সবজি চাষে কীটনাশকের ব্যবহারে বেড়েছে স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা

প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ১৭:১৩ | অনলাইন সংস্করণ

  রংপুর ব্যুরো

রংপুর অঞ্চলে শীতকালীন সবজি চাষ প্রতিনিয়তই বেড়েই চলেছে। কৃষকরা ফসল পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভালো ফলনের আশায় অনেক কৃষক সবজি চাষে ব্যবহার করছেন অতিরিক্ত কীটনাশক। সেসব সবজি খেলে মানুষ কিডনি উচ্চ রক্তচাপসহ নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারেন বলছেন সংশ্লিষ্টজনরা। এর ফলে বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা। চিকিৎসকরা বলছেন- কীটনাশকের বিষক্রিয়ায় ক্যান্সার ও উচ্চ রক্তচাপসহ নানারোগ হতে পারে।

তবে সচেতন মহল বলছেন, কৃষক-ভোক্তা পর্যায়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। প্রচার করতে হবে মাত্রারিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ করা সবজি মানবদেহের জন্য জন্য ক্ষতিকর। তারা শাক-সবজিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার দাবি করেছেন।

কৃষি বিভাগ ও মাঠ পর্যায়ে গিয়ে জানাগেছে, রংপুর অঞ্চল হচ্ছে কৃষি অর্থনীতির ওপর নির্ভর এলাকা। প্রতি বছর এ প্রচুর পরিমাণ সবজি চাষাবাদ হয়। চলতি মৌসুমেও ব্যতিক্রম নয়। রংপুর মহানগরীসহ জেলার আট উপজেলায় শীতকালীন আগাম সবজি চাষে ঝুঁকছেন কৃষক। বেশি লাভের আশায় ফুল ও বাঁধা কপি, বেগুন, পটল, করলা, টমেটো, শিমসহ অন্য সব সবজিতে কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে। কীটনাশক প্রয়োগের পর সাধারণত কোনটি ৩দিন, কোনটির ৭দিন এবং কোনটির ২১ দিন পর্যন্ত সময় লাগে। কোন কোন সবজিতে সময় লাগে মাসের বেশিও। কীটনাশক প্রয়োগ করে এই সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করেন না অধিকাংশ কৃষক। কীটনাশক প্রয়োগের ৩-৪ দিন পরেই কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল বাজারে নিয়ে আসেন। কোন কোন কৃষক একদিন পরেই তারা জমি থেকে তুলেন। আবার কোন কোন কৃষক সকালে কীটনাশক দিয়ে বিকেলে সবজি তুলে বাজারে বিক্রি করছেন। আর ক্রেতাসহ সাধারণ মানুষজন সেইসব সবজি তাজা ভেবে ক্রয় করেন। অথচ এসব শাক-সবজি খাওয়া স্বাস্থ্যের হুমকি স্বরূপ। এতে শরীরে নানা রোগ হতে পারে।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছেন, এ বিষয়ে কৃষকদের সচেতন করতে কাজ করে যাচ্ছে। সেই সাথে বিষমুক্ত সবজি চাষে আগ্রহী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
কৃষকরা জানান, সবজি চাষের আগে তারা জমি আবাদযোগ্য করার জন্য প্রথমেই কীটনাশকের ব্যবহার করেন। ঘাস ও আগাছা ধ্বংস করার জন্য বিষ দেয়া হয় ক্ষেতে। পরে শুরু করেন সবজিতে।

নগরীর তামপাট এলাকার হুমায়ন রশিদ শাহীন ও রাধাবল্ভ এলাকার আশরাফুল আলম বলেন, অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের কারণে আগেরমত আর শাক-সবজি মজা লাগে না। গন্ধ গন্ধ লাগে। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকির হুমকি দেখা দিচ্ছে।

বিক্রেতারা বলছেন, তারা পাইকারি বাজার থেকে কিনে আনেন। পরে তা অন্যদের মতো বাজারে বিক্রি করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, প্রায় প্রতিটি কীটনাশকের গায়ে লেখা আছে, খালি গায়ে বা বাতাসের বিপরীতে স্প্রে করা যাবে না। সে নিয়মটিও মানছেন না কৃষকরা। আর মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে মাটিও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এতে  বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশষ্কা।

শনিবার বিকলে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মো: ওবায়দুর রহমান মন্ডল জানান শাক-সবজিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। কৃষকদেরও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে ।