কক্সবাজারে উঁচু পাহাড় কেটে পুকুর ভরাট

প্রকাশ : ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬:২১ | অনলাইন সংস্করণ

  স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার

কক্সবাজার শহরের কাছাকাছি এলাকা খুরুশকুল ইউনিয়নের হামজারডেইল এলাকায় প্রায় ৬০ ফুট উঁচু সরকারি পাহাড় কেটে পুকুর ভরাটের কাজ চলছে। স্থানীয় বনবিভাগ পাহাড় কর্তনের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে দায় সারলেও ঘুমে রয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, যোগ যোগ ধরে এলাকার লোকজন পুকুরটি ব্যবহার করে আসছিলেন। কিন্তু পুকুরের মালিক আবদুল মন্নানের ওয়ারিশরা পুকুরের মালিকানা কামরুল হাসান, জাহেদুল ইসলাম ও ইসহাককে আমমোক্তারনামামূলে বিক্রি করলে তা ভরাট শুরু হয়। যার কারণে এখন এলাকার লোকজন পুকুরটি ব্যবহার করতে পারছেন না। 

স্থানীয় আবদুল করিম বলেন, গত চার মাস আগে পুকুরটি ভরাট শুরু হলেও দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত এক সপ্তাহ ধরে পুরোদমে চলছে পুকুরটি ভরাটের কাজ। 

মেশিনের মাধ্যমে সেচ দিয়ে পানি শুকিয়ে পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছে এক সপ্তাহ ধরে। পুকুর ভরাটে এক কিলোমিটার পূর্বে পূর্ব হামজারডেইলের বামনাকাটায় সরকারি পাহাড় কেটে মাটি নিয়ে আসা হচ্ছে। কামরুল, জাহেদ, ইসহাক ও কাইয়ুম পুকুরটি ভরাট করছেন। কিন্তু এ বিষয়ে প্রশাসনকে জানানো হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপল এর প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, '৩২ শতকের একটি শতবর্ষী পুকুর সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া ভরাট করে ফেলা হচ্ছে। এটি ভরাটে কেটে নেয়া হচ্ছে ৬০ ফুট উচ্চতার সরকারি পাহাড়। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে। একই সাথে পাহাড় কেটে পুকুর ভরাট কার্যক্রম বন্ধ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের পাশাপাশি কর্তিত পাহাড় ও ভরাটকৃত পুকুর পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার দাবি জানান তিনি। 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পুকুরের এক অংশের মালিক কামরুল হাসান পুকুর ভরাটে জড়িত নন বলে দাবি করেন। 

অপর অংশের মালিক জাহেদুল ইসলাম বলেন, আমরা পুকুরটি কিনে নেয়ার পর তা কাইয়ুমকে বিক্রি করে দিয়েছি। কাইয়ুমই পুকুরটি ভরাট ও উন্নয়ন কাজ করছেন। এ বিষয়ে আমরা কেউ জড়িত নয়। অপরদিকে আবদুল কাইয়ুম দাবী করেন তিনি পুকুরটি কেনার কথা থাকলেও তিনি নেননি।

পাহাড় কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে খুরুশকুল বিট কর্মকর্তা মো. মাসুম মাতবর বলেন, 'সেখানে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। এ বিষয়টিও আমি দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।

বৃহস্পতিবার সকালে যোগাযোগ করা হলে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপল এর প্রধান নির্বাহীর মাধ্যমে বিষযটি অবগত হওয়ার পর অফিসার পাঠিয়ে কাজ বন্ধের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সম্রাট খীসা জানিয়েছেন, পাহাড় কেটে পুকুর ভরাটের বিষয়টি নানা ভাবে নজরে এসেছে।  দ্রুত এটি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে দাবি করেন এই কর্মকর্তা।