নেত্রকোণায় দুই স্ত্রীর হস্তক্ষেপে স্বামীর তৃতীয় বিয়ে পন্ড
প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৫:৪৬ | অনলাইন সংস্করণ
নেত্রকোণা প্রতিনিধি
দুই যুবক-যুবতির বিয়ে উপলক্ষে শতাধীক লোকরে প্রীতিভোজ চলছে। এরই মাঝে সেখানে হাজির হন দুই নারী। উভয়েরই দাবি- বর সাজা ওই ব্যক্তিটি তাদের স্বামী। নতুন বিয়েতে বাধা দেন তারা। ঘটে বিপত্তি, হাতাহতি। কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে এসে হাজির হয় পুলিশও। এরপর পন্ড হয়ে যায় বিয়ের অনুষ্ঠান।
নেত্রকোণা শহরের কুড়পাড় এলাকায় ‘বিয়ে বাড়ি’ কমিউনিটি সেন্টারে সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলের দিকে এই ঘটনা ঘটে। বরসাজা যুবকের নাম সাজ্জাদ হোসেন। তিনি সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও নেত্রকোণার মদন উপজেলার মাখনা গ্রামের আসাদুজ্জামানের ছেলে। স্ত্রী দাবি করা নারীদের বাড়িও ওই একই উপজেলায়। তাদের একজন নওরিন হাসান নিসা, অপরজন পিয়া জাহান ।
নিসার দাবি, তিনি সাজ্জাদের দ্বিতীয় স্ত্রী। তিনি বলেন, ‘গত বছরের পহেলা জুলাই সাজ্জাদ হোসেনের সাথে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর আমার সাথে তার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল, সংসার চলছিল স্বাভাবিকভাবেই। কয়েক মাস আগে সে আমার সাথে যোগাযোগ কমিয়ে দেয়। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি যে, আগেরও এক স্ত্রী আছে তার। সেই স্ত্রীর সাথে মামলা চলমান রয়েছে। আজ (২৫ ডিসেম্বর) জেলা শহরের কুড়পাড় ‘বিয়ে বাড়ি’ কমিউনিটি সেন্টারে তার আরো এক বিয়ের অনুষ্ঠানের খবর পাই। বিষয়টি জেনে তাৎক্ষণিকভাবে আমি পুলিশ সুপার স্যারের কাছে গিয়ে বিয়ে বন্ধের জন্য লিখিত আবেদন করি। পরে পুলিশ কমিউনিটি সেন্টারে এসে বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।’
এদিকে, পিয়া জাহান নিজেকে সাজ্জাদের প্রথম স্ত্রী দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘আমার সাথে তার তিন বছর আগে বিয়ে হয়। এরপর থেকে আমরা একসাথেই ময়মনসিংহে ছিলাম। পরে সে বদলী হয়ে ধর্মপাশা চলে গেলে আমার সাথে দূরত্ব বাড়ে। বছর খানেক আগে সে আরেকজনকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। সেখানেও আমি উপস্থিত হয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেই। পরে জানতে পারি যে, সে তার আত্মীয় নিসাকে বিয়ে করেছে। এরপর আমি তার বিরুদ্ধে মামলা করি। মামলাটি চলমান রয়েছে। আজ আরেকজনকে বিয়ে করছে শুনে এখানে হাজির হয়েছি।’
নিসা, পিয়া ও তাদের স্বজনদের বাধায় কম্যূনিটি সেন্টার স্বরগরম হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে শুরু হয় হাতাহাতি, মারামারি। এই ঘটনায় আহত হন বরবেশি সাজ্জাদ। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে, পন্ড হয়ে যায় বিয়ের অনুষ্ঠান।
জানা যায়, সাজ্জাদ ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত তিনবছরে তিনটি বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রীর বাধায় অপর একটি বিয়ে পন্ড হয়।
জানতে চাইলে বর সাজ্জাদ হোসেন পিয়া জাহানকে বিয়ের কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘পিয়ার সাথে বিয়ে হয়েছিল, পরে তালাক দিয়ে দিয়েছি। তার সাথে আমার মামলা চলছে। বিষয়টি আমি আইনিভাবে মোকাবিলা করবো। নিসা আমার আত্মীয়, তার সাথে আমার বিয়ে হয় নাই।’
নেত্রকোনা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ পিপিএম বলেন, ‘একটি লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’