চাঁদপুরে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে নৌবাহিনীর জাহাজ ‘অতন্দ্র’ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল মঙ্গলের সারা দিন।
চাঁদপুর শহরের তিন নদীর মোহনা সংলগ্ন ডাকাতিয়া নদীতে পুরাতন লঞ্চঘাটে মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) দুপুর ২টা থেকে বিকেলে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য জাহাজটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছিল।
মঙ্গলবার বিকেলে জাহাজটিতে ঘুরতে আসেন অসংখ্য চাঁদপুর জেলাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত দর্শনার্থীরা। এদের মধ্যে পুরাণ বাজার এলাকার বাসিন্দা নিলয় জানান, প্রতিবছরই জাতীয় দিবস ও সশস্ত্র বাহিনী দিবসে এই ঘাটে যুদ্ধ জাহাজ এসে থাকে। জাহাজ ঘুরে খুবই ভালো লেগেছে। সাধারণত এইসব জাহাজে ওঠা সম্ভব না। জাহাজের কর্মকর্তারা জাহাজের বিভিন্ন অংশে থাকা যন্ত্রগুলোর কার্যক্রমের বর্ণনা দিয়েছেন সকলের কাছে। বিশেষ করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আগ্রহ করে জাহাজ সম্পর্কে জানতে বিভিন্ন প্রশ্ন করে তাদের প্রশ্নের জবাব জানতে পেরেছেন।
শহরের ডিসি অফিস এলাকা থেকে বাবার সঙ্গে ঘুরতে আসা শিশু শ্রেণির আবরার ফাইয়াজ। সে তার বাবাকে জিজ্ঞাসা করে আমি কি বড় হলে এই জাহাজ চালাতে পারব? আমাকে এই জাহাজ চালাতে দেবে? জাহাজে উঠতে পেরে সে খুবই আনন্দ পেয়েছে বলে জানান। এ সময় শহর ও আশপাশের এলাকার নারী-পুরুষ ও শিশুরা নৌবাহিনীর জাহাজ অতন্দ্র’টি ঘুরে দেখেছেন।
এছাড়াও নৌ অঞ্চলের মসজিদে বীর শহীদদের আত্মার মাগফেরাত ও দেশের সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়ার আয়োজন করা হয় বলে জানান জাহাজের কর্মকর্তারা। তবে জাহাজটির বিষয়ে গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি জাহাজের কমান্ডার ও কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, বানৌজা অতন্দ্র জাহাজ টির দৈর্ঘ্য ৫০.৪ মিটার, প্রস্থ ৭.৫ মিটার, এবং গভীরতা ৪.১ মিটার। এই টহল জাহাজটির ওজন ৩৫০ টন এবং জাহাজটিতে রয়েছে ২টি ৩০৪১ অশ্বশক্তি (২২৭০ কিলোওয়াট) বিশিষ্ট এমটিইউ ডিজেল ইঞ্জিন (জার্মানি), ১টি ১২০ কিলোওয়াট বিশিষ্ট সিএটি জেনারেটর, ১টি ৪৯ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সিএটি ইমারজেন্সি জেনারেটর, জেডএফ ৭৬০০ ট্রান্সমিশন এবং ৪টি শ্যাফট। ফলে জাহাজটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২৪.৫০ নটিকেল। সমুদ্রপৃষ্ঠ অনুসন্ধানের জন্য এটি ১টি ফুরুনো ডিআরএস ৪ ডব্লিউ রাডার এবং ১টি এফএআর-৩৩২০ চার্ট রাডার দ্বারা সজ্জিত। এছাড়াও জাহাজটি ৪৫জন সদস্য নিয়ে একনাগাড়ে ৭ দিন অভিযান পরিচালনা করতে সক্ষম আছে।