ঘূর্ণিঝড় মিধিলি’র প্রভাব

চাঁদপুরে রোপা আমনসহ ৬১০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতি

প্রকাশ : ১৯ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:৪৬ | অনলাইন সংস্করণ

  চাঁদপুর প্রতিনিধি

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মিধিলি’র প্রভাবে বাতাসের গতি অতি বৃদ্ধি ও ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় চাঁদপুর জেলায় ১৯০ হেক্টর আধাপাকা ও পাকা আমন ধান এবং অন্যান্য ৪২০ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়সাধিত হয়েছে। যার ফলে আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন শত-শত কৃষকরা। তাদের মাথায় যেন এখন আকাশ ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে।

শনিবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর চাঁদপুর জেলা কার্যালয় থেকে এই তথ্য জানা যায়।

ঘটনাস্থলে সরেজমিনে, জেলা সদরের বাগাদী ইউনিয়নের ছোবহানপুর, বাগাদী গ্রাম, নানুপুর, বালিয়া ইউনিয়নের সাপদি, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১ নম্বর বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সকদি রামপুর ও আশপাশের এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে,আমন ধানের অধিকাংশ জমির ফসল পানিতে তলিয়ে আছে।

ছোবহানপুর ও বাগাদী গ্রামের জমিগুলোতে কৃষকেরা পাকা ধান দু-দিন আগে কেটে জমিতে শুকানোর জন্য রেখেছেন। সেসব জমিতে এখনও হাঁটু সমান পানি। অনেক জমির পাকা ও আধাপাকা ধান বাতাসে নুয়ে পড়েছে। এসব এলাকার খাল ও নালা ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই।

ছোবহানপুর মাঠে কেটে রাখা ধান পানি থেকে তুলে আনছেন কৃষক মো. হাবিব। তিনি জানান, এ বছর তিনি পৌনে ৩ একর জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছেন। অধিকাংশ জমি এখন পানির নিচে। প্রায় এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এখন কি করবেন তিনি বুঝতে পারছেন না।

বাগাদী মাঠের কৃষক হাবিব বেপারী ও এবাদ শেখ জানান, তাদের পুরো মাঠের অধিকাংশ জমির ধান হাঁটু সমান পানির নিচে রয়েছে। অনেকেই ধান কেটে শুকানোর জন্য দুই-তিন দিন আগে রেখেছেন। চিন্তাও করতে পারেননি ঘূর্ণিঝড়ে এমন ক্ষতির সম্মুখীন হবেন তারা।

ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের কৃষক ছিদ্দিকুর রহমান জানান, সকদিরামপুর মাঠে তার দেড় একর জমিতে বিআর-৪৯, বিনা-৭ ও ১৭ ধানের আবাদ করেছেন। আগে কেটে রাখা ধান শ্রমিক নিয়ে তুলছেন তিনি।

ওই এলাকার আরেক কৃষক আব্দুল খালেক বেপারী কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানালেন, তার সব শেষ। প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করে এক একর জমিতে বিআর-২২ জাতের ধানের আবাদ করেছেন। এই ধানগুলো উচ্চতায় অনেক বড়। যার ফলে ঘুর্ণিঝড়ে বাতাসের তীব্রতায় সব ধান জমিতে নুয়ে পড়েছে। এ বছর তিনি বড় ধরনের লোকসানে পড়বেন। তিনি সরকারের কাছে সহায়তা কামনা করেন।

চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. সাফায়েত আহম্মেদ সিদ্দিকী জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবের কারণে জেলায় আধাপাকা ও পাকা রোপা আমান ১৯০ হেক্টর, সরিষা ১৪০ হেক্টর, আগাম শীতকালীন সবজি ২৭০ হেক্টর ও বীজতলা (ধান) ১০ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমাদের কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছেন। জরিপ কার্যক্রম শেষ হলে আর্থিক ক্ষতিসাধনের পরিমাণ জানা জানাতে পারবেন।