নাসিকের কিডনী ডায়ালাইসিস সেন্টারে প্যাথলজিক্যাল ল্যাব উদ্বোধন
নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রচুর ভাইদের বড় বড় দেশে বাড়িঘর আছে : আইভী
প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮:৪৪ | অনলাইন সংস্করণ
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, ‘নারায়ণগঞ্জ গাজীপুর এবং ঢাকায় পলিউশন বেশী এটা সত্য। সাংবাদিকদের বলবো বন্দরে নদীর তীরে সিমেন্ট কারখানা কি পরিমান দূষণ করছে সেই বিষয়টি তুলে ধরতে। এই কারনে অনেক বেশী বায়ু দূষণ হয়। নারায়ণগঞ্জে যেই পরিমান গাছ লাগিয়েছি তাতে বড় পরিবর্তন এসেছে। শেখ রাসেল পার্কে যে পরিমাণ গাছ লাগিয়েছি এতে কার্বন ডাই অক্সাইড কম উৎপাদন হচ্ছে। এ কারণে রিসেন্টলি আমরা গ্রীন এওয়ার্ড পেয়েছি।’
বুধবার ২৭ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পশ্চিম দেওভোগে নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অবস্থিত এনসিসি-এসবিএফ কিডনী ডায়ালাইসিস সেন্টারে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এই মন্তব্য করেন আইভী। এদিন ডায়ালাইসিস সেন্টার বর্ধিত ও প্যাথলজিক্যাল ল্যাব উদ্বোধন করা হয়। এসময় নাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন, কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনির, কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ্বাস, নারী কাউন্সিলর শাওন অংকন, সোনার বাংলা ফাউন্ডেশনের চীফ অপারেটিং অফিসার হোসনে আরা বেগম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে মেয়র আইভী আরো বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে ব্যবসা করে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা আয় করছেন যেসব ব্যবসায়ীরা তারাই এই শহরকে দূষিত করছে। তাদেরও দায়বদ্ধতা আছে এই শহরকে সুস্থ রাখার। তারা ঠিকই সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই, আমেরিকা, কানাডাসহ বড়বড় দেশে বাড়িঘর করেন। এই নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রচুর ভাইদের সেখানে বাড়িঘর রয়েছে। তারা প্রচুর টাকা সেখানে খরচ করেছে। তাদের কি এই শহরের প্রতি দায়বদ্ধতা নেই। আমি নারায়ণগঞ্জের সেই ভাইদের অনুরোধ করবো সহযোগীতা করতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই শহর দেশের সবচেয়ে ধনী জেলার শহর। তাহলে কেন এই শহরের প্রভাবশালীরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় না? তারা কেন কিছু করে না সেটা আপনারা সবাই জানেন। নতুন করে বলে কাউকে অসম্মানিত করতে চাই না। যাদের আগ্রহ আছে, তারা ইচ্ছা করলেও আমাদের সহযোগীতা করতে এগিয়ে আসতে পারে না। আমি অনুরোধ করবো, তারা যেন ভয়ভীতি উপেক্ষা করে তারা যেন হাত প্রসারিত করে। প্রয়োজনে আপনাদের সহযোগীতার কথা গোপন থাকবে।
মেয়র আইভী কিডনী হাসপাতাল গড়ে তোলার আশ্বাস দিয়ে বলেন, আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে সোনার বাংলা ফাউন্ডেশনের সাথে হাত মিলিয়ে এখানে একটি কিডনী হাসপাতাল স্থাপনের জন্য। তাহলে এখানে আইসিইউ সেবাও চালু হবে। ইচ্ছা আছে কিডনী ট্রান্সপ্লান্ট হাসপাতাল গড়ে তোলার।
নারায়ণগঞ্জের পরিবর্তনের বিষয়টি স্মরণ করে দিয়ে বলেন, ‘আমি যখন ২০০৩ সালে পৌরসভার দায়িত্ব নিয়েছিলাম তখন সবার চাহিদা ছিলো শুরু ড্রেন আর রাস্তা করে দেয়ার। যেখানেই যেতাম সেখানেই রাস্তা খারাপ। আমি ৮ বছর পৌরসভায় শুধু রাস্তা আর ড্রেন করেছি। এমন কোন গলি ছিলো না যেখানে রাস্তা বা ড্রেন করিনি। ২০১১ সালে সিটি করপোরেশন হবার পরে সিদ্ধিরগঞ্জ বন্দরে গিয়েও দেখলাম রাস্তা আর ড্রেনের দুর্দশা। সেখানেও আমরা কাজ করেছি। তার পাশাপাশি পুরো সিটি এলাকায় ৪ টি হাসপাতাল তৈরী করেছি।’
অনুষ্ঠানে সোনার বাংলা ফাউন্ডেশনের চীফ অপারেটিং অফিসার হোসনে আরা বেগম জানান, তারা গেল বছরে ৮০ হাজার কিডনী ডায়ালাইসিস করেছেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে এনসিসি-এসবিএফ কিডনী ডায়ালাইসিস সেন্টারে দু’টি প্যাকেজ রয়েছে। প্রতিবার নতুন ব্লাডলাইন প্রথমবার ১৯০০ টাকা (নতুন ডায়ালাইজার), দ্বিতীয়বার ১৯০০ টাকা (রিইউজ), তৃতীয়বার ১৯০০ টাকা (রি-ইউজ) এবং প্রতিবার নতুন ডায়ালাইজার এবং নতুন ব্লাড লাইন ২৪০০ টাকা, সি পজেটিভ ২৪০০ টাকা। এছাড়া গরীব ও অসহায় রোগীদের জন্য বিশেষ ভর্তুকির ব্যবস্থা রয়েছে।