"প্রাণী নির্যাতন বন্ধ করি, তাদের প্রতি যত্নশীল হই" এ স্লোগানে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চাঁদপুর শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছে ফ্লু রোগের বিরুদ্ধে বিড়ালের ভ্যাকসিন ক্যাম্প। আর এই ভ্যাকসিন ক্যাম্পে দেখা মিললো দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির বিড়ালের। নিজের গৃহ পালিত পশুকে ভ্যাকসিন দিতে ছোট বড় বিভিন্ন সাইজের দেশী বিদেশী বিড়াল নিয়ে হাজির হন লোকজন।
গত ১৫ ডিসেম্বর চাঁদপুর শহরের কালী বাড়ি মন্দিরের অপরদিকে মদিনা মার্কেটের গলির একটি ভবনের নিচতলায় অস্থায়ী কার্যালয়ে পেট লাভারস অফ চাঁদপুর ফেসবুক গ্রুপের উদ্যোগে এই ভ্যাকসিন ক্যাম্প শুরু হয়। এতে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত বিড়ালকে ফ্লু রোগের ভ্যাকসিন দেয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর দুদিনব্যাপী চাঁদপুরের বিড়াল প্রেমিদের জন্য Mass Vaccination প্রোগ্রাম আয়োজন করে পেট লাভারস অফ চাঁদপুর ফেসবুক গ্রুপ (Pet Lovers of Chandpur Facebook group) । যেখানে নামমাত্র মূল্যে বিড়ালের ফ্লু ও রেবিস টিকা দেওয়া হয়। এছাড়া বিড়ালের ওজন নিয়ে তাদের হেলথ চেক আপ, কান পরীক্ষা, দাঁত কালার, অন্যান্য চেক-আপ, ডিওয়ারমিং শুধুমাত্র ঔষধের মূল্য বিনিময়ে এসব সেবা প্রদান করেন ফেসবুক গ্রুপ প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া বিড়ালের কিছু সার্জারি, স্প্রেয়িং বা বন্ধাকরন, খোজাকরন বা নিউটারিং করা হয়ে থাকে। চিকিৎসাসেবা প্রদানকারীরা জানিয়েছেন, ফ্লু ভ্যাকসিনটা প্রথম ডোজ দেওয়ার পর এক মাস পর বুস্টার ডোজ দিতে হয়। পরবরর্তীতে এক বছর পর পর তা নিতে হয়। অপরদিকে জলাতঙ্ক রোগেরও টিকা এক বছর পর পর দিলে ভালো হয় বলে জানান তারা। যারা বিড়ালকে এমন ভ্যাকসিন দিতে আগ্রহী তারা তাদের ফেসবুক গ্রুপ Pet Lovers of Chandpur Face book (পেট লাভারস চাঁদপুর) নামের পেইজে গ্রুপে এড হয়েও যোগাযোগ করে যে কোন সময় বিড়ালের রোগের বিষয়ে চিকিৎসাসেবা বা পরামর্শ নিতে পারবে। অথবা কেউ তাদের ব্যবহৃত ০১৬৪৫১২০৪১৬ এই মোবাইল নাম্বারেও যোগাযোগ করে চিকিৎসাসেবা নিতে পারবেন। তারা এক দেড় মাস পর পর চাঁদপুরে এসে বিড়ালকে এমন চিকিৎসাসেবা এবং ভ্যাকসিন প্রদান করে থাকেন। এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি প্রাপ্ত (ডিভিএম) ডা. মো. হাসিবুর রহমান সাফা জানান, মূলত শীত মৌসুমে বিড়ালের মহামারী ফ্লু থেকে বাঁচাতে ফ্লু ভ্যাকসিনেশন করা হয়ে থাকে। ফ্লু একটি ভাইরাস জনিত রোগ। এই রোগের বিরুদ্ধে টিকা দিয়ে রাখতে হয়। এমন রোগের লক্ষন বমি করা, মুখ দিয়ে খাবার দিলে বা ওষুধ দিলে বমির মাধ্যমে তা বের করে দেয়া হয়। বিড়ালের জ্বর আসে, লালা পড়ে, পটি নরম ও দুর্বল হয়। তখন এমন আক্রান্ত বিড়ালকে বাঁচানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তিনি আরো জানান, এসব রোগের কারণে মানুষকে মেডিকেশন খরচ ও বেশ বেগ পেতে হয়। এজন্য ভ্যাক্সিনেশন অতীব জরুরি। আমরা প্রোগ্রামে ফ্লু এর পিওর ভেক্সিন দেই। যেটা বিড়ালের ৪টি রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করে। এছাড়াও আমরা বিড়ালের জলাতঙ্ক রোগের বিরুদ্ধে টিকা প্রদান করি।