মৌলভীবাজারে তিনটি আসনে ৩ হেভিওয়েট প্রার্থীর নির্বাচন বর্জন

প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮:৩৭ | অনলাইন সংস্করণ

  মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনে তৃণমূল বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এম শাহীন সোনালী আঁশ প্রতীকের  ভোটে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন মৌলভীবাজার ১ (বড়লেখা ও জুড়ী) আসনের জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী আহমেদ রিয়াজ উদ্দিন এবং মৌলভীবাজার-৩ (মৌলভীবাজার-রাজনগর) আসনে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মো. আলতাফুর রহমানও আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

এছাড়াও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শফি আহমেদ সলমন তিনিও অনিয়ম ও ভোট কাচুপির অভিযোগ তুলেছেন  এবং প্রশাসনের কাছে বারবার অভিযোগ দেওয়ার পরও কোন প্রতিকার পাননি বলে জানান।

শ্রীমঙ্গলের কোন কেন্দ্রেই নৌকা প্রতিক ছাড়া অন্য কোন প্রতিকার কোন এজেন্ড পাওয়া যায়নি। একই অবস্থা জেলার অন্যান্য উপজেলায়। 

রোববার (৭ জানুয়ারি) রাবিয়া আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে এম এম শাহীন ও আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এর সমর্থকদের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে কিছুক্ষণ ওই কেন্দ্রে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। বিকাল সাড়ে ৩টায় কুলাউড়া পৌর শহরের মাগুরা এলাকার নিজ বাসায় সাংবাদিকদের কাছে ভোট বর্জনের এ ঘোষনা দেন সোনালী আঁশ প্রার্থী  এমএ শাহিন।

সকালে ওই কেন্দ্রে সস্ত্রীক ভোট প্রদান শেষে সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আমাদের কাছে গুঞ্জন রয়েছে সরকারি দলের প্রার্থী তারা তাদের ভোটে কারচুপি ও প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করবে। সেন্টার দখলের চেষ্টা করবে।

তিনি আরও জানিয়ে বলেন, আমাকে বার বার প্রশাসন আশ্বস্থ করেছে। আমি শেষ মুহুর্তটুকু পর্যন্ত অপেক্ষা করবো। যাতে শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত সুষ্ঠু ও সুন্দর ভোট গ্রহণ হয়। কিন্তু ৪ টার মধ্যে যদি দেখি কোথাও কোন বাঁধা আসে তাহলে আমি নিজেকে প্রত্যাহার করবো। অবশেষে তিনি নিজেকে ভোট থেকে প্রত্যাহার করেন।

এদিকে, একই অভিযোগে মৌলভীবাজার-৩ (মৌলভীবাজার-রাজনগর) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. আলতাফুর রহমানও আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, মৌলভীবাজার জেলায় ৬৭ টি ইউনিয়ন ও ৫টি পৌরসভায় মোট ভোটার রয়েছেন ১৫ লাখ ১৬ হাজার ৫৩৫ জন। এর মধ্যে পূরুষ ৭ লাখ ৬৯ হাজার ৯৪৩ জন এবং মহিলা ভোটার ৭ লাখ ৪৬ হাজার ৬৪৮জন। মোট ভোট কেন্দ্র ৫৪৯টি ও স্থায়ী অস্থায়ী মিলিয়ে বুথ রয়েছে ৩ হাজার ৩০৫টি।
এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন মৌলভীবাজার ১ (বড়লেখা ও জুড়ী) আসনের জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী আহমেদ রিয়াজ উদ্দিন। সুষ্ঠু পরিবেশে ভোটগ্রহণ হবে না এমন আশঙ্কার কথা প্রকাশ করে তিনি শনিবার ৬ জানুয়ারি বিকেল তার ফেসবুক আইডিতে এক ভিডিও বার্তায় এই ঘোষণা দেন। মুঠোফোনে লাঙ্গল প্রার্থী আহমেদ রিয়াজ উদ্দিন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণ জানতে চাইলে আহমেদ রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘ভোটের পরিবেশ এতদিন ভালো ছিল। এখন সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো সুযোগও নেই।’

তিনি বলেন, ‘গতরাতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রী মো: শাহাব উদ্দিন প্রত্যেক ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি-সেক্রেটারিকে ডেকে বলেছেন যার যার সেন্টারে পাশ করিয়ে দিতে হবে। এই তথ্যও আমার কাছে আছে। হঠাৎ করে তারা প্ল্যান পাল্টিয়েছে। তাহলে আমি কেন পাল্টাব না? ভোটের দিন দুপুরে কাঁদার চেয়ে, আগের দিন সরে যাওয়া ভালো।’