আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্বনির্ভর ধামসোনা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ঢাকা-১৯ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার (২৭ নভেম্বর) রাতে পল্লীবিদ্যুত বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সাভার ও আশুলিয়ায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিজের স্বতন্ত্র প্রার্থীতা জানিয়ে তাকে একটিবার সুযোগ প্রদানের অনুরোধ জানান তিনি।
এসময় তিনি বলেন, 'আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের মনোনয়ন দিয়েছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে আমি ঢাকা-১৯ আসনের জন্য মনোনয়ন চেয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে আমি মনোনয়ন পাইনি। ৩০০ আসনে ৩৩৫৯ জন মনোনয়ন চেয়েছেন। কিন্তু ৩০০টির অধিক আসন না থাকায় বাকিরা বঞ্চিত হয়েছেন। তবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা এবার প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা যাচাই করার জন্য প্রতি আসনে একজনকে নৌকার প্রতীক দিয়েছেন এবং বাকীদেরকে নির্বাচন করার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। এজন্য আমি তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ এবং আমার কৃতজ্ঞতা জানাই। কোন্ নেতা কতটুকু জনপ্রিয় সেটা এবারের নির্বাচনে প্রমাণ হবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নি:সন্দেহে একটি ফ্রি ও ফেয়ার নির্বাচন হবে উল্লেখ করে গণমাধ্যমকে সাইফুল ইসলাম জানান, 'এই নির্বাচনে কোনোরকম পক্ষপাতমূলক আচরণ কেউ করতে পারবে না এব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। এজন্য আমি আপনাদের মাধ্যমে ঢাকা-১৯ এর সকল সম্মানিত ভোটারদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আমি নিজেকে ঘোষণা করছি।'
এসময় আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্বনির্ভর ধামসোনা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নিজের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের কথা তুলে ধরেন।
এবিষয়ে তিনি জানান, বাংলাদেশের সবচেয়ে জনবহুল ও আয়তনে সবচেয়ে বড় স্বনির্ভর ধামসোনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসাবে তিনি ৭ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, অত্যন্ত সফলভাবে তিনি তার সেই দায়িত্ব পালন করেছেন। সমগ্র ইউনিয়ন জুড়ে টেকসই রাস্তা, কালভার্ট, ড্রেনসহ আরসিসি ঢালাইয়ে নির্মিত অসংখ্যা রাস্তাঘাটের মাধ্যমে এলাকার উন্নয়ন করেছেন।
কোনদিন অন্যায়ের সাথে আপোষ করেন নাই উল্লেখ করে ঢাকা-১৯ এর এই স্বতন্ত্র প্রার্থী জানান, ন্যায় বিচারের ক্ষেত্রে সবসময় অবিচল থাকার কারণে হয়তো অনেকেরই বিরাগভাজন হয়েছেন। তবে তিনি এসব নিয়ে ভাবেন না।
ঢাকা-১৯ এর ভোটারদের লক্ষ্য করে সংবাদ সম্মেলনে এসময় আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'বিগত দিনে এই অঞ্চলে অনেক সংসদ সদস্য ছিলেন, বর্তমানেও আছেন; কিন্তু এই অঞ্চলে তাদের প্রত্যেকের কার্যক্রম সম্পর্কে সকলে অবগত রয়েছেন। আপনারা হয়তো বলবেন, আমি নির্বাচিত হয়ে যে তাদের পদাংক অনুসরণ করবো না- তার কী নিশ্চয়তা আছে? আমি নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি, আমি ৭ বছর চেয়ারম্যান থাকাকালেই সেই খারাপ পথ অবলম্বন করতে পারতাম। কিন্তু সেটা যে আমি করিনি তা সাভার-আশুলিয়ার মানুষ তথা সমগ্র ঢাকা জেলার মানুষ জানেন।'
এপ্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, 'এই অঞ্চলের যারা ভোটার আছেন, আমাকে ভোট দিতে তারা কোনোরকম দ্বিধাদ্বন্দ্ব করবেন না। কারণ আমি আপনাদের সবার কাছে পরিচিত। অনেকে তো দোয়া করে যাতে এই আসনে আমি নির্বাচনে দাঁড়াই; কারণ আমাকে তারা ভালোভাবে চিনে। আর আমাকে মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে তার একটি প্রধান কারণ- ব্যক্তিগতভাবে আমি সাহসী এবং একজন ন্যায়পরায়ণ মানুষ।'
সংবাদ সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে সাইফুল ইসলাম ঢাকা-১৯ আসনের সকল ভোটারদেরকে সাভার-আশুলিয়ায় আরও অধিকতর উন্নয়নের স্বার্থে তাকে একটিবার সুযোগ দিয়ে মূল্যায়নের অনুরোধ জানান।
যদি বিএনপি নির্বাচনে আসে তবে তার অবস্থান কী হবে সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, বিএনপি নির্বাচনে এলে তখন দল থেকে একটি নির্দেশনা আসবে। সেই দলীয় সিদ্ধান্তকে তিনি সবসময় মেনে নিতে প্রস্তুত।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে পাথালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ান, ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামীম আহমেদ সুমন প্রমুখসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।