ছয়টি পাহাড় কেটে নিচ্ছে মামুন-কাদের সিন্ডিকেট, মাটি চাপা পড়ে আহত শ্রমিক
প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ২২:৫৬ | অনলাইন সংস্করণ
স্টাফ রিপের্টার, কক্সবাজার
কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের তোতকখালী এলাকায় একে একে কেটে নেয়া হচ্ছে ৬ পাহাড়। প্রকাশ্যে এসব পাহাড় কেটে বিক্রি করা হচ্ছে বালি ও মাটি। মামুন-কাদের সিন্ডিকেটের ৪টি ডাম্প ট্রাকে করে দিনে-রাতে এসব বালি ও মাটি পাচার করা হচ্ছে।
পাহাড় কেটে ডাম্প ট্রাকে তোলার সময় শুক্রবার সকালে নুরুল ইসলাম কালু নামের এক শ্রমিক মাটি চাপা পড়ে। অন্য শ্রমিকরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে তাকে তাৎক্ষণিক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। আহত নুরুল ইসলাম কালু (১৮) পিএমখালীর উত্তর পরানিয়াপাড়ার ফরিদের দোকান এলাকার আবদুছ ছালামের পুত্র।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকের বরাত দিয়ে আহতের বোন নাছিমা জানান, আহত কালুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহত নুরুল ইসলামের মা লায়লা বেগম জানান, প্রতিদিনের মতো ডাম্প ট্রাক যোগে মাটি কাটতে যায় তার ছেলে। কিন্তু সকালে তিনি খবর পান তার ছেলে পাহাড়ের মাটি চাপা পড়েছে। তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। স্থানীয় শাহাবুদ্দিন জানান, তোতকখালীর সতেরকাটা এলাকায় ৩/৪টি ডাম্প ট্রাক নিয়ে পাহাড়ের মাটি ও বালি বিক্রি করেন মামুন, কাদের, ধলু, আমিন এবং বাবুল। তাঁরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রশাসন যেমন তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয় না তেমনি স্থানীয় লোকজনও তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস করে না। তাদের ডাম্প ট্রাক যোগে মাটি পাচারের সময় শ্রমিক নুরুল ইসলাম মাটি চাপা পড়ে বলে তিনি জানান।
এলাকাবাসীর মৌখিক অভিযোগ পেয়ে পাহাড় কাটার একাধিক স্থান পরিদর্শন করে পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপল এর প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, 'পিএমখালী ও তোতকখালীতে পাহাড় কাটার ভয়াবহ চিত্র দেখা গেছে। এখানে সিন্ডিকেট করে দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে পাহাড় কেটে মাটি ও বালি বিক্রি করা হয়। অবস্থা দেখলে মনে হয় পাহাড় কাটা বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর, বন বিভাগ সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোন ভূমিকা নেই।' দ্রুত যৌথ অভিযান চালিয়ে পাহাড় কাটা বন্ধ করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএমখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বলেন, 'ঘটনাটি শুনেছি কিন্তু কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি।'
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. নুরুল আমিন জনবল সংকটের কারণে ইচ্ছা থাকা স্বত্তেও কাঙ্ক্ষিত কাজ দেখাতে পারছেন না দাবী করে বলেন, 'এরপরও তথ্য দিন, ব্যবস্থা নেয়া হবে।'
যোগাযোগ করা হলে কক্সবাজার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ উল্লাহ নিজামী বলেন, 'পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে পাহাড় ধসে শ্রমিক আহতের ঘটনায় থানা পুলিশকেও অবহিত করুন।