ঢাকা ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নেত্রকোণায় বউ-শ্বাশুড়ির বিরুদ্ধে জামাইকে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্ঠার অভিযোগ

নেত্রকোণায় বউ-শ্বাশুড়ির বিরুদ্ধে জামাইকে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্ঠার অভিযোগ

নেত্রকোণায় এখলাছ উদ্দিন (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে ডেকে নিয়ে গায়ে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্ঠার অভিযোগ উঠেছে। জেলার মদন উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের বারোরী-সুতিয়াপাড় গ্রামে এখলাছ উদ্দিনের শ্বশুরবাড়িতে সোমবার সকালের দিকে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনায় এখলাছ উদ্দিনের স্ত্রী-শ্বাশুরিসহ তাদের স্বজনরা জড়িত বলে জানা গেছে। আহত এখলাছ উদ্দিন পার্শ্ববর্তী কেন্দুয়া উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের পাঁচহার গ্রামের আমজদ আলীর ছেলে। বর্তমানে তিনি ঢাকায় চিকিৎসাধীন আছেন।

জানা যায়, প্রায় ৬ বছর পূর্বে এখলাছ উদ্দিনের সঙ্গে মদন উপজেলার বারোরি গ্রামের খায়রুল মিয়ার মেয়ে মুক্তা আক্তারের (৩২) বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা আনতে এখলাছ উদ্দিন প্রথমে মালয়েশিয়া ও পরে সেখান থেকে সৌদি আরব যান। এই স্বচ্ছলতা আনার চেষ্ঠাই তার জন্য একপর্যায়ে কাল হয়ে দাঁড়ায়। বিদেশ থেকে তিনি তার স্ত্রীর কাছে অনেক টাকা প্রেরণ করেন। সম্প্রতি তিনি দেশের বাড়ি ফিরে স্ত্রীর কাছে টাকা-পয়সা-সম্পদের হিসাব চান। এতে তাদের মাঝে দ্বন্ধের সৃষ্টি হয়। মুক্তা তার পিত্রালয়ে চলে যান। গত রবিবার মোবাইলে ফোন করে এখলাছ উদ্দিনকে তার শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যান মুক্তা। রাতের খাওয়া সেরে তারা পাশাপাশি ঘুমান। পরে গভীর রাতে ঘুমন্ত এখলাছ উদ্দিনের হাত-পা বেঁধে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে এখলাছ উদ্দিনকে উদ্ধার ও চিকিৎসার জন্য কেন্দুয়া হাসপাতালে পাঠায়। পরে সেখানে থেকে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

অগ্নিদগ্ধ এখলাছ মিয়ার ভাই আনিছ মিয়া ও ভাগ্নে মুসলেম উদ্দিন জানান, ভাই বিদেশ থাকাকালে তার আয় রোজগারের টাকা স্ত্রীর কাছে পাঠাতেন। দেশে ফেরার পর ওই টাকা-পয়সা নিয়ে তারা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে কলহ শুরু হয়। রোববার ফোন করে তার স্ত্রী তাকে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যায়। আগুনে ভাইয়ের সমস্ত শরির পুড়ে গেছে।

এদিকে, মুক্তার পিতা খায়রুল মিয়া সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, এখলাছ উদ্দিন নিজেই তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।

এ ব্যাপারে মদন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.তাওহীদুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ঘটনাটি এখলাছ উদ্দিনের শ্বশুরের বসতঘরের ভেতরেই সংঘটিত হয়েছে। স্থানীয়দের বরাতে তিনি আরো জানান, তারা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বনিবনা হচ্ছিল না। স্ত্রী মুক্তা তার পিত্রালয়ে থাকতে চান, স্বামী এখলাছ উদ্দিন চান তার বাড়িতে রাখতে। এই নিয়ে সোমবার সকাল ৮টার দিকে পারিবারিক সালিশ বসে। এখানে এখলাছ উদ্দিনেরর পক্ষে অন্য কেউ ছিলেন না। উভয়পক্ষের মাঝে কথা কাটাকাটি ও উত্তেজনার একপর্যায়ে এখলাছ উদ্দিন তার শরিরে আগুন ধরিয়ে দেন। মুক্তা ও তার পিত্রালয়ের লোকজনের বিরুদ্ধে এখলাছ উদ্দিনের নিকট থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার ব্যাপারে তার চাচাতো ভাই কছিম উদ্দিনের (৪০) নিকট থেকে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্তের পর প্রকৃত রহস্য উদঘাটিত হবে।

নেত্রকোণা,জামাই,পুড়িয়ে
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত