চাঁদপুর-৩ ও চাঁদপুর-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভুঁইয়া বলেছেন, নির্বাচনে যারা যুদ্ধে নামে সবাইত বীর প্রতীক ও বীর শ্রেষ্ঠ উপাদি পায় না। নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব। লড়াই চালাতে গিয়ে যদি রক্তও ঝরাতে হয় এবং জীবনও যায় তাহলে ওখান থেকে পিছ পা হব না। যদি এমন কিছুও ঘটে তাহলে আপনারা আমার জানাযায় গিয়ে শরীক হয়ে আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি কখনো কোন মিথ্যা আশ্বাস দেইনি এবং কারো প্রতি আমার রাগ অনুরাগ নেই।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে চাঁদপুর প্রেসক্লাবে চাঁদপুর-৩ ও চাঁদপুর-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর আমি সম্পূর্ণ আস্থাশীল। নির্বাচন কমিশন থেকে সর্বশেষ চাঁদপুরে যিনি এসেছেন মো. আনিছুর রহমান তিনি আমাদের সাথে কথা বলেছেন। সেখানে গোয়েন্দাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন ছিলেন। তাদের যে মনোভাব দেখেছি, তাতে আমি মনে করি বাংলাদেশের ইতিহাসে এ নির্বাচন হবে অনন্য এবং ঐতিহাসিক। সে জন্য আমি এখনও আস্থাশীল। তবে ইতোমধ্যে যে অভিযোগগুলো উঠেছে সেগুলো আমি লিখিত জানিয়েছি। সেগুলো নিরসন প্রত্যাশা করি এবং আশা করি তারা করবেন। তারা যেভাবে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য।
তিনি আরো বলেন, আগে দলের বাহিরে প্রার্থী হলে বলা হতো বিদ্রোহী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকলকে জনগণের আদালতে হাজির করেছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণের রায় নিয়ে যে আসে, সেই এমপি হবে। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য আমিও জনগণের আদালতে হাজির হয়েছি। জনগণ যে রায় দিবেন, তা আমি মেনে নেব।
স্বতন্ত্র এই প্রার্থী বলেন, নির্বাচনী এলাকায় খুনি ভাড়াটিয়া আনা হয়েছে। আমাকে খুন করার প্রক্রিয়া চলছে। তবে আমার কাছে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য নেই। বাতাসে অনেক খবর আসে। নির্বাচনে আমার যদি রক্ত ঝরে বা মৃত্যু হয়, আমি তারপরও জনগনের রায় মেনে নেব।
তিনি আরও বলেন, আমি কেন দুটি আসনে নির্বাচন করছি। কারণ ফরিদগঞ্জ আমার বাপ দাদার এলাকা। আর চাঁদপুর-৪ থেকে আমি এমপি হয়েছি। চাঁদপুর-৩ থেকে এর আগেও নির্বাচন করেছি। তবে এখন নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ানো কোন সুযোগ নেই। দুই আসনে নির্বাচন করছি এখানে বয়স ফ্যাক্ট নয়। কিন্তু চাঁদপুর-৩ থেকে জয়ী হলে এটা হবে আমার জন্য আর্শিবাদ। আমি নির্বাচনী সব প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমেছি। এটা নির্বাচনই প্রমাণ করবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ডামি প্রার্থী কেন হবো। আমি ডামি প্রার্থী না। আর নৌকাকেও চ্যালেঞ্জ করি না। জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সন্মান জানিয়ে নির্বাচন করছি। নির্বাচনে এক ঘরে দুই ভাই থাকে। নৌকা ও স্বতন্ত্র ভাই ভাই। যে জনগণের রায়ে জয়ী হবে তাকেই শেখ হাসিনা গ্রহণ করে নিবেন। আর আগামীতে নির্বাচন করার বয়স আমার থাকবে না। এমনিতেই তখন নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়াবো। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমি ইনশাল্লাহ জয়ী হবো।
তিনি নৌকার প্রার্থীর প্রতি অনুরোধ করে বলেন, হুমকি-ধমকি সমালোচনা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য পরিহার করে আসুন আমরা জনগণের রায়ের উপর ভোটের ভাগ্য কি হয় দেখি। জনগণ যাকে চায় সেই জনগণের প্রতিনিধিত্ব করুক। এতে প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের সফলতা দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে।
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক আল ইমরাম শোভন, সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত, শহীদ পাটওয়ারী, বিএম হান্নান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল রুশদী, রিয়াদ ফেরদৌস, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি প্রকৌশলী আব্দুর রব ভূঁইয়া, আব্দুর রশিদ সর্দার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. জহিরুল ইসলাম, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক নুরুল ইসলাম মিয়াজী, সদস্য বদিউজ্জামান কিরণ, চাঁদপুর জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান কালু ভূঁইয়াসহ জাতীয় ও স্থানীয় গণমধ্যামের সাংবাদিকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।