কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে কল্যান পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিমের কাছে হেরে গেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সংসদ সদস্য জাফর আলম।
জেলা রিটানিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, নানা উত্তাপ ছড়ালেও কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শেষ হয়েছে চকরিয়া -পেকুয়া আসনের নির্বাচন। তবে পৃথক পৃথক অভিযোগের কারনে চরনদীপ ভূমিহীন প্রাইমারি স্কুল, দক্ষিণ ফুলছুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মরংগুনা অসুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোট গ্রহন স্থগিত রয়েছে। এই তিন কেন্দ্রের ফলাফল ছাড়াই এই আসনে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান তথা হাতঘড়ি প্রতিকের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম ৮১.৯৫৫ ভোট পেয়ে বেসরকারীভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্ধী স্বতন্ত্র প্রার্থী তথা ট্রাক প্রতিকের জাফর আলম পেয়েছেন ৫২.৮৯৬ ভোট।
এদিকে ভোট শেষ হওয়ার ৫০ মিনিট আগে নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা দেন সংসদ সদস্য ও কক্সবাজার ১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জাফর আলম।
আশেকের হ্যাটট্রিক:
২০১৪ ও ২০১৮ এর ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এবারও তৃতীয়বারের মত মহেশখালি কুতুবদিয়ার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আশেক উল্লাহ রফিক। ৯৭ হাজার ৪৭৬ ভোট পেয়ে তিনি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বেসরকারীভাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
মহেশখালি ও কুতুবদিয়ার উপজেলা প্রশাসন এবং ভোটারদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই কক্সবাজার- ২ আসনে ভোট গ্রহন শেষ হয়। এতে ৩৯.৪ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। রাতেই বেসরকারীভাবে ফলাফল ঘোষনা করা হয়।
এ ফলাফলে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আশেক উল্লাহ রফিক । তিনি ৬২ হাজার ৯৮০ ভোট বেশী পেয়ে বিজয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী নোঙ্গর প্রতীকের (বিএনএম)র মুহাম্মদ শরীফ বাদশা পেয়েছে ৩৪ হাজার ৪৯৬ ভোট।
ঘোষিত ফল অনুযায়ী অনান্য প্রার্থীদের মধ্যে ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মুহাম্মদ ইউনুছ (মিনার) ২২৯ ভোট ,ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী মাহাবুবুল আলম (আম) ১১৬ ভোট,ইসলামীক ফ্রন্ট বাংলাদেশের প্রার্থী মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান (চেয়ার) ১৬১ভোট ও বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির প্রার্থী মো.খাইরুল আমিন (একতারা) ১১৭ ভোট পেয়েছে।এদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ছে।
কমলেরও হ্যাট্রিক:
কক্সবাজার-৩ আসন থেকে পর পর তিনবার এমপি নির্বাচিত হয়ে হ্যাটট্রিক জয় করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাইমুম সরওয়ার কমল।
কক্সবাজার সদর-রামু-ঈদগাঁও উপজেলা নিয়ে কক্সবাজার-৩ আসন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত (নৌকা) সাইমুম সরওয়ার কমলের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল) ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ। তবে অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করে নেন তিনি। এই আসনে ১৭৬টি কেন্দ্রে নৌকার প্রাপ্ত ভোট ১৬৭০২৯ এবং ঈগলের প্রাপ্ত ভোট ২১৯৪৬। দুই উপজেলায় মোট ভোটার ৪৮৯৬১০। মোট ফলাফলে ১৪৫০৮৩ ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন নৌকা প্রতীকের সাইমুম সরওয়ার কমল। আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হলে কক্সবাজার-৩ আসন থেকে টানা তিন মেয়াদের সংসদ সদস্য হয়ে হ্যাটট্রিক করবেন এই সংসদ সদস্য। এর আগে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী থেকে হারলেও দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
বদি ম্যাজিকে দ্বিতীয়বার শাহীন বিজয়ী:
স্বামী সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির ম্যাজিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-৪ আসনে ১লাখ ২২হাজার ৮০ ভোট পেয়ে দ্বিতীয়বারের মত বেসরকারী ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী শাহীন আক্তার।
রবিবার (৭ জানুয়ারি) রাতে উখিয়া-টেকনাফ উপজেলার স্ব-স্ব সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সূত্রে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
উখিয়া উপজেলা সহকারী রির্টানিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহীন আক্তার পেয়েছেন ৬০ হাজার ৬৬৪ ভোট ও তাঁর নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল বশর পেয়েছেন ১০হাজার ৬৯ ভোট। ডাব ১১৫, মিনার ৫৫০, সোনালী আঁশ ১৬৯, আম ১৭৯, লাঙ্গল ১হাজার ২৬৪ ভোট।
অপরদিকে, টেকনাফ উপজেলা সহকারী রির্টানিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, নৌকা প্রার্থী শাহীন আক্তার পেয়েছেন ৬১ হাজার ৬১৬ ভোট ও তাঁর নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল বশর ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন ২১হাজার ৬৩৮ ভোট। ডাব ১৩২, মিনার ২৭৫, সোনালী আঁশ ৭৭, আম ১৪৮, লাঙ্গল ৪৯৪ ভোট।
প্রাপ্ত ফলাফল মতে ৯০হাজার ৩৭৩ ভোট বেশী পেয়ে শাহীন আক্তার বেসরকারী ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
এদিকে ভোট চলাকালীন দুপুরে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে লাঙ্গল প্রতীকের নুরুল আমিন সিকদার ভুট্টো। এরপরে বিকেলে স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঈগল প্রতীকের নুরুল বশর ভোট বর্জন করেন।