ফেনীর পরশুরাম উপজেলায় মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
জানা যায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গত দুইদিনের টানা বৃষ্টিতে ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের ঠেলায় ফুলগাজী-পরশুরামে অবস্থিত মুহুরী নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় গতকাল রাত থেকে নদীতে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। আজ ভোরবেলায় পরশুরামের চিথলিয়া ইউনিয়নে নদীর বাঁধ ভেঙে যায়। এতে দক্ষিণ শালধর ও মালিপাথর গ্রামে পানি ঢুকে প্রায় ২০-৩০টি পরিবারের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। কৃষকের মাঠভরা পাকা ধানি জমি পানির নিচে তলিয়ে যায়। আবাদকৃত সবজীর বীজতলা, ক্ষেত ও কিছু পুকুর পানির নিচে তলিয়ে যায়।
এদিকে ফুলগাজী উপজেলায় নদীর বাঁধ না ভাঙলেও তবে ফুলগাজী বাজার সড়কে ও মানুষের ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে পানি উঠে যায়। এতে ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষজন চরম ভোগান্তিতে পড়েন। ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় গত কিছুদিন যাবত নদীর বাঁধের কিছু অংশ কেটে সেচ প্রকল্পের পাইপলানে আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ করছিল সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা। হঠাৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধের কাটা অংশ দিয়ে পানি বের হতে থাকে। এদিকে দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা দুর্গত এলাকায় পানিবন্দি পরিবারগুলোর মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে চিথলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন বলেন, নদীর বাঁধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন কয়েকদিন যাবত সেচ প্রকল্পের পাইপ বসানোর কাজ করছিল। নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে আমার ইউনিয়নের দক্ষিণ শালধরে মুহুরী নদীর বাঁধের অংশে ২০-২৫ ফুট ভেঙে যায়। ভোর থেকে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। এতে ২০-২৫ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন,পানিবন্দি পরিবারগুলোর মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করেন।
ফুলগাজী বাজারের ব্যবসায়ীরা বলেন, নদীতে পানি বাড়লে বাজারে হাটু পরিমাণ পানি উঠে যায়, আমাদের দোকানপাটে পানি ডুকে পড়ে, মালপত্র নস্ট হয়ে যায়। আমরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হই। প্রতিবছর এ ভোগান্তির শিকার হচ্ছি আমরা। তারা বলেন, বাজারের পাশ দিয়ে নদীর সাথে সংযোগ রেখে একটি নিম্মমানের স্লুইচগেট নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এটি বাজারের ব্যবসায়ীদের জন্য আরো কাল হয়েছে। নদীতে পানি বাড়লে এই গেইট দিয়ে পানি প্রবেশ করে।