ঈশ্বরগঞ্জে সরকারি প্রণোদনার আওতায় ১০ হাজার ৭৫৫ জন কৃষক
প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮:২০ | অনলাইন সংস্করণ
ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ক্রমাগত বাড়ছে জনসংখ্যা প্রতিদিন কমছে কৃষিজমি। বিপুল জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে কৃষির উপর নির্ভরতা বাড়ছে। অথচ বসতঘর, মহাসড়ক নির্মাণের ফলে প্রতিনিয়ত কমে যাচ্ছে ফসলি জমি।
জনসংখ্যার চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে কিভাবে একই জমি থেকে অধিক ফসল উৎপাদন করা যায় সেই প্রচেষ্টা চলমান কৃষি বিভাগের। আর তাই তো কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও উৎপাদন ব্যয় কমাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার।
সেই ধারাবাহিকতায় ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে সরকারের গৃহীত উদ্যোগ বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ। মাঠ পর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের তৎপরতায় এ অঞ্চলে কমেছে পতিত জমির পরিমাণ। কৃষি প্রণোদনায় বিনামূল্যে বিভিন্ন ফসলের উন্নত জাতের বীজ ও সার পেয়ে চাষাবাদে উৎসাহিত হচ্ছেন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরা। সব মিলিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের পরামর্শ ও কৃষি প্রণোদনা সহায়তা এ অঞ্চলের কৃষিকে এগিয়ে নিচ্ছে সমৃদ্ধির পথে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় গম, ভুট্টা, সরিষা, সূর্যমুখী, চিনা বাদাম, পেঁয়াজ ও মুগ ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১০ হাজার ৭৫৫ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫০ জন গম, ৩০০ জন ভুট্টা, ২ হাজার জন সরিষা, ১৫ জন সূর্যমুখী, ১০ জন চিনাবাদাম, ২০ জন গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ ও ১০ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে মুগ বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। রবি মৌসুমের পাশাপাশি চলতি অর্থ বছরে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বোরো মৌসুমে চাষাবাদের জন্য ৩ হাজার ৫০০ জন কৃষকের মাঝে হাইব্রিড জাতের ধান বীজ এবং ৪ হাজার ২০০ জন কৃষকের মাঝে উফসী জাতের ধান বীজ ও সার বিতরণ করা হবে।
সরকারি সহায়তা বিতরণ ছাড়াও আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের জন্য কৃষকদের উৎসাহী করা হচ্ছে। পাশাপাশি কৃষকদের খেতের পরিচর্যায় প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে মাঠ পর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলেও দাবি কৃষি অফিসের কৃষি অফিসের এমন দাবির সত্যতাও মিলেছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে।
দেখা গেছে, আমনের ফসল ঘরে তোলার পরপরই জমি পতিত না রেখে একই জমিতে রবি মৌসুমের চাষাবাদে ঝুঁকেছেন কৃষকরা। গম, সরিষা, ভুট্টা, আলু সহ নানান ফসল চাষাবাদের ব্যস্ততা এখন মাঠে প্রান্তরে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা জানিয়েছেন, আগে বছরে দুবার জমিতে শুধু ধানের আবাদ করতেন এখন কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে একই জমিতে বারবার ফসল ফলান তারা। প্রণোদনার আওতায় বিনামূল্যে বীজ ও সার পেয়ে চাষাবাদে বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন প্রণোদনার সুবিধাভোগি কৃষকরা।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুসরাত জামান জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশনা এক ইঞ্চি জমিও পতিত থাকবে না এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন এবং ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের বোরো আবাদে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে কাজ করে আসছি। প্রনোদনার মাধ্যমে বোরো চাষে অনাগ্রহী ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের নতুন নতুন উচ্চফলনশীল জাতের সাথে পরিচিত করো উৎপাদন বাড়াতে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। সাম্প্রতিক অতিবৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের কিছুটা হলেও বীজ সহায়তা প্রদান করার মাধ্যমে কৃষকদের পাশে থাকতে পেরেছি।