ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক কাপাসিয়ায় প্রধান শিক্ষককে গণধোলাই
প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯:৪৩ | অনলাইন সংস্করণ
কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার ভাওয়াল চাঁদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল একই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীর সাথে অনৈতিক কর্মকান্ড করতে গিয়ে ধরা খেয়ে এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর হাতে গণ পিটুনির শিকার হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে। উত্তেজিত জনতার ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যাবার সময় তাদের হাতে গণ পিটুনি খেয়ে প্রায় চার ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর কাপাসিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিক্ষক মোস্তফা কামালকে উদ্ধার করে।
জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল ওই ছাত্রীকে সাথে নিয়ে সিএনজি দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরাঘুরি করে সন্ধার দিকে ওই ছাত্রীকে তার বাড়ি নিয়ে যায়। দীর্ঘ সময় বাড়ি থেকে তিনি বের না হলে এলাকাবাসীর মাঝে সন্দেহ দেখা দিলে রাত ৮টার দিকে এলাকাবাসী ওই ছাত্রীর বাড়িতে যায়। এলাকাবাসীর উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় উত্তেজিত এলাকাবাসী ওই শিক্ষককে আটক করে গণপিটুনি দেয়। এ সময় শিক্ষকের সাথে নগদ ২৫ হাজার ৫শ ৯০ টাকা এবং ২টি জন্মনিয়ন্ত্রক (কনডম) পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ধৃত শিক্ষককে থানার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। পথিমধ্যে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ গন্যমান্য ব্যক্তিরা মুচলেখা রেখে প্রধান শিক্ষককে ছেড়ে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য মনোয়ার হোসেন বলেন, ওই ছাত্রীকে নিয়ে বিভিন্ন সময় প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল কিশোরগঞ্জের নিকলী, কক্সবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় বেড়াতে যেতেন। গতকালও মঙ্গলবার কাপাসিয়ায় ঘুরাঘুরি করে ছাত্রীর বাড়িতে ওই ছাত্রীকে রেখে চলে গেলেও সন্ধার পর আবার ওই শিক্ষক ছাত্রীর বাড়িতে আসে। এ ব্যাপারে গ্রাম পুলিশ এমরান হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষকের পকেট থেকে ২৫ হাজার টাকা ও ২টি কনডম উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে কাপাসিয়া থানার এসআই মোঃ বাহার আলম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামালকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার সময় চাঁদপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের জিম্মায় উদ্ধারকৃত টাকা, মোবাইল ও প্রধান শিক্ষককে ফেরত দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে ওই শিক্ষক জানান, তিনি সপ্তাহে দুই দিন সন্ধ্যার পর তার বাসায় পড়াতে যান। ঘটনাটি সম্পূর্ণ সাজানো এবং এলাকাবাসী ষড়যন্ত্রমূলক তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে চাঁদপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ খাঁন জানান, অন্য কোন ছাত্রীর বাড়িতে না গিয়ে ওই শিক্ষক প্রায়ই কেন রাতের বেলা ওই ছাত্রীর বাড়িতে যায় এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে একটি সন্দেহ দানা বেধেছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সাথে আলোচনা করে একটি সুন্দর সমাধানের আশ্বাস দেন তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা মোঃ আবদুস সালাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেন নি এবং অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।