ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় স্থবির রংপুরের জনজীবন

প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯:১৬ | অনলাইন সংস্করণ

  রংপুর ব্যুরো

ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে মহানগরীসহ পুরো রংপুর অঞ্চল। তিস্তা-ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট, দুধকুমর, করতোয়া-যমুনেশ্বরী, যুমনা, দেওনাই সহ বেশ কয়েকটিনদ-নদী বেষ্টিত রংপুর অঞ্চলের প্রকৃতি ঘন কুয়াশার চাদরে আচ্ছাদিত। ভোরে সূর্যোদয় হলেও কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশে নিখোঁজ রয়েছে আলোর ঝলকানি। এ কারণে গত তিনদিন ধরে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশার কারণে সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। দুই এক বার সূর্য উঁকি দিলেও ঢাকা পড়েছে মেঘের আড়ালে।

রংপুর মহানগরীর দর্শনা, তামপাট, মেডিকেল মোড়, শাপলা চত্বর, মাহিগঞ্জ, জেলার পীরগাছা, হারাগাছ, নব্দিগঞ্জ ও সদরের পালিচড়া, শ্যামপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা দিয়েছে। হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় সড়কে মানুষের উপস্থিতি কম। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের উপস্থিতি বাড়ছে হাট-বাড়ারগুলোতে।

এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে রংপুর মহানগরীসহ এ অঞ্চলের কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা ও নীলফামারী জেলার সড়ক-মহাসড়কে ছোট-বড় যানবাহনগুলো চলছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। দুর্ঘটনা এড়াতে রেলপথেও গতি কমেছে ট্রেনের। ঘন কুয়াশার কারণে ট্রেনের শিডিউল নড়বড়ের শঙ্কা রয়েছে। এছাড়াও ঘন কুয়াশার সঙ্গে হিমেল হাওয়ায় পথঘাটে থাকা ছিন্নমূল অসহায় মানুষের কষ্ট বাড়িয়েছে।শীতের তীব্রতা আরও বাড়ার আশঙ্কায় শঙ্কিত রংপুর মহানগরীসহ এ অঞ্চলের শীতার্ত অসহায় ও দরিদ্র মানুষজন। বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষগুলোর পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র না থাকায় দুর্ভোগও বেড়েছে কয়েকগুণ। নদী তীরবর্তী ও ছিন্নমূল মানুষরা রয়েছেন চরম ভোগান্তিতে।

এছাড়াও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে বহু মানুষ প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসছেন। এরমধ্যে শিশু ও বৃদ্ধা বয়সের মানুষ বেশি। পাশাপাশি আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণে চেষ্টা করা অনেকেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি হচ্ছেন। শীতে অসুস্থ নারী, পুরুষ ও শিশুদের জরুরি চিকিৎসার জন্য প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যায়ে মেডিকেল টিমকে গুরুত্বসহ সেবা দিতে নির্দেশ দেওয়া রয়েছে।

কৃষকরা জানান, ঘন কুয়াশা পড়লে কৃষিতে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। শীতে বোরো বীজতলা ও রবি ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বিশেষ করে কোল্ড ইনজুরি ও পচনসহ মড়ক বেড়ে যায়।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত রংপুরের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রংপুরের বিভাগের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়াতে ১৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১৩ দশমিক ২, ডিমলায় ১৩ দশমিক ৬, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ১৪ দশমিক ৮ এবং গাইবান্ধায় ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিনি বলেন, কুয়াশা কেটে গেলে শীত বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রংপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ওয়াজেদ আলী জানান, শীতকালীন রোগে আক্রান্ত শিশু, নারী ও বয়স্কদের সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও মনিটরিং টিম রয়েছে।

রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, শীতের শুরুতেই রংপুরে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়। ইতোমধ্যে ৪৫ হাজার কম্বল উপজেলা পর্যায়ে বিতরণের জন্য দেওয়া হয়েছে।