ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

২৬ আসনে জাপা নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছে আ. লীগ: জিএম কাদের

২৬ আসনে জাপা নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছে আ. লীগ: জিএম কাদের

লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টি মনোনীত রংপুর-৩ আসনের প্রার্থী ও দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে কোন ছাড় দেয়নি, বরং যে ২৬ টি আসনে নৌকা তুলে নিয়েছে ২-১ টি বাদে সব আসনেই আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে, তাদের পক্ষেই তারা কাজ করছে।

সোমবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে রংপুর আদালত পাড়ায় আইনজীবি নেতাদের সাথে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় আইনজীবি ও সাধারণ মানুষের সাথে গনসংযোগ করে লাঙ্গলে ভোট চেয়েছেন জাপার এই চেয়ারম্যান।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, ২৬ টি আসনে কোনো ভাগাভাগি হয়নি, মহাজোটও হয়নি। এগুলো সমস্ত অপপ্রচার। আমরা সব জায়গায় চেয়েছিলাম প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা। আরেকটা চেয়েছিলাম অস্ত্র পেশিশক্তি ও অর্থের প্রভাব থেকে নির্বাচনকে সরিয়ে রাখা। তাহলে আমরা নির্বাচন করবো।

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টিকে এখনও রংপুরের মানুষ বুকে ধারণ করে রেখেছে, নানান ষড়যন্ত্রের মধ্যদিয়ে আমার এখনো এগিয়ে যাচ্ছি। এরশাদ সাহেব যে ষড়যন্ত্রের শিকার হযেছে আমরাও এখন সেই ষড়যন্ত্রের শিকার এবং এখনো আমাদের দলকে যতভাবে ক্ষতি করা চেষ্টা করা হউক সকলেই চাচ্ছে আমরা তাদের সাথে থাকি। আমরা সাথে থাকলে তারা আবারো ক্ষমতায় যাবে। আল্লাহ রহমতে এটা হলো আপনাদের কারণে। আপনাদের সমর্থনের কারণে। জাতীয় পার্টি এখনো বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

তিনি আরোও বলেন, এবারের আন্দোলনের সময় সরকার একটা পক্ষ নিয়েছে, আর বিএনপিসহ আরো কিছু দল একটা পক্ষ নিয়েছে। আমরা কিন্তু কারো পক্ষ নেইনি। আমরা সরকারের সাথে এক সময় ছিলাম, আমরা নানানভাবে বঞ্চিত হয়েছি। আর বিএনপির মাধ্যমে আমরা সঠিক জিনিষ পাইনি। আর আমাদের দলকে ভাঙ্গা জন্য বিভিন্ন ভাবে ষড়যন্ত্র করে, এখনো ধব্বংস করার জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চলছে। আজ দলের নেতৃত্ব নিয়ে যাবে, দলকে ভাঙ্গন সৃষ্টি করবে, জোড় করে গায়ের জোড়ে বিভিন্ন ভাবে তারা হুমকি দেয় আমাদেরকে। সংসদে যদি আমরা না যাই, আমাদের দল যদি নষ্ট করে দেয়া হয়। তাহলে উত্তরবঙ্গের মানুষের জন্য কোনো দল থাকবে না। এরশাদ সাহেবের যে নীতি, যার কারণে মানুষ এতো ভালবাসা দেখিয়েছে। জাতীয় পার্টিকে যারা অন্তরে ধারণ করেন তাদের জন্য রাজনীতিত্বে বক্তব্য দেয়ার কোনো লোক থাকবেনা। আমরা সরকারের সঙ্গেও নাই, সরকার বিরোধী আন্দোলনকারীদের পক্ষেও নাই। এই নির্বাচনে সরকারকে সমর্থন দেয়ার জন্য আসিনি, আমরা সংসদে যাওয়ার জন্য এসেছি, আমাদের দলকে বাচাঁনোর জন্য এসেছি।

জিএম কাদের বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে নৌকা প্রার্থী ও সমর্থকরা জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও সমর্থকদের ওপর হামলা, নির্বাচনী অফিস ভাংচুরসহ পোলিং এজেন্টদের সঙ্গে বৈঠক করে ভোট প্রভাবিত করার মতো কাজ করছে। ভয়ভীতি প্রদর্শনের কারণে জাতীয় পার্টির ভোটার প্রার্থী ও সমর্থকরা ভীত সন্ত্রন্ত হয়ে পড়ছে। অবস্থাদৃষ্টে এমন মনে হচ্ছে যে আওয়ামীলীগ ছাড়া ভোটের মাঠে আর কেউ থাকতে পারবে না।

তিনি আরো বলেন, জাতীয় পার্টি যদি শক্তিশালী হয়, তাহলে রংপুরের উন্নয়ন হবে। বঞ্চনা ও বৈষম্য থেকে রক্ষা পাবে রংপুরের মানুষ। আমি নির্বাচিত হলে রংপুরের প্রত্যাশিত উন্নয়ন উপহার দিবো।

অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান, রংপুর জেলার আহবায়ক ও রংপুর মহানগর সভাপতি, রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব মো. মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, ভাইস চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসীর, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর জেলা সদস্য সচিব হাজী আব্দুর রাজ্জাক, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্ঠা মো. আলা উদ্দিন মিয়া ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজমল হোসেন লেবু।

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর জেলার যূগ্ম আহবায়ক মো. শাফিউর রহমান শাফি, কেন্দ্রীয় সদস্য ও রংপুর মহানগর সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. লোকমান হোসেন, সহ-সভাপতি মো. জাহেদুল ইসলাম, জাতীয় যুব সংহতি রংপুর জেলার সভাপতি মো. হাসানুজ্জামান নাজিম, জেলা মহিলা পার্টির সম্পাদিকা মোছা. নাহিদ ইয়াসমিনসহ জাতীয় পার্টি ও তার অঙ্গ সহযোগি সংগঠন এবং স্থানীয় পর্যায়ের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

এদিকে বিকেলে জাতীয় পার্টির ৩৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে রংপুর মহানগর ও জেলা জাতীয় পার্টির উদ্যেগে নগরীর সেন্ট্রাল রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে কেক কাটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে রংপুর-৩ আসনের জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় সংসদ উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি প্রধান অতিথি থেকে কেক কেটে জাতীয় পার্টির ৩৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করেন। এর আগে সকালে নগরীর কোট চত্ত্বরে গণসংযোগ করেন তিনি।

অপরদিকে রোববার নগরীর সাহেবগঞ্জ বাজার, সিগারেট কোম্পানী মোড় ও শালবন মিস্ত্রিপাড়া মোড়ে পৃথক পৃথক পথসভায় তিনি বক্তব্য রাখেন।

জাতীয় পার্টি
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত