ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দুই ইউপি চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপ 

সোনাগাজীতে পেঁয়াজ ১২৫ ও গরুর মাংস ৬০০ টাকা

সোনাগাজীতে পেঁয়াজ ১২৫ ও গরুর মাংস ৬০০ টাকা

ফেনীর সোনাগাজীতে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। শুক্রবার থেকে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ১২০টাকায় বিক্রি হলেও সন্ধ্যায় তা ৫০-৬০ টাকা বেড়ে ১৮০ টাকায় গিয়ে দাঁড়ায়। রোববার থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে আরেক দফা বেড়ে সে পেঁয়াজ ২০০-২৫০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি মৌসুমি নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য ও শাক-সবজির বাজারও বেসামাল হয়ে ওঠেছে। ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের খবরে অস্থির হয়ে উঠল পেঁয়াজের বাজার।

এমন খবর পেয়ে গত রোববার সকালে উপজেলার মঙ্গলকান্দি ও বগদানা ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন ও আলা উদ্দিন ইউপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশদের সঙ্গে নিয়ে বক্তারমুন্সি, কাজীহাট ও তাকিয়া বাজারে তদারকিতে নামেন। এরপর প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১২৫টাকা দামে বিক্রি শুরু হয়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ফেনীর পাইকারী বাজারে বিক্রেতাদের কাছ থেকে তাঁরা বাধ্য হয়ে বেশি দামে পেঁয়াজ কিনে আনছেন। পরিবহন ও শ্রমিকের মজুরিসহ আকার ভেদে কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম প্রায় ১৮০-২১০ টাকারও বেশি পড়ে গেছে।

মঙ্গলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন বলেন, তাঁর ইউনিয়নের বক্তারমুন্সি বাজারের ব্যবসায়ীরা পূর্বের কেনা পেঁয়াজ দোকানে মজুদ রেখে বেশি দামে বিক্রি করছে। এমন খবর পেয়ে তিনি প্রতিদিন সকালে বাজার তদারকিতে নামেন। এসময় বক্তারমুন্সি বাজারের ব্যবসায়ীদেরকে পেঁয়াজ কেনার রশিদ দেখাতে বলেন। পরে ব্যবসায়ীরা স্বীকার করেন। তাঁদের দোকানের পেঁয়াজগুলো চার-পাঁচদিন আগের কেনা। কয়েকজন ব্যবসায়ীর রশিদে দেখা যায় পাইকারি বাজার থেকে প্রতিকেজি পেঁয়াজ তাঁদের ৯৯-১১০টাকা পর্যন্ত কেনা পড়েছে।

ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন বলেন, বাজার পর্যালোচনা শেষে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে নিত্যপন্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার লক্ষ্যে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১২৫ টাকা দরে বিক্রির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। নতুন পেঁয়াজ আনার পর আবারও দাম পর্যালোচনা করা হবে।

ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন আরও বলেন, বাজার তদারকির খবর পেয়ে ছুট্ট মিয়া নামে একজন ব্যবসায়ী দোকান খোলা রেখে পালিয়ে যান। পরে ওই দোকানে তিনি নিজে বসে প্রায় দেড় মণ পেঁয়াজ ১২৫ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। তবে এক কেজির বেশি কারও কাছে বিক্রি করা হচ্ছে না। এছাড়া মঙ্গলবার থেকে বক্তারমুন্সি বাজারে গরুর মাংস ৬০০টাকা, বয়লার মুরগি ১৭০ টাকা দরে বিক্রিসহ সব ধরনের খাদ্য পন্য সুলভ মূল্যে বিক্রির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে প্রতিদিন সকাল-দুপুর পর্যন্ত বাজার তদারকি করা হবে। একইভাবে উপজেলার বগাদানা ইউপি চেয়ারম্যান আলা উদ্দিন বলেন, তাঁর ইউনিয়নের কাজীরহাট ও তাকিয়া বাজারে তদারকির মাধ্যমে প্রাতি কেজি পেঁয়াজ ১২৫টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। সকল নিত্যপন্য স্বল্প লাভে বিক্রি করতে ব্যবসায়ীদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তবে দুটি ইউনিয়ন ব্যতীত পৌরশহরসহ অন্যান্য এলাকাতে ভিন্ন ভিন্ন দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতাদের অভিযোগ, পেঁয়াজের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারগুলোতে প্রশাসনের কোনো ধরনের তদারকি দেখা যায়নি। এতে করে ব্যবসায়ীরা তাঁদের খেয়াল-খুশিমত পেঁয়াজের দাম নিচ্ছেন।

নুর আলম নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় তিনি দোকানে আপতত পেঁয়াজ বিক্রি করা বন্ধ রেখেছেন।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান বলেন, পেঁয়াজের দাম নিম্ম আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজারগুলোতে তদারকি করা হচ্ছে।

ফেনী
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত