ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মন্ত্রীসভায় মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদসহ সিলেটের ৩ মন্ত্রী

মন্ত্রীসভায় মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদসহ সিলেটের ৩ মন্ত্রী

প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ সমমনাদের ভোট বর্জনের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২২ আসনে জয়লাভ করে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে টানা চতুর্থ-বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীসহ নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নিয়েছেন। এবছর নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন মৌলভীবাজার-৪ আসনের সপ্তম বারের মতো নির্বাচিত উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ এমপিসহ সিলেটের ৩ সাংসদ। এরমধ্যে পূর্ণমন্ত্রী হচ্ছেন দুইজন এবং প্রতিমন্ত্রী একজন।

এরইমধ্যে ৩৭ সদস্যের মন্ত্রিসভা ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েছে আগের মেয়াদে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা সিলেটের তিন মন্ত্রী। এতোমধ্যে শপথ নিয়েছেন মৌলভীবাজার-শ্রীমঙ্গল আসন থেকে নৌকার বিজয়ী প্রার্থী উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ, সিলেট-২ আসনের শফিকুর রহমান চৌধুরী এবং টেকনোক্যাট কোটায় চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখা চিকিৎসক সমন্তলাল সেন। তবে এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা যায়নি কে কোন মস্ত্রনালয়ে দায়িত্ব পাচ্ছেন।

কিছু সুত্রে আবাশ পাওয়া গেছে মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসন থেকে উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ গৃহায়ন ও গণপূর্ত, চিকিৎসক ডাক্তার সমন্তলাল সেন স্বাস্থ্য ও শফিকুর রহমান চৌধূরী প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয় পেতে পারেন।

বুধবার (১০ জানুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ২৫ জন পূর্ণ মন্ত্রী এবং ১১ জন প্রতিমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করে। এরমধ্যে পূর্ণমন্ত্রীদের তালিকায় আছেন উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এবং সামন্তলাল সেন। প্রতিমন্ত্রীদের তালিকায় আছেন সিলেটের আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুর রহমান চৌধুরী।

তবে, উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাচ্ছেন তা এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জানা যায়নি। আর বর্তমান মন্ত্রীসভায় যে দুজনকে টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রী করা হয়েছে তাদের একজন সিলেটের আলোচিত চিকিৎসক সামন্তলাল সেন। তিনি বার্ন ইউনিটের মাধ্যমে আগুনে পোড়া রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে দেশে বেশ আলোচিত। তাই এবছর মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রী করা হয়েছে চিকিৎসক সামন্ত লাল সেনকে।

সাবেক চিফ হুইপ, বীর মুক্তিযোদ্ধা উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ নির্বাচনী এলাকার সাতবারের সংসদ সদস্য। গত মেয়াদে তিনি জাতীয় সংসদের অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

এর আগে সপ্তম জাতীয় সংসদে সরকার দলীয় হুইপ, অষ্টম সংসদে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ ও নবম জাতীয় সংসদে সরকার দলীয় চিফ হুইপের দায়িত্ব পালন করেন।

মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসন থেকে উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি ১৯৯১ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত টানা সাতবার এই আসনে সংসদীয় আসনে বারবার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।

বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান, প্রাজ্ঞতা, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, দলের প্রতি একাগ্রতা ও আনুগত্য, এলাকার উন্নয়ন, শিক্ষাবিদ বিবেচনায় তাঁকে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে, চিকিৎসক সামন্ত লাল সেন একজন বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জন। তিনি শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চিকিৎসাসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি তাকে ২০১৮ সালে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে। বাংলাদেশ প্লাস্টিক সার্জন সোসাইটির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

সামন্ত লাল সেন ১৯৪৯ সালের ২৪ নভেম্বর তৎকালীন পূর্ববঙ্গের সিলেটের হবিগঞ্জের নাগুরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এমবিবিএস পাস করার পর ১৯৭৫ সালে হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেন। পরে ঢাকায় বদলি হয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যোগ দেন। ১৯৮০ সালে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যোগদান করেন। ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে ঢাকা মেডিকেলে ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম বার্ন বিভাগ চালু হয়। সামস্ত লাল এই বিভাগ চালু করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

পরে সরকার তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে। পরবর্তীতে এই ইউনিটটিকে সতন্ত্র একটি ইন্সটিটিউটে রুপান্তর করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট নামে ২০১৯ সালের ৪ জুলাই এখান থেকে চিকিৎসা সেবা প্রদান শুরু হয়। শুরু থেকেই সামস্ত লাল সেন এর প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পান।

প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ডাক পাওয়া সিলেট-২ আসনের এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী ১৯৬৯ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হন। ১৯৭৮ সালে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পর তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হন এবং যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটস কমিউনিটি ডেভোলাপমেন্ট ট্রাস্টের সেক্রেটারী, বেথনাল গ্রীন সিটি চ্যালেঞ্চের ডিরেক্টর ও বিভিন্ন সাব কমিটির কো-চেয়ারম্যান, বিশ্বনাথ প্রবাসী এডুকেশন ট্রাস্টের সভাপতি, প্রবাসী ভোটাধিকার বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব, বাংলা টাউন বাস্তবায়নের অন্যতম উদ্যোক্তা এবং লন্ডন বাংলাদেশ সেন্টারের এডহক কমিটির সদস্য।

যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক থেকে শফিকুর রহমান চৌধুরী সরাসরি সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। অভিজ্ঞ এই রাজনীতিবিদকে এবার প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছে সরকার।

মৌলভীবাজার-৪,মন্ত্রীসভা,সদস্য
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত