ঘন কুয়াশায় ৪টি লঞ্চের পৃথক সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত ১

প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬:৪৪ | অনলাইন সংস্করণ

  চাঁদপুর প্রতিনিধি

চাঁদপুর নৌ-সীমানায় ঘন কুয়াশার কবলে পড়ে ৪টি যাত্রীবাহি লঞ্চের মধ্যে পৃথক ভয়াবহ দূর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে ঢাকাগামী দুটি লঞ্চের মধ্যে হঠৎ গভীর রাতে সংঘর্ষের ঘটনায় মোহাম্মদ সোহেল হোসেন ফরাজী (৩৫) নামক একজন যুবক যাত্রী নিহত হয়েছে। নিহত যুবক ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার আমিনাবাদ ইউনিয়নের ওসমান আলি ফরাজি বাড়ির বাসিন্দা সেলিম ফরাজির ছেলে।

এ ২টি লঞ্চের সংঘর্ষের ঘটনায় কমপক্ষে ২৫ জন যাত্রী কম-বেশী মারাত্বক ভাবে আহত হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (১১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১টায় চাঁদপুর নৌ-এলাকার হাইমচর উপজেলার চর ভৈরবী এলাকায়। মেঘনা নদীতে লঞ্চ এমভি সুরভী-৮ লঞ্চের সঙ্গে ভোলা টিপু- ১৪ লঞ্চের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ১জন নিহত হয় এবং কমপক্ষে ১০জন যাত্রী আহত হয়েছে।

এ ছাড়া মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর এলাকায় ঘন কুয়াশার কবলে পড়ে চাঁদপুরগামী এমভি রফ রফ-৭ ও পটুয়াখালি থেকে ঢাকাগামী এমভি এআর খান-১ লঞ্চের সাথে স্বজোরে ধাক্কা লেগে রফ রফ লঞ্চের পার্শ্ব দিকে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এই ঘটনায় লঞ্চের কমপক্ষে ১৫জন যাত্রী মারাত্বক ভাবে আহত হয়েছে।  

এ ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (১১ ডিসেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে মেঘনা নদীর মোহনপুর নামক স্থানে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) চাঁদপুরের বন্দর কর্মকর্তা মোঃ শাহাদাত হোসেন ও চাঁদপুর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিদর্শক শাহ্ আলম। তিনি বলেন, রফ রফ লঞ্চটি ধাক্কা লেগে মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

চাঁদপুর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপপরিচালক মো. বশির আলী খান বলেন,  সুরভী-৮ ও টিপু-১৪ নামক লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন যাত্রী নিহত হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। 

এম.ভি সুরভী-৮ লঞ্চের স্টাফ রাসেল বলেন, কাল রাতে টিপু-১৪ লঞ্চটি আমাদের লঞ্চকে ধাক্কা দেয়। এতে লঞ্চটির কেবিনের পেছনের অংশ ভেঙে যায়। এ ঘটনায় আমাদের লঞ্চে থাকা সোহেল নামে এক ব্যক্তি আহত হন। পরে তিনি মারা যান। 

এ বিষয়ে হাইমচরের নীল কমল নৌ পুলিশ ফাড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন খান বলেন, ৯৯৯ নাম্বারে এম.ভি সুরভী-৮ লঞ্চ থেকে আমাদের ফোন করা হয়। একটি অজ্ঞাতনামা লঞ্চ তাদের লঞ্চটি ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়া জন্য তাদের ফোন করলে তারা জানায় এম.ভি সুরভী-৮ লঞ্চটি ঘটনাস্থল ত্যাগ করে ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে যায়। তবে একজনের মৃত্যুর বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। 

এদিকে আজ দুপুরে ঘন কুয়াশার কারণে লঞ্চ দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় উপপরিচালক মো. বশির আলী খান চাঁদপুর লঞ্চঘাটে অবস্থানরত লঞ্চ চালক ও মাষ্টারদের একত্রিত করে সচেতনতামূলক দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি তাদেরকে ঘন কুয়াশার মধ্যে লঞ্চ থামিয়ে রাখা এবং কোন ভাবেই যাতে চলাচল না করে এ বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেন।

ভোলা বন্দর কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, কাল সন্ধ্যা ৬টা সদর ঘাট থেকে ছেড়ে আসে টিপু-১৪ লঞ্চটি। রাত সাড়ে ১০টায় ভোলা ছাড়ে ঢাকাগামী লঞ্চ এমভি সুরভী-৮। চাঁদপুরের হাইমচরে টিপু-১৪ লঞ্চটি সুরভী-৮ লঞ্চটিকে ধাক্কায় দেয়। এ ঘটনায় এক যাত্রী আহত হন। পরে তার মৃত্যু হয়েছে। সুরভী-৮ লঞ্চটি এবং নিহত সোহেলে মরদেহ এখন সদর ঘাটে আছে। 

চাঁদপুর বন্দর কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, ঘন কুয়াশার কারনে চাঁদপুর হয়ে ঢাকা-পটুয়াখালী নৌ পথে চলাচলকারী এম ভি এ আর খান-১ এবং ঢাকা-চাঁদপুর নৌ পথে চলাচলকারী এম ভি রফরফ-৭ লঞ্চের মধ্যে মধ্য রাত সাড়ে ৩টায় মোহনপুরে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে রফরফ-৭ লঞ্চের দোতলার টেক্সিন ভেঙ্গে যায়।