কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের ৯ টি লোহার দানবাক্স খুলে ৩ মাস ২০ দিনে মিলেছে ২৩ বস্তা টাকা।
আজ শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে সাতটায় কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদের সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ এবং ৫ জন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মসজিদের ৯টি সিন্ধুক খোলা হয়।
পরে, ২৩ টি বস্তায় ভরে এসব টাকা নেওয়া হয় মসজিদের দোতলায়। টাকা ছাড়াও বরাবরের মতো স্বর্ণ, রুপা, বিভিন্ন দেশের মুদ্রা পাওয়া গেছে এসব দান সিন্ধুকে।
মসজিদের মেঝেতে ঢেলে মাদ্রাসার ১৩৪ জন ছাত্র, ১০ জন শিক্ষক, রূপালী ব্যাংকের ৬০ জন কর্মকর্তা, ১০ জন আনসার সদস্য টাকাগুলো গণনা করছেন। দিনভর গণনা শেষে রাতে টাকার পরিমাণ জানা যাবে বলে জানিয়েছে মসজিদ কর্তৃপক্ষ।
পাগলা মসজিদের ৮টি দানবাক্স থাকলেও দানের টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার আরও একটি দানবাক্স বাড়ানো হয়েছে। এখন পাগলা মসজিদে দানবাক্সের সংখ্যা ৯টি।
৩ মাস ২০ দিন আগে চলতি বছরের ১৯ আগস্ট খোলা হয়েছিল এ মসজিদের ৮টি দান সিন্ধুক। তখন রেকর্ড ২৩ বস্তা টাকা পাওয়া গিয়েছিল। দিনভর গণনা শেষে রেকর্ড ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫ টাকা পাওয়া গিয়েছিলো। এ ছাড়াও পাওয়া গিয়েছিলো বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার।
জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, মসজিদের দান থেকে পাওয়া এসব অর্থসংশ্লিষ্ট মসজিদসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় হয়। মসজিটির জায়গায় আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রুতই এর কাজ শুরু হবে। যার নামকরণ হবে পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্স। এটি নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। সেখানে ৩০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন।
জনশ্রুতি রয়েছে, প্রায় আড়াইশ বছর আগে পাগলবেশী এক আধ্যাত্মিক পুরুষ খরস্রোতা নরসুন্দা নদীর মধ্যস্থলে মাদুর পেতে ভেসে এসে বর্তমান মসজিদ এলাকা জেলা শহরের হারুয়ায় থামেন। তাকে ঘিরে সেখানে অনেক ভক্তকুল সমবেত হন। ওই পাগলের মৃত্যুর পর সমাধির পাশে এই মসজিদটি গড়ে ওঠে। পরে কালক্রমে এটি পরিচিতি পায় পাগলা মসজিদ নামে।