শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে শিশু অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় মামলায় ১৫ বছর আত্মগোপনে থাকা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী মো. মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। শুক্রবার রাতে রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী থানার পোতাহার (পালশাপাড়া) এলাকায় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামী শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার খৈলকুড়া গ্রামের মৃত মন্তাজ আলীর ছেলে।
র্যাব জানায়, ভিকটিম মো. আমিনুল ইসলাম সুমন (১০) একজন মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র ছিলেন এবং গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানার ছয়দানা গ্রামের মো. মোস্তফার ছেলে। আসামী মো. মিজানুর রহমান ভিকটিমের পিত্রালয়ে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করত। ভাড়াটিয়া থাকা অবস্থায় ভিকটিমের সাথে আসামী মো. মিজানুর রহমানের সু-সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ভিকটিম মো. আমিনুল ইসলাম সুমন নিজ বাসা থেকেই মাদ্রাসায় যাতায়াত করত। ২০০৮ সালের ১মে সন্ধ্যা অনুমানিক ৭টার দিকে মাদ্রাসা থেকে বাড়ী ফেরার পথে আসামী মো. মিজানুর রহমান ভিকটিমকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। ভিকটিম মো. আমিনুল ইসলাম সুমন মাদ্রাসা থেকে সময়মত বাড়ীতে না আসায় তার বাবা মাদ্রাসায় যায় এবং তাকে সেখানে না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করে। খোঁজাখুজির একপর্যায়ে আসামী মো. মিজানুর রহমান মোবাইল ফোনে ভিকটিমের বাবাকে বলেন যে, ভিকটিম মো. আমিনুল ইসলাম সুমন তার কাছে সুরক্ষিত আছে এবং ছেলেকে ফেরত পেতে হলে মুক্তিপণ হিসেবে ১ লাখ টাকা দিতে হবে।
পরবর্তীতে ভিকটিমের বাবা জয়দেবপুর থানায় বাদী হয়ে অপহরণ ও মুক্তিপণ মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার করলেও আসামী মিজানুর রহমান পালিয়ে যায়। আসামীর অনুপস্থিতিতে আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত করেন। সে কারণে গত ১৫ বছর যাবৎ মিজানুর রহমান দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিল।
অবশেষে বিভিন্ন তথ্য- উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে র্যাব-১৪, জামালপুর এবং র্যাব-৫, রাজশাহী’র যৌথ অভিযানে শুক্রবার রাতে আসামী মো. মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। পরে আটককৃত আসামীকে ঝিনাইগাতী থানায় উক্ত মামলায় হস্তান্তর করা হয়।
এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনিরুল আলম ভুইয়া সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, র্যাব-১৪ কর্তৃক ধৃত আসামীকে উপরোক্ত মামলায় শনিবার সকালে শেরপুর আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে।