কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে আচরণবিধি লঙ্ঘন
সালাহউদ্দিন সিআইপি ও এমপি জাফরকে আদালতে তলব
প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮:৫৯ | অনলাইন সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পূর্ব নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপি এবং বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জাফর আলমের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চেয়েছে আদালত।
একই সংসদীয় আসনের দায়িত্ব প্রাপ্ত নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) এই ব্যাখ্যা তলব করে ২ জন প্রার্থীকে পৃথক পত্র দিয়েছেন।
পত্রে বলা হয়েছে, দৈনিক কালবেলা পত্রিকায় গত ৩০ নভেম্বর প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপি কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে কক্সবাজারের চকরিয়ার হারবাংস্থ কক্সবাজার-চট্টগ্রাম হাইওয়ের পাশে ইনানী রিসোর্ট থেকে বিশাল মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে চকরিয়া পৌর বাস টার্মিনালে আসেন। সেখানে সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপি বিশাল জনসমাবেশ করেন। সমাবেশে সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপি সহ তাঁর নেতাকর্মীরা বক্তব্য দিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে নির্বাচনি প্রচারণা চালান।
পত্রে বলা হয়, এ ধরনের কাজ "সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮ এর ৬(খ), ৬(গ), ৮(ক) এবং ১২ এর সুস্পষ্ট লংঘন।" এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে নির্বাচন কমিশনে প্রতিবেদন পাঠাতে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ অবস্থায় উল্লেখিত বিষয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপি'র কোন বক্তব্য থাকলে তা আগামী ৩ ডিসেম্বর দুপুর ২ টার মধ্যে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান তথা কক্সবাজারের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারকের কার্যালয়ে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে বা উপযুক্ত কোন প্রতিনিধির মাধ্যমে লিখিত বক্তব্য দিতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ১৯-এ (৫) (এ) অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে, কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাফর আলমকে ৩০ নভেম্বর নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচন পূর্ব নির্বাচনি আচরণ বিধি লঙ্ঘনজনিত বিষয়ে পৃথক আরেকটি পত্র দিয়েছেন।
পত্রে বলা হয়েছে, দৈনিক দেশবিদেশ, দৈনিক যুগান্তর পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে পাওয়া ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে গত ২৭ নভেম্বর প্রাপ্ত সংবাদ থেকে জানা গেছে, কক্সবাজারের চকরিয়া থানা রাস্তার মাথায় কক্সবাজার-চট্টগ্রাম হাইওয়ের পশ্চিম পাশে সিস্টেম চকরিয়া কমপ্লেক্সের সামনে নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে বিশাল জনসমাবেশ করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাফর আলম নিজেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোষনা করে নির্বাচনি প্রচারণা চালান। সমাবেশে বিশাল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত হওয়ায় কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে স্বাভাবিক যান চলাচল ব্যাহত হয়। প্রার্থী জাফর আলমের পুত্র তানভীর আহমদ সিদ্দিকী তুহিনসহ সমাবেশে অনেকেই উস্কানীমূলক ও মানহানিকর বক্তব্য রাখেন।
পত্রে বলা হয়, এ ধরণের কাজ "সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮ এর ৬(খ), ৬(গ), ৮(ক) এবং ১২ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।"
এ অবস্থায় কক্সবাজার-১ আসনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী জাফর আলমের এ বিষয়ে কোন বক্তব্য থাকলে তা আগামী ৩ ডিসেম্বর সকাল ১১ টার মধ্যে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান তথা কক্সবাজারের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারকের কার্যালয়ে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে বা উপযুক্ত কোন প্রতিনিধির মাধ্যমে লিখিত বক্তব্য দিতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ১৯-এ (৫) (এ) অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর কক্সবাজার জেলার কোন সংসদীয় আসনে এই প্রথম নির্বাচন পূর্ব নির্বাচনি আচরণ বিধি লংগনজনিত বিষয়ে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যানের পক্ষ হতে ব্যাখ্যা তলব করা হলো।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধিমালায় বলা হয়েছে, কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা এর মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাঁদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি ভোট গ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনের তিন সপ্তাহ সময়ের আগে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচার শুরু করতে পারবেন না।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে আগামী ৭ জানুয়ারি। সে হিসাবে ১৫ ডিসেম্বরের আগে কেউই নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারবেন না।
এছাড়া, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধিমালা অনুসারে, কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা তাদের মনোনীত প্রার্থী বা তাঁদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি কোনো ট্রাক, বাস, মোটরসাইকেল বা অন্য কোনো যান্ত্রিক যানবাহন নিয়ে মিছিল বের করতে পারবেন না। মহড়াও করতে পারবেন না।