কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলেছে ৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা

প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৮ | অনলাইন সংস্করণ

  শাহজাহান সাজু, কিশোরগঞ্জ

কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের দান বাক্সে এবার তিন মাস ২০ দিনে পাওয়া গেছে ৬ কোটি ৩২ লক্ষ ৫১ হাজার ৪ শত ২৩ টাকা। এছাড়াও রয়েছে বিপুল পরিমান স্বর্ণালঙ্কার ও বিদেশি মুদ্রা।

সকাল থেকে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত চলে গণনার কাজ।

আগে এসব অর্থ জেলার অন্যান্য মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার উন্নয়নসহ গরীব মেধাবী ছাত্রদের জন্য ব্যয় করা হলেও, এবার পাগলা মসজিদকে ১১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আন্তর্জাতিক মানের কমপ্লেক্স বানানোর কাজে এসব টাকা ব্যয় করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

মসজিদের ৯ টি লোহার দানসিন্ধুক যেন টাকার খনি। খুলতেই দেখা যায় শুধু টাকা আর টাকা। এসব টাকা বস্তায় ভরে নেয়া হয় ঐ মসজিদেরই দোতলায়। পরে, মসজিদের মেঝেতে বসে টাকা গুনেন প্রায় দেড়শো মাদ্রাসা ছাত্র-শিক্ষকসহ ষাট জন ব্যাংক কর্মকর্তা। তিন মাস পরপরই এমন দৃশ্যের দেখা মিলে কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদে।

এবার তিন মাস ২০ দিন পর শনিবার (৯ ডিসেম্বর, ২০২৩) সকালে মসজিদের ৯ টি দানবাক্স খুলে বের করা হয় ২৩ বস্তা টাকা। এছাড়াও পাওয়া যায় বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা, রূপা ও স্বর্ণালংকার।

এর আগে, চলতি বছরের আগস্ট মাসের ১৯ তারিখে এসব দানবাক্স খুলে তিন মাস তেরো দিনে মিলেছিলো ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫ টাকাসহ বৈদেশিক মুদ্রা, স্বর্ণ ও রূপার অলংকার।

এ মসজিদে সঠিক নিয়তে মানত করলে রোগ-বালাই দূর হওয়া সহ বিভিন্ন মনোবাসনা পূর্ণ হয়। এমন বিশ্বাস থেকেই দেশের
বিভিন্ন এলাকা থেকে সকল ধর্মের মানুষ প্রতিনিয়ত মানতের নগদ অর্থ, স্বর্ণালঙ্কার, বৈদেশিক মুদ্রা, গরু, ছাগল, হাস, মুরগী সহ
বিভিন্ন সামগ্রী দান করে থাকেন।

পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শওকত আলী বলেন, দানবাক্সের নগদ টাকা ছাড়াও প্রতিদিন প্রাপ্ত গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন সামগ্রী প্রতিদিনই বিক্রি করে টাকা রূপালী ব্যাংকে রাখা হয়।

ইতিমধ্যে দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত এ পাগলা মসজিদের আয় দিয়ে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন কমপ্লেক্স নির্মাণ করার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান মসজিদের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক আবুল কালাম আজাদ।

জনশ্রুতি রয়েছে, প্রায় আড়াইশ বছর আগে পাগলবেশী এক আধ্যাত্মিক পুরুষ খরস্রোতা নরসুন্দা নদীর মধ্যস্থলে মাদুর পেতে ভেসে এসে বর্তমান মসজিদ এলাকা জেলা শহরের হারুয়ায় থামেন। তাকে ঘিরে সেখানে অনেক ভক্তকুল সমবেত হন। ওই পাগলের মৃত্যুর পর সমাধির পাশে এই মসজিদটি গড়ে ওঠে। পরে কালক্রমে এটি পরিচিতি পায় পাগলা মসজিদ নামে।