আইনী নিষেধাজ্ঞায় অবমুক্ত
মেঘনায় জেলেদের জালে উঠলো ২০০ বছর বয়সী ৭১ কেজি ওজনের কাছিম
প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:১১ | অনলাইন সংস্করণ
শওকত আলী, চাঁদপুর
চাঁদপুর নৌ-সীমানার মেঘনা নদীর চরভৈরবীতে একটি কচ্ছবের (কাছিম) বয়স নির্ধারণ করা হলো প্রায় ২০০ বছর। এ বয়সের হিসেব কষে দিলেন খোদ চাঁদপুরের বন বিভাগ কর্মকর্তারা। এ কচ্ছবের ওজন মেপে দেখা গেল ৭১কেজি। যার বাজার ধর উঠে ৭৫ হাজার টাকা। তবে সখের বসে কিনে নিয়ে কাছিমটি আর খাওয়া ভাগ্যে হলো’না ত্রিপুরাসহ অনেকের।
সনাতন ধর্মীয় (হিন্দু সম্পাদয়ের) লোকেরা এ কচ্ছবটি(কাছিম) জবাই করে অনেকেই এর গোস্ত খেয়ে স্বাদ গ্রহন করার জন্য প্রস্তুতি নিতে যাচ্ছে,ঠিক সেই সময় চাঁদপুর সদর মডেল থানার একদল পুলিশ সদস্য সেখানে হানা দিয়ে প্রায় বেশ বয়স্ক (প্রবীন ও বুড়া) অনেক বয়সের এ বৃদ্ধ কচ্ছব অথবা কাছিমটিকে জবাই থেকে রক্ষা করে থানায় নিয়ে যান।
পরবর্তীতে এটিকে বন বিভাগের সহযোগিতায় মেঘনা নদীতে অবমুক্ত করা হয়। বন বিভাগ বলছে-কাছিমটির বয়স প্রায় ২০০ বছর হবে।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) রাতে কাছিমটিকে চাঁদপুর শহরের মোলহেডে তিন নদীর মোহনায় মেঘনা নদীতে কচ্ছবটি অবমুক্ত করেন সদর মডেল থানা পুলিশের সহযোগিতায় সদর উপজেলা বনবিভাগ।
গত কয়েকদিন আগে জেলার হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী এলাকার জেলেদের জালে মেঘনা নদীতে ধরা পড়ে কচ্ছবটি (কাছিমটি)। পরে শনিবার সকালে মো. জসিম উদ্দিন নামে জনৈক ব্যবসায়ী এটি ক্রয় করে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে আসেন সদরের বালিয়া ইউনিয়নে। জসিমের কাছ থেকে এই ইউনিয়নের বালিয়া বাজার এলাকার সনাতন ধর্মের ত্রিপুরা জাতির লোকজনসহ অনেকে মিলে ৭৫ হাজার টাকায় কাছিমটি ক্রয় করেন ।
কাছিমটি ত্রিপুরা জাতির লোকজনসহ অন্যেরা ক্রয় করে তাদের বাড়ীতে বাগানে রাখলে এলাকার শত শত মানুষ উৎসাহিত হয়ে ২০০ বছর বয়সী কাছিম দেখতে ভীড় জমায়। এক পর্যায়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে জানাজানি হলে শেষ বিকেলে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত হয় এবং পরবর্তীতে সদর বন বিভাগের কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন সেখানে গিয়ে হাজির হন।
ত্রিপুরা জাতির কর্তা ব্যাক্তি(নেতা) খোকন ত্রিপুরা জানান, মূলত আমরা এটি খাওয়ার জন্য ক্রয় করেছি। এটি জবাই করে গোশস্ত খাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে ছিলাম। পরে প্রশাসনের লোকজন আসার পরে তাদেরকে কাছিমটি দিয়ে দিয়েছি। আমাদের বাড়ীর বয়স্ক লোকদের ধারণা এটির বয়স প্রায় ২০০ বছরের বেশী হবে। আমাদের জাতির লোকজন এ ধরণের কাছিম পূর্বে থেকে খেয়ে আসছেন বলে তিনি সকলকে উদ্দের্শে জানান। তবে এধরনের কাছিম এখন সচরাচর খুব কম পাওয়া যায়। পূর্বে অনেক পাওয়া যেত। এ ধরনের কাছিমের গোশস্ত অনেক সুস্বাদু বলে খোকন ত্রিপুরা জানালেন।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মিজানুর রহমান জানান, কাছিম ধরা পড়ার খবর পেয়ে অফিসার ইনচার্জ আমাকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে বন বিভাগের সাথে যোগাযোগ করে এটি উদ্ধার করে নিয়ে আসি এবং অবমুক্ত করার ব্যবস্থা করি।
চাঁদপুর সদর বন বিভাগের কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন জানান, নদী থেকে কাছিম ধরে বিক্রি ও মাংস খাওয়া সম্পূর্ণ অবৈধ। এই ধরণের কাছিম এখন খুবই দেখা যায়। বিশাল আকৃতির কাছিমটি জবাই করার প্রস্তুতিকালে খবর শুনে সেটি পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার করা হয়। পরর্তীতে শহরের বড় স্টেশন তিন নদীর মোহনা মেঘনায় ছেড়ে দিয়ে কাছিমটি অবমুক্ত করা হলো।
তিনি আরো জানান, উপস্থিত সকলকে বলা হয়েছে, যারা নদী থেকে কাছিম ধরবে ও বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এধরনের কাছিম ধরার কোন খবর পাওয়া পেলে পুলিশ এবং আমাদেরকে জানাবেন। যারা জানাবেন তাদেরকে পুরুস্কার দেওয়া হবে।