জনগণ যাদের সঙ্গে নেই, তাদের অসহযোগ আন্দোলন করার কোনো মানেই হয় না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের কেঁতুয়া গ্রামের পাটওয়ারী বাড়িতে উঠোন বৈঠক শেষে বিএনপির অসহযোগ আন্দোলন সম্পর্কে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির চলমান ‘অসহযোগ আন্দোলন’ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিএনপি অসহযোগ আন্দোলনের মানে বোঝে না। তাই জনগণকে তাদের সঙ্গে দেখা যায় না। তারা অসহযোগের নামে ট্রেনে-বাসে নারী-শিশু পুড়িয়ে হত্যা করছে। ।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে অসহযোগ করেছি, আমরা সফল হয়েছি। বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে গান্ধিজি অসহযোগ করেছেন, তিনি সফল হয়েছেন। সফল অসহযোগ এগুলোই। আর উনারা (বিএনপি) কার বিরুদ্ধে কাকে নিয়ে অসহযোগ করছেন।
তিনি আরও বলেন, 'বিএনপি কার বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলন করছে? কাকে নিয়ে করছে? অসহযোগ মানে তো নাশকতা নয়। অসহযোগ মানে কি ট্রেনে-বাসে নারী-শিশু পুড়িয়ে হত্যা করা? যারা এই সমস্ত নাশকতা করে, তারা অসহযোগ মানে বোঝে না। অসহযোগ করার সুযোগও নেই তাদের।'
সরকারের পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারে অধীনে নির্বাচন এবং তফসিল বাতিলের দাবিতে গত ২৯ অক্টোবর থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএনপিসহ সমমনা জোট ও দলগুলো চার দফায় পাঁচ দিন হরতাল এবং এগারো দফায় ২২ দিন অবরোধ কর্মসূচি পালন করে।
পরে গত ২০ ডিসেম্বর বুধবার সরকারের বিরুদ্ধে 'সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনে'র ডাক দেয় বিএনপি। এই আন্দোলনে অংশ নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচনী দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। সরকারকে কর, খাজনা এবং বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানির বিল পরিশোধ বন্ধ করে দেওয়া এবং ব্যাংকে আমানত না রাখার আহŸানও জানানো হয়েছে। মামলার আসামি দলীয় নেতাকর্মীদেরকে আদালতে হাজিরা না দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা দুইজন পাঁচজন নিয়ে রাস্তায় দৌড়া-দৌড়ি করেন এবং নাশকতা করেন। তাদের অসহযোগ মানে ট্রেনের মধ্যে আগুন দিয়ে শিশু নারী হত্যা করা। যারা এই নাশকতা ও সহিংসতা করে, যারা যুদ্ধাপরাধীদের দোসর, অসহযোগের মানেও তারা বুঝেন না। অসহযোগ করার তাদের কোনো সুযোগও নেই। কারণ জনগণ তাদের সঙ্গে নেই। জনগণকে ছাড়া অসহযোগ করা যায় না।
দীপু মনি বলেন, সবাইকে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হয়। কিন্তু তারা ইতিহাস বিকৃতকারী, সে কারণে তারা ইতিহাসও বুঝেন না। দীপু মনি নির্বাচনী প্রচারে নেমে আজ শুক্রবার শাহ মুহাম্মদপুর ইউনিয়নের নারী ও পুরুষ ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এসময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে ছিলেন।
দীপু মনি ২০০৮ সালে প্রথম চাঁদপুর-৩,আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালে তাকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর তাকে শিক্ষামন্ত্রী করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন,চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, শাহমাহমুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান নান্টুসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।