কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে বোরো ধানের জমি প্রস্তুতে ব্যস্ত কৃষক

প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩:০৫ | অনলাইন সংস্করণ

  কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

বোরো ধানের বীজতলা পরিচর্যায় ব্যাস্ত সময় পার করছেন কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের কৃষকেরা। চলতি বছর সঠিক সময়ে হাওরের পানি নেমে যাওয়ায়, পাশাপাশি চলছে ধানের চারা রোপনের জন্য জমি তৈরির কাজও। আবহাওয়া বৈরী না হলে জেলায় চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি বোরো ধান উৎপাদন হবে, এমনটাই আশা করছে কৃষি বিভাগ। তবে, পোকামাকড়ের আক্রমণ এবং আগাম বন্যা নিয়ে শঙ্কিত থাকার পাশাপাশি সার ডিজেলের বাড়তি দাম নিয়ে কৃষকদের রয়েছে অভিযোগ।

হাওরাঞ্চলের কৃষকরা এখন কুয়াশাচ্ছন্ন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন বোরো ধানের বীজতলার পরিচর্যায়। নিয়ম করে সনাতন পদ্ধতিতে বীজতলায় দিচ্ছেন পানি, দিয়ে যাচ্ছেন সার। এতেকরে বীজতলা ইতিমধ্যেই সবুজে সবুজে একাকার। জেলার এক হাজার চারশত সত্তুর বর্গকিলোমিটার হাওরে বছরের এ সময়ে হয় এ অঞ্চলের একমাত্র ফসল বোরো ধানের আবাদ।

নিকলী হাওরের কৃষক জামাল উদ্দিন জানান, ৩ কানি জমিতে বোরো ধানের আবাদ করবো। বীজতলায় ধান ফেলেছি, চারা হয়েছে, সার এবং পানি দিচ্ছি নিয়মিত। আবহাওয়া যেমন আছে তেমন থাকলে ভালোভাবে চারা জমিতে রোপন করতে পারবো।

ইটনা হাওরের কৃষক কাদির মিয়া বলেন, ধানের চারা ভালোই হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই জমিতে নিয়ে রোপন করবো। সারের দাম বেশি, ডিজেলের দাম বেশি, সরকার যদি আমাদের জন্য দাম কমিয়ে দিতো, আমাদের জন্য খুবই ভালো হতো। আমরা হাওরের মানুষ। আমাদের একটিই ফসল, আবহাওয়া যদি এমন থাকে তাহলে ভালভাবে রোপন করতে পারবো, ফসলও ভালো হবে। আবহাওয়া খারাপ হলে আমাদের কপাল মন্দ। তাছাড়া এই বছর পানি তাড়াতাড়ি যাওয়াতে সু্বিধা হয়েছে। বীজতলা সময়মতো করতে পেরেছি। জমিও সময়মতো প্রস্তুত করতে পারছি।

হাওরাঞ্চলের চাষিদের বোরো ধানের বীজতলা তৈরি থেকে শুরু করে আবাদের সকল পরামর্শসহ পাশে থাকার কথা জানালেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবদুস সাত্তার।

তিনি আরও বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় ১ লক্ষ ৬৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু হাওরেই আবাদ হবে ১ লক্ষ ৪ হাজার হেক্টর জমিতে। কৃষক ভাইয়েরা বীজতলা করতেছে। পাশাপাশি জমিও প্রস্তুত করতেছে। আবহাওয়া এবছর অনুকূলে। আমারা আশা করছি হাওর এলাকার কৃষকেরা বোরো ধান চাষ করে এবার বাম্পার ফলন পাবে। 

চলতি মৌসুমে জেলায় ৭ হাজার ৮ শত ৯০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের বীজতলা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।