মায়া পুত্র দিপু চৌধুরীর জানাজায় লাখো মুসল্লীর ঢল

প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৭:৫৪ | অনলাইন সংস্করণ

  মতলব (চাঁদপুর) প্রতিনিধি

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার বড় ছেলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ নেতা সাজেদুল হোসেন চৌধুরী দিপুর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার দুপুর দুইটায় জেলার মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত এই জানাজায় লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতি ছিল। 

রোববার সকাল সাড়ে দশটার সময় মতলব উত্তর-মতলব দক্ষিণের জনপ্রিয় নেতা সাজেদুল হোসেন চৌধুরী দিপু’র লাশবাহী কফিন মোহনপুরের আলী ভিলায় নেয়া হলে সেখানে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মীরা। একনজর দেখতে ছুটে আসে শিশু-কিশোর আবাল বৃদ্ধবণিতা। এসময় হুঁ-হুঁ করে অঝোর নয়নে অসংখ্য মানুষকে কাঁদতে দেখা গেছে।  এ সময় সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। প্রিয় নেতাকে শেষ বিদায় জানাতে চাঁদপুর ও আশপাশের এলাকা থেকে জড়ো হন লাখো মানুষ। লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।

জানাযার পূর্বে সর্বস্তরের জনতা শেষ শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ দিপুর মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আ’লীগ নেতৃবৃন্দসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও পুষ্প অর্পণের মাধ্যমে প্রিয় নেতাকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

জানাযাপূর্ব সমাবেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মরহুমের পিতা বাংলাদেশ আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেন, আমার আদরের ছেলে দিপুর মৃত্যুর সংবাদ বিশ্বাস হয়নি। কিভাবে সে এতো অল্প সময়ে চলে যাবে; তা ভাবিনি। তিনি বলেন, আপনাদের দিপু চৌধুরী ছিলেন ছোট মানুষ, হয়ে গেলেন জনপ্রিয় নেতা। আমি ভাবতে পারিনি এত কম সময়ে বিদায় নিবে। দিপু সকল শ্রেণির মানুষের মন জয় করে রাজনীতি করতেন। মানুষের যে কোন বিপদে আগে ছুটে যেতেন। তার মধ্যে অকল্যাণমূলক কাজ দেখিনি। তেমনিভাবে কারো কাছ থেকে শুনিওনি। তিনি মরহুম দিপু চৌধুরীর জন্য সকলের নিকট দোয়া প্রার্থনা করেন। জানাজায় ইমামতি করেন, বিশিষ্ট আলেম মাওলানা মাশউদ আহমাদ। পরে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।  

জানাযায় উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ শফিবুর রহমান, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নাছির উদ্দিন ভ‚ঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওচমান পাটেয়ারী, মরহুমের বড় ছেলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আশফাক চৌধুরী মাহি, ছোট ছেলে রাহি, উপজেলা আ’লীগের সভাপতি অ্যাড. রুহুল আমিন, সাধারণ সম্পাদক এমএ কুদ্দুস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এসি মিজান, সাংগঠনিক সম্পাদক এইচএম জাহাঙ্গীর, ছেংগারচর পৌরসভার সাবেক মেয়ার রফিকুল আলম জজ, আরিফ উল্ল্যা সরকার, আ’লীগ নেতা আলহাজ্ব গাজী মুক্তার, দেলোয়ার হোসেন দানেশ, লায়ন ফারুক আহমেদ তিতাস, মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদ মোকবারক, সকল ইউপি চেয়ারম্যানবৃন্দ প্রমুখ।

এদিকে, আগামীকাল সোমবার সকাল এগারোটায় রাজধানীতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে দিপু চৌধুরীর সবশেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করার কথা রয়েছে।

উল্লেখ্য, শনিবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে। গত রবিবার ব্র্রেইন স্ট্রোক করেন দিপু। এরপর তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত কয়েক দিন ধরে ঐ হাসপাতালের আইসিইউতে ছিলেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর।