ঢাকা ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

হাজীগঞ্জে শিশু শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

হাজীগঞ্জে শিশু শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে চতুর্থ শ্রেণিতে অধ্যায়নরত এক স্কুলছাত্রীকে যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে স্কুলের দপ্তরি অভিযুক্ত মো. মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে। তিনি উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের গোগরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম নৈশপ্রহরী। সে এ এলাকার গোগরা গ্রামের বাসিন্দা।

এই ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশু শিক্ষার্থীর নানা প্রধান শিক্ষকের কাছে আজ বুধবার (১৫নভেম্বর) লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ পেয়ে ওই শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলেছেন প্রধান শিক্ষক এবং ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি ম্যানেজিং কমিটিসহ উপজেলা শিক্ষা অফিসকে লিখিতভাবে বিষয়টি অবহিত করেছেন।

শিক্ষার্থীর নানাভাই সংবাদকর্মীদের আরো জানান, নাতিনটা এতিম (বাবা নেই)। দূর্ঘটনাবশত গাছ থেকে পড়ে তার বাবা মারা গেছেন। মেয়েটা অনেক কষ্ট করে নাতিনটাকে পড়ালেখা করাচ্ছে। গত কয়েকদিন পূর্বে এই নাতিনের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে আপত্তিকরভাবে হাত দেয় বিদ্যালয়ের দপ্তরি মো. মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, নাতিন তার মা ও আমাদের কাছে বিষয়টি জানানোর পর আমি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানিয়েছি। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ দিকে দপ্তরি মিজানের বিরুদ্ধে একই বিদ্যালয়ের অপর এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি, একজন নারী অভিভাবকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইমুতে রাতে ও গবীররাতে ফোন দেওয়ার অভিযোগ উঠে। তবে সামাজিকভাবে সম্মানহানীর ভয়ে তারা বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে অপরাগতা প্রকাশ করে বলে স্থানীয়রা জানান।

এছাড়াও ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের বেত্রাঘাত করার অভিযোগ রয়েছে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে। স¤প্রতি সময়ে তিনি মাদক সেবনকালীন সময়ে পুলিশের হাতে আটক হন। পরে পুলিশ তাকে আদালতে সোপর্দ করে।

এ ব্যাপারে সংবাদকর্মীদের কাছে অভিযোগ অস্বীকার করে মিজানুর রহমান বলেন, আমার মেয়েটিও এই বিদ্যালয়ে পড়ে। তাহলে, আমি কিভাবে এমন কাজ করতে পারি? এ সময় তার বিরুদ্ধে আনা অন্যান্য অভিযোগও তিনি অস্বীকার করেন।

প্রধান শিক্ষক মোসাম্মৎ আলেয়া বেগমের সাথে কথা হলে তিনি জানান, বিষয়টি আমি লিখিতভাবে ম্যানেজিং কমিটিসহ ক্লাস্টারের দায়িত ¡প্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।

বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. মাহবুব হাসানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি ঢাকা আছি। অবরোধের কারণে আসতে পারছিনা। তাই প্রধান শিক্ষককে বলেছি, তিনি যেন ম্যানেজিং কমিটির সভা ঢেকে এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একটা অপরাধ দিয়ে অন্য অপরাধের বহিঃপ্রকাশ ঘটে।

ক্লাস্টার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, বিষয়টি আমি শিক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছি। তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, বিষয়টি এটিও স্যারকে ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমাকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। আমি প্রধান শিক্ষককে ম্যানেজিং কমিটির রেজ্যুলেশনসহ লিখিতভাবে জানানোর নির্দেশনা দিয়েছি। পরবর্তীতে তদন্তপূর্বক বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি স্পর্শকাতর। শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছি। তিনি তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

হাজীগঞ্জ,যৌন,অভিযোগ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত