ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চাঁদপুর জেলায় সাড়ে ৭ হাজার হেক্টরে আলু উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পৌনে ২ লাখ মে.টন

চাঁদপুর জেলায় সাড়ে ৭ হাজার হেক্টরে আলু উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পৌনে ২ লাখ মে.টন

চাঁদপুরে চলতি রবি মৌসুমে সাড়ে ৭ হাজার হেক্টরে আলু উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার মে.টন। আলু উৎপাদনে চাঁদপুর দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। মুন্সিগঞ্জের পরেই চাঁদপুর জেলা রয়েছে,উৎপাদনের তুলনামূলক হিসেবের তালিকায়। এ বছর ৭ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ জেলা একটি নদীবিধৌত কৃষি ভিক্তিক অঞ্চল বিধায় কৃষকরা সময়মত চাষাবাদ, বীজবপন ও সঠিক পরিচর্যায় পারদর্শী বলে জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।

উপজেলাওয়ারী দেখা যায়, চাঁদপুর সদরে এবার আলু চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৬শ হেক্টর ও উৎপাদন ৩৮ হাজার ৪শ মে.টন। মতলব উত্তরে ৬শ ৬৫ হেক্টর ও উৎপাদন ১৮ হাজার ৩শ ৬০ মে.টন। মতলব দক্ষিণে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ১শ ৫০ হেক্টর ও উৎপাদন ৫১ হাজার ৬শ মে.টন, হাজীগঞ্জে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৫শ ৮৫ হেক্টর ও উৎপাদন ১৪ হাজার ১শ মে.টন, শাহরাস্তিতে চাষাবাদ লক্ষ্যমাত্রা ৭০ হেক্টর ও উৎপাদন ১ হাজার ৬শ ৮০ মে.টন এবং কচুয়ায় চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ৫০ হেক্টর ও উৎপাদন ৪৯ হাজার ২শ মে.টন,ফরিদগঞ্জে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১শ ২০ হেক্টর ও উৎপাদন ২ হাজার ৮শ ৮০ মে.টন এবং হাইমচরে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১শ ৬০ হেক্টর ও উৎপাদন ৩ হাজার ৮শ ৪০ মে.টন। এ সব আলু দুই থেকে আড়াই মাস পর ক্ষেত থেকে উঠানো হবে।

এদিকে জেলা ব্যাংকগুলো যথারীতি ফসল ঋণ প্রদান করে কৃষিপণ্য উৎপাদনে ব্যাপক সহায়তা দিচ্ছে।

করোনা মহামারীর সময় থেকে ত্রাণ হিসেবে সর্বমহলে চালের পাশাপাশি আলু রাখায় কৃষকগণ আলুর ভালো দাম পাচ্ছে। বর্তমানে প্রতি কেজি আলুর খুচরা মূল্য ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। বর্তমানে নতুন আলু উঠেছে বাজারে। যার কেজি খুচরা মূল্য ১০০ টাকা। নতুন আলু মুন্সিগঞ্জ, বগুড়া, রংপুরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে চাঁদপুরে আসছে।

জেলার ৮ উপজেলায় আলুর চাষাবাদ ও উৎপাদনে বিভিন্ন জাতের আলু চাষাবাদ করে থাকে এ অঞ্চলের কৃষকরা। কম-বেশি সব উপজেলায়ই আলুর ফলন ও চাষাবাদ হয়ে থাকে। বিগত ক’বছর ধরেই চাঁদপুরে ব্যাপক আলু উৎপাদন হচ্ছে। বিশেষ করে আলু বেশী উৎপাদনকারী স্থানগুলো হচ্ছে, সফরমালী, রালদিয়া, মুন্সীরহাট, কুমারডুগি,শাহাতলী, শাহমাহমুদপুর ইউনিয়ন,মহামায়া,বালিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে। হাজীগঞ্জের বলাখাল ও মতলব দক্ষিণের নারায়নপুর,কাশিমপুর,খাদেরগাও এলাকায়। কৃষকরা জানান, বর্তমান তারা লাঙ্গলের পরিবর্তে ট্রাক্টর,হোচার পরিবর্তে বিদ্যুৎ চালিত স্যালো সেচ ব্যবস্থায়,গোবরের সারের পরিবর্তে বিভিন্ন প্রকার উন্নত রাসায়নিক সার ব্যবহার, উন্নত বীজ,পরিমিত কীটনাশকের ব্যবহার,নতুন নতুন জাতের উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির ব্যবহার এবং আবহাওয়ার অনুকুল পরিবেশে থাকলে আলুর বাম্পার ফলন হওয়ার সম্বাবনা রয়েছে।

চাঁদপুরে ১২ টি হিমাগারে ৭০ হাজার মে. টন আলু সংরক্ষণ করার ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। বাকি আলু হিমাগারের বাহিরে রাখা হয়ে থাকে। এর মধ্যে কিছু পরিমাণ আলূ উৎপাদন মৌসুম থেকে বিক্রি হয়ে আসছে এবং বাকি আলু কৃষকগণ কৃষি বিভাগের পরামর্শে কৃত্রিমভাবে মাচায় সংরক্ষণ করা হয়েছে বলে কৃষি অফিস জানান।

চাঁদপুর কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মোঃ মোবারক হোসেন জানান, চাঁদপুরে এবারও ব্যাপক আলুর চাষ হয়েছে। আশা করি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী হবে । বর্তমানে বাজারে নতুন আলু আসছে রংপুর,মুন্সীগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে।

উল্লেখ্য, আলু প্রধান অর্থকরি সবজি। চাঁদপুর আলু উৎপাদনে দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী জেলা। মুন্সীগঞ্জের পরেই চাঁদপুরের স্থান। ফলে চাঁদপুরে বেসরকারিভাবে ১২টি কোল্ডস্টোরেজ রয়েছে। এগুলোর ধারণক্ষমতা মাত্র ৭০ হাজার মে.টন। মতলবের করিম কোল্ডস্টোরেজের সংরক্ষণাগারটির ধারণ বাড়ালেও বাকি আলু কৃষকদের নিজ দায়িত্বে মাচায় বা কৃত্রিম উপায়ে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।

চাঁদপুর,উৎপাদন,লক্ষ্যমাত্রা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত