সিরাজগঞ্জে ঝুট কাপড়ে শীত নিবারণে কম্বল তৈরী

উক্তরাঞ্চলে শীতের প্রভাব বাড়ছে কম্বল তৈরিতে ব্যস্ত এখন পল্লীর কারিগররা

প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ২০:৫১ | অনলাইন সংস্করণ

  স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ঘন কুয়াশায় ঝেঁকে বসেছে শীত। এ শীত নিবারণে এবারো সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার শিমুল দাইড় বাজার ও গ্রামাঞ্চলে র্গামেন্টের ঝুট কাপড়ে কম্বল তৈরির হিড়িক পড়েছে। এ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে কম্বল তৈরীর পল্লী কারিগররা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছরের ন্যায় এবারো এই শীতের আগমনে এ কম্বল তৈরির কাজ শুরু করেছে তারা।

এতে ওই এলাকার প্রায় ৩২টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এই কম্বল তৈরি কাজে জড়িত রয়েছে এবং তাদের ভাগ্য ইতিমধ্যেই পরিকবর্তন হয়েছে। ১৯৯৪ সালের শেষ দিকে যমুনা নদীর তীরে কাজিপুর উপজেলার ওই এলাকায় এ কম্বল তৈরী শুরু হয় এবং লাভজনক এ কম্বল তৈরীর কারখানা বাড়তে থাকে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, শিমুল দাইড় বাজারেই বড় ছোট মিলে প্রায় দেড়শতাধিক ব্যবসায়ী রয়েছেন। শুরুতে এই এলাকার কম্বল বলতে  গার্মেন্টের ঝুঁট কাপড় দিয়ে এই কম্বল তৈরি করছে। তবে বিশেষ করে শিমুল দাইড় বাজার, কুনকুনিয়া, নয়াপাড়া, মাইজবাড়ি মেঘাই, চালিতাডাঙ্গা সালাভরাসহ বিভিন্ন গ্রামঞ্চলে ঝুঁট কাপড় মেশিন ও ফ্লাডলক মেশিন দিয়ে সেলাই করে এই কম্বল তৈরি করছে। এসব ঝুট কাপড়ে তৈরী কম্বল  ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, যশোর, চট্টগ্রাম, সাতক্ষীরা, দিনাজপুর, রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছে ব্যবসায়ীরা। এছাড়া এ ঝুট কাপড়ের  কম্বল গ্রামঞ্চলে ঘুরেও বিক্রি করছে অসহায় পরিবারের লোকজন।

শীত বেড়ে যাওয়ার সাথে সাখে স্বল্পমূল্য এ কম্বলের চাহিদাও বাড়ছে। গরিবের কম্বল এখন ১২০ টাকা থেকে ১৪০ টাকায়, বাংলা ১৫০ থেকে ৪’শ টাকায় এবং বিস্বাস, চায়না, এ্যামব্রাশ, ৩ ডি,৫ ডি ৬ডি নামের কম্বল এখন ৪’শ/সাড়ে ৪’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং ভিআইপি নামে কম্বল ৭’শ টাকা থেকে ১ হাজার টাকায়। প্রতি পিস কম্বল তৈরিতে মজুরী ৫০ থেকে ৭৫ টাকা করে দেয়া হয়। নারী শ্রমিকদের কম্বল তৈরিতে মজুরী কম হলেও এ কাজের চাহিদা তাদের বেশি। শীত মৌসুমে পরিবারের ছেলে মেয়েরাও এই কম্বল সেলাইয়ে কাজে  অংশগ্রহণ করে এবং এ কম্বল তৈরীতে পরিবার ভিত্তিতেও ভালো মজুরি পেয়ে থাকে। শিমুলদাইড় বাজার সমিতির কর্মকর্তারা জানান, কয়েক যুগ ধরে ঝুঁটকাপড় দিয়ে কম্বল তৈরি শুরু করে স্থানীয় হাট-বাজারে বেচাকেনা শুরু হয়। এ কম্বল এখন ৫০ থেকে ৫২ আইটেমে তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে শীত মৌসূমে এ কম্বল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে এবং যমুনা তীরবতী সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলা এখন ঝুট কাপড়ে তৈরী কম্বল খ্যাত হিসেবে পরিচিতও হয়েছে।

কাজিপুর উপজেলা প্রশাসনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা বলছেন, কাজিপুরের ঝুট কাপড়ের তৈরী কম্বল এখন প্রায় সারাদেশে যাচ্ছে। দাম কম থাকায় বিশেষ করে শীত মৌসূমে এ কম্বলের কদরও বাড়ছে। এতে অনেক বেকার নারী পুরুষ ইতিমধ্যেই সাবলম্বী হয়েছে। এ কম্বল তৈরীর কারখানা মালিকদের ঋণ প্রদানের সহযোগীতার প্রয়োজন বলে তারা উল্লেখ করেন।