কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের ভরাডুবি নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। কর্মীদের অবমূল্যায়ন, হাইব্রিড নেতাদের দাপট, আধিপত্য বিস্তার, ক্ষমতার দাম্ভিকতা এবং নানা অনিয়ম-দুর্নীতির কারণেই আলোচিত এ প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন বলে অভিমত স্থানীয়দের। ইউসুফ হারুনের এমন ফল বিপর্যয় নিয়ে এলাকায় চলছে ইতিবাচক এবং নেতিবাচক আলোচনা।
দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে অবহেলিত এবং ত্যাগী কর্মীদের নিয়ে মাঠে রাজনীতি করে অবশেষে জয়ের দেখা পেয়েছেন প্রভাবশালী ও ত্যাগী নেতা কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক এবং সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল মার্কা নিয়ে জাহাঙ্গীর আলম সরকার। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সুষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
সরেজমিন অনুসন্ধানে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জানান, কুমিল্লা-৩ মুরাদনগর আসনে বিএনপিবিহীন নির্বাচনে ২০১৪ সালে প্রথম এমপি নির্বাচিত হন ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন। নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগের বহু ত্যাগী নেতাকর্মীকে পদবঞ্চিত করেন এবং অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে নিজস্ব বলয় গড়ে তোলেন। পরে ২০১৮ সালের নির্বাচনেও অনেকটা খালি মাঠে গোল দিয়ে সহজ জয় লুফে নেন তিনি।
এসব কারণে চরম ক্ষুব্ধ ছিল উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এরই ধারাবাহিকতায় এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এসব নির্যাতিত নিপীড়িত নেতাকর্মীরা ত্যাগী নেতা কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে প্রার্থী হিসাবে পেয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন। বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী জাহাঙ্গীর সরকারের বিজয় নিশ্চিত করতে কাজ করেন।
কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম রাজীব বলেন, দাম্ভিকতা অহংকার, কর্মীদের অবমূল্যায়ন, হাইব্রিট নেতাদের দাপট এবং অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন এলাকার লোকজন। ব্যালটের মাধ্যমে মানুষ তাকে উপযুক্ত জবাব দিয়েছে।
মুরাদনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চেয়ারম্যান ভিপি জাকির হোসেন বলেন, ইউসুফ আব্দুল্লহ হারুন কোনো কর্মীকে মূল্যায়ন করেননি। আমরা চরম অপমান অপদস্থ হয়ে জাহাঙ্গীর আলম সরকারের কাছে আশ্রয় পেয়েছি। তিনি আমাকে নেতা বানিয়েছেন। এ নির্বাচনে আমি আমার দলবল নিয়ে তাকে বিজয়ী করতে কাজ করেছি।