ঢাকা ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

টাঙ্গাইলে ভোটযুদ্ধে তিন নারী প্রতিদ্বন্দ্বী হেভিওয়েট প্রার্থী

টাঙ্গাইলে ভোটযুদ্ধে তিন নারী প্রতিদ্বন্দ্বী হেভিওয়েট প্রার্থী

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি অংশ নিচ্ছে স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও। এবার ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন তিন নারী প্রার্থী। নির্ধারিত নারী আসনে নয় বরং পুরুষদের পাশাপাশি প্রতিযোগিতা করেই নির্বাচিত হতে চান তারা- হতে চান সংসদ সদস্য। নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে তারা আশাবাদী। বিজয়ী হয়ে সন্ত্রাস, মাদক, বৈষম্যমুক্ত সুন্দর-সুখী সমাজ গড়তে চান। তিনটি আসনে তিন নারী প্রার্থীর বিপরীতে প্রতিদ্ব›িদ্বতায় রয়েছেন হেভিওয়েট প্রার্থীসহ ১৯ জন পুরুষ প্রার্থী।

টাঙ্গাইলের ৮টি সংসদীয় আসনের মধ্যে তিনটি আসনে তিন নারী ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। তারা হচ্ছেন- টাঙ্গাইল-৪(কালিহাতী) আসনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সারওয়াত সিরাজ শুক্লা, টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির হয়ে ডাব প্রতীকের প্রার্থী রূপা রায় চৌধুরী এবং টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে তৃণমূল বিএনপির হয়ে সোনালী আঁশ প্রতীকের প্রার্থী পারুল।

টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলার বেতডোবা গ্রামের সারওয়াত সিরাজ শুক্লা সাবেক মন্ত্রী এবং মহান স্বাধীনতার ইশ্তেহার পাঠক প্রয়াত শাহাজাহান সিরাজের মেয়ে। শুক্লা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। তাঁর বাবা শাহাজাহান সিরাজ ছাত্রলীগ, জাসদ, গণফোরাম, বিএনপি যখন যে দল করেছেন তার অনুসারীরা সেই দলেই ঠাই নিয়েছেন। তাঁর মৃত্যুর পরও রয়ে গেছে অনেক ভক্ত। শাজাহান সিরাজের অনুসারীদের সাথে নিয়ে সারওয়াত সিরাজ শুক্লা ওরফে শুক্লা সিরাজ ঈগল প্রতীকে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লা জানান, তার বাবা শাজাহান সিরাজের পাশে কালিহাতীবাসী যেভাবে দাঁড়িয়েছেন তার পাশেও সেভাবেই থাকবেন। তিনি নির্বাচিত হলে কালিহাতীকে মাদক, সন্ত্রাস, বৈষম্যমুক্ত, সুন্দর ও অনন্য উচ্চতার একটি উপজেলা গড়ায় আত্মনিয়োগ করবেন। সবার আগে শিশু ও নারীদের জন্য একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করবেন। তিনি শতভাগ আশাবাদী ভোট দিয়ে কালিহাতীর জনগণ তাকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত করবে।

এ আসনে ব্যারিস্টার শুক্লা সিরাজের বিপরীতে হেভিওয়েট প্রার্থী মহান মুক্তিযুদ্ধে টাঙ্গাইলের কমান্ডার ইন চীফ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ট্রাকগাড়ি প্রতীকের প্রার্থী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সভাপতি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোজহারুল ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সতস্য লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার লিয়াকত আলী, জাতীয় পার্টির(জেপি-মঞ্জু) কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব বাইসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী সাদেক সিদ্দিকী, জাকের পার্টির গোলাপ ফুল প্রতীকের প্রার্থী মোন্তাজ আলী, তৃণমূল বিএনপির সোনীল আঁশ প্রতীকের প্রার্থী শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির একতারা প্রতীকের প্রার্থী শুকুর মামুদ ভোট যুদ্ধে রয়েছেন।

টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৫৪ হাজার ৫৫৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৭৮ হাজার ৮৯২জন, নারী ভোটার এক লাখ ৭৫ হাজার ৬৬২জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার দুই জন।

টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির ডাব প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন রূপা রায় চৌধুরী। তিনি একজন গৃহীনী। রূপা রায় চৌধুরী মির্জাপুরের বাগজান গ্রামের অনিল মৈশালের মেয়ে ও হিমাংশু শেখর রায় চন্দনের স্ত্রী। সর্বমহলে পরিচিত এই নারীর স্থানীয় ও জাতীয় সব নির্বাচনে অংশ নেওয়া তার নেশা। তিনি এর আগে একবার ইউনিয়ন পরিষদ ও দুইবার জাতীয় সংসদ এবং একবার উপ-নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। প্রতিবার জামানত হারানো এই নারী এবারও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।

ডাব প্রতীকের প্রার্থী রূপা রায় চৌধুরী জানান, জনগণের সেবা করাই তার ইচ্ছা। তিনি বিশ্বাস করেন- জনগণ একবার না একবার তাকে সেবা করার সুযোগ দিবেই। তিনি বিজয়ী হলে মির্জাপুরকে স্মার্ট উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলবেন। সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হওয়ার আশা করেন।

এ আসনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বর্তমান এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নৌকা প্রতীকের খান আহমেদ শুভ, মির্জাপুর উপজেলা পরিষদের তিনবারের চেয়ারম্যান ট্রাকগাড়ি প্রতীকের প্রার্থী মীর এনায়েত হোসেন মন্টু, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের গামছা প্রতীকের প্রার্থী আরমান হোসেন তালুকদার, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির হাতুড়ি প্রতীকের প্রার্থী গোলাম নওজব চৌধুরী(পাওয়ার চৌধুরী), জাতীয় পার্টির সভাপতি মন্ডলীর সদস্য লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী জহিরুল ইসলাম জহির, জাকের পার্টির গোলাপ ফুল প্রতীকের প্রার্থী মোক্তার হোসেন ও জাসদের মশাল প্রতীকের প্রার্থী মঞ্জুর রহমান মজনু।

টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৫৮ হাজার ৪৩২ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৮০ হাজার ২০৬জন, নারী ভোটার এক লাখ ৭৮ হাজার ২২০জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৬ জন।

টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে নাম লিখিয়েছেন পারুল আক্তার। কালিহাতী উপজেলার গোলড়া গ্রামের গৃহিনী পারুল আক্তার ওই গ্রামের লোকমান হোসেনের স্ত্রী। তিনি বাসাইল-সখীপুরে অপরিচিত। এ আসনে তাকে চেনেন এমন মিডিয়াকর্মী খুঁজে পাওয়া মুস্কিল। তারপরও তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৮ আসনে প্রার্থী হয়েছেন।

সোনালী আঁশ প্রতীকের প্রার্থী পারুল আক্তার জানান, তিনি অন্যায়, অবিচার, দুর্নীতি দূর করে দুই উপজেলাকে সুন্দর করে সাজাতে প্রার্থী হয়েছেন। দুই উপজেলার জনগণ ভোট দিয়ে তাকে নির্বাচিত করলে সব সময় মানবকল্যাণে নিবেদিত থাকবেন।

এ আসনে গৃহবধূ পারুল আক্তারের প্রতিদ্ব›দ্বী হেভিওয়েট প্রার্থী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি গামছা প্রতীকের বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম, সখীপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অনুপম শাহজাহান জয়, জাতীয় পার্টির নেতা লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী রেজাউল করিম, বিকল্পধারা বাংলাদেশের কুলা প্রতীকের প্রার্থী আবুল হাশেম ও বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির ডাব প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা কামাল।

টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনের দুই উপজেলায় মোট ভোটার তিন লাখ ৯০ হাজার ১০জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৯৪ হাজার ৮২, নারী ভোটার এক লাখ ৯৬ হাজার ৩৪জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৪ জন।

টাঙ্গাইল,হেভিওয়েট,নারী
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত