মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় যানবাহনসহ রজনীগন্ধা ইউটিলিটি নামের একটি ফেরি ডুবির ঘটনা ঘটেছে। সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটি কাভার্ড ভ্যান ও ৩২জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত ফেরির দ্বিতীয় ইঞ্জিন চালক হুমায়ুন (৩৯) এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
বুধবার সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকার ৫ নম্বর ঘাটের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ডুবে যাওয়া ফেরি ও যানবাহন উদ্ধারে অভিযান চলছে। বিকেল ৪টার সময় উদ্ধারকারী জাহাজ হামজার মাধ্যমে একটি কাভার্ড ভ্যান উদ্ধার করা হয়েছে।
জানা গেছে, ওই ফেরিতে ৭টি ছোট ও দুটি বড়সহ মোট নয়টি ট্রাক ছিল। মঙ্গলবার রাত ১টায় ফেরিটি রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসে। ঘন কুয়াশায় পথ দেখতে না পেয়ে ৫নং ঘাটের অদূরে নদীতে নোঙর করে ছিল।
ফেরিতে ৯টি ট্রাকের চালক তাদের সহকারী এবং ফেরির স্টাফ মিলিয়ে মোট যাত্রী ছিলেন ৩৩ জন। তাদের মধ্যে ২৬ জনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করেন। অন্য ৬ জনকে ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা উদ্ধার করেন। দুর্ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ফেরির দ্বিতীয় ইঞ্জিন চালক হুমায়ুন (৩৯)।
ফেরিতে থাকা কুষ্টিয়ার ট্রাক ড্রাইভার মো. আশিক জানান, হঠাৎ করেই দেখি ফেরি কাত হয়ে যাচ্ছে। এসময় ফেরিতে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য তৈরি হয়। সকলের চিল্লাচিল্লির মাঝেই আমি নদীতে ঝাঁপ দেই। কিছুদূর ভেসে যাবার পর একটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা আমাকে উদ্ধার করে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ বলেন, রাত একটার সময় তীব্র কুয়াশায় কিছু দেখা যাচ্ছিল না। এজন্য রজনীগন্ধা নামের ছোট ফেরিটি ৫নং ঘাটের কাছে নোঙর করে ছিল। ফেরিটিকে বালুবাহী একটি বাল্কহেড ধাক্কা দেয়। এসময় ফেরিটি ডুবে যায়। দুর্ঘটনা কবলিত ফেরির দ্বিতীয় ইঞ্জিন চালক হুমায়ুন(৩৯) এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের সহকারী পরিচালক আনোয়ারুল হক বলেন, উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে। বিকেল ৪টার সময় একটি কাভার্ড ভ্যান উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত ফেরি উদ্ধারে উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় ও রুস্তম যাত্রা শুরু করেছে।
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার জানান, ফেরি দুর্ঘটনার বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।