশাল-১ (আগৈলঝাড়া-গৌরনদী) আসনে সম্ভাব্য প্রার্থিতা নিয়ে আওয়ামী লীগে কোনো মতবিরোধ নেই। আওয়ামী লীগের একমাত্র প্রার্থী সাবেক চীফ হুইফ বর্তমান সংসদ সদস্য পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া পরিবীক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক (মন্ত্রীর পদমর্যাদায়), স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহই এ আসনের একমাত্র পরীক্ষিত প্রার্থি।

ইসলামী আন্দোলনেও রয়েছেন একক প্রার্থী। তবে বিএনপি ও জাতীয় পার্টিতে একাধিক নেতা রয়েছেন, যারা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থি হয়ে নির্বাচনে লড়তে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।বরিশাল-১ আসনটি আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া পরিবীক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক (মন্ত্রীর পদমর্যাদায়) আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। বরিশালসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের রাজনীতিতে তিনি আভিভাবক ও সিংহপুরুষ। দলের নেতাকর্মীরাও তাকে অভিভাবক হিসেবে শ্রদ্ধা করেন এবং মান্য করেন। দলীয় রাজনীতি, স্থানীয় নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচনেও তার সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন বরিশাল অঞ্চলের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তবে দলীয় মনোনয়ন পেতে বরিশালের ৬ টি আসনে একধিক প্রার্থি থাকলেও কেবলমাত্র বরিশাল-১ আসনে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর বিকল্প কোন প্রার্থি নেই।আসন্ন নির্বাচনে বরিশাল-১ আসনে দলের একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছে তার অবস্থান। এছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বরিশাল-১ আসনে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড হওয়ায় আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় আওয়ামী লীগ এখানে বেশ শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।

বরিশাল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য মতে, একটি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত বরিশাল-১ আসন। এ আসনের সম্ভাব্য ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১২৯টি। এ আসনে তিন লাখ ৪২ হাজার ৯৩ ভোটারের মধ্যে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭০৬ জন পুরুষ ও এক লাখ ৫০ হাজার ৫৩৩ জন নারী রয়েছেন। এছাড়া বরিশাল-১ আসনটি হিন্দু অধ্যূষিত হওয়ায় নির্বাচনে সব সময়ই সুবিধাজনক অবস্থায় থাকে আওয়ামী লীগ। এদিকে দলীয় সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষনা দিয়ে নিরপেক্ষ ত্বত্তাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বোচনের দাবীতে আন্দোলন সংগ্রাম করছে দলটির নেতা কর্মিরা। তারা নির্বাচনে অংশ নেবেন না। সেই হিসেবে বরিশাল সিটি করপোরেশনসহ অন্যান্য সব নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছে দলটি। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী সম্ভাব্য কোনো প্রার্থী সরাসরি মুখ খুলছেন না। তবে বিএনপির একাধিক নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন বিএনপির সংস্কারপন্থি নেতা হিসেবে পরিচিত সাবেক এমপি জহিরউদ্দিন স্বপন, দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সোবহান, কার্যনির্বাহী কমিটির আরেক সদস্য অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, কেন্দ্রীয় কমিটির বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান।

এদিকে, জাতীয় পার্টি থেকে দলের ঢাকা দক্ষিণ শাখার সদস্য সেকান্দার আলী সেরনিয়াবাত ও কেন্দ্রীয় সদস্য এস এম রহমান পারভেজের নাম প্রার্থী হিসেবে শোনা যাচ্ছে। আর এ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আগৈলঝাড়া উপজেলা সভাপতি মেহেদী হাসান রাসেলকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের একাধিক নেতা। নির্বাচনী পরিসংখ্যান বলছে, বরিশাল-১ আসনে সব থেকে বেশি সময় ক্ষমতায় ছিলো আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি। ১০টি সংসদ নির্বাচনে ছয়বার জয়লাভ করেছে আওয়ামী লীগ, আর বিএনপি করেছে তিনবার এবং জাতীয় পার্টি দুবার। ১৯৭৩ সালে এ আসন (তৎকালীন বাকেরগঞ্জ-১৩) থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী হন। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে অন্য যারা নিহত হয়েছিলেন, তাদের মধ্যে আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ছিলেন অন্যতম। শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের মৃত্যুর পর তার বড় ছেলে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ ১৯৯১ সালে বরিশাল-১ আসন থেকে নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৬ সালেও এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ওই সময় আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো বিএনপির কাজী গোলাম মাহবুব। তবে ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী বামপন্থি সাবেক ছাত্রনেতা এম জহিরউদ্দিন স্বপনের কাছে সামান্য ভোটে হেরে যান আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তবে ওই নির্বাচন ও ফলাফল নিয়ে রয়েছে নানান বিতর্ক।

২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তি সময়ে আগৈলঝাড়ায় সংখ্যালঘু নির্বাচনের ঘটনা দেশ জুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃস্টি হয়। আর ২০০১ সালের নির্বাচনের পর থেকেই দুর্বল নেতৃত্বে শুরু হয় বিএনপির বিভক্তির রাজনীতি। তবে ২০০৮ সালে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় এ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস। তিনি বিএনপি প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সোবাহানকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

বরিশাল,আব্দুল্লাহ,প্রার্থী
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত