ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কাউখালী খাদ্য গুদাম চত্বর হয়ে উঠেছে মাদক সেবীদের নিরাপদ আস্থানা

কাউখালী খাদ্য গুদাম চত্বর হয়ে উঠেছে মাদক সেবীদের নিরাপদ আস্থানা

কাউখালীতে মাদকের বিস্তার দিন দিন বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে সর্বত্র। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা সভায় বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি তুলেছেন।

মাদক প্রবণ এলাকার মধ্যে রয়েছে খাদ্য গুদাম, আমরাজুড়ি ফেরিঘাট ও ইটভাটার আশ-পাশ এলাকা, কেউন্দিয়া স্কুলের পিছনের এলাকা, সাহাপুরা, ইকোপার্কের পিছনের নদীর পাড়, চড়বাঁশুরী, গান্ডতা, আমরাজুরি ইউনিয়ন পরিষদের পশ্চিম দিকে নদীর পাড় এলাকা, চিরপাড়া গুচ্ছগ্রাম চিরাপাড়া নাপিত বাড়ি রাস্তা, নীলতি বেকুটিয়া রাস্তা, বেকুটিয়া সেতুর নিচে এবং আশপাশ এলাকা, পাঙ্গাসিয়া গুচ্ছগ্রামের নদীর পাড়, মেঘপাল বাজার, হোগলাবেতকা বাজার এলাকা, বাদামতলা নদীর পাড়, তালুকদার হাট বাজারের আশপাশ, শিয়ালকাঠি মোল্লাবাড়ি প্রাইমারি স্কুল সড়ক সহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাদক প্রবণতা অনেক বেশি বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

মাদকের বিষয় চেয়ারম্যানদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রতিটি ইউনিয়নে মাদক নির্মূলের জন্য মাদক বিরোধী অভিযান ও সচেতনতা সভা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। শিয়ালকাঠিতে সভা করার ফলে কিছুদিন মাদকের বিস্তার কমলেও বর্তমানে সর্বত্রই মাদকের ছড়াছড়ি। বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিত মাদক সেবীদের আসর বসে এমন অভিযোগ করেছেন উপজেলার অনেকে।

কাউখালী সরকারি খাদ্য গুদাম চত্বর মাদক সেবীদের নিরাপদ আস্থানা বলে অভিযোগ করেছেন খাদ্য গুদাম পরিদর্শক। তিনি বলেন, মাদক সেবীরা দুষ্কৃতী প্রকৃতির হওয়ায় এদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না সাধারণ মানুষ। যে কারণে এদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে আইনের হাতে দেওয়ার সুযোগ হয় না।

সয়না রঘুনাথপুর ইউনিয়ননের চেয়ারম্যান আবু সাইদ বলেন, আমরা আইন শৃক্সখলা মিটিং এ বার বার মাদক নিয়ে কথা বলি। এরপরেও বিভিন্ন জায়গায় উন্মুক্তভাবে মাদক কেনা বেঁচা ও সেবন করতে দেখা যায়। এ ছাড়া কয়েক দফায় মাদক সেবী ও ব্যবসায়ীদের ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করলে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার ঘটনাও ঘটে। তিনি বলেন নবনির্বাচিত এমপি মাদকের বিষয় কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরে পুলিশের তৎপরতা আগের চেয়ে একটু বৃদ্ধি পেয়েছে।

শিয়ালকাঠী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান গাজী ছিদ্দিকুর রহমান বলেন উঠতি বয়সের যুবকরা দলবেধে বিভিন্ন জায়গায় মাদক ও মোবাইলে জুয়ার আসর বসায়। বিশেষ করে ইউনিয়নের একদিকে ভান্ডারিয়া ,রাজাপুর উপজেলার সীমানা এবং অপরদিকে পিরোজপুর বেকুটিয়া সেতুর পাশে এই ইউনিয়ন যার ফলে বহিরাগত কিছু মাদক ব্যবসায়ী স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে সর্বত্র মাদক ছড়িয়ে দেয়।

মাদকের বিষয় চিয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লাইকুজ্জামান মিন্টু বলেন, আমার ইউনিয়নসহ উপজেলা সর্বত্র এখন মাদকের জয়জয়কার অবস্থা। কোন অবস্থায় মাদক নিয়ন্ত্রণে আসছে না।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আইনশৃঙ্খলা মিটিং এ বারবার আলোচনার পরেও কোন ফল না হওয়ায় গত ২৩ জানুয়ারি পুনরায় নবনির্বাচিত এমপি মহিউদ্দিন মহারাজ মহোদয়ের কাছে আইনশৃঙ্খলা মিটিং এ মাদকের বিষয় আমরা সকল চেয়ারম্যানরা অভিযোগ করলে তিনি মাদক নির্মূল করতে প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর ভূমিকা নেওয়ার অনুরোধ করেন। এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও এর সুফল এখনো মিলছে না। মাদকের কারনে চুরি এবং ইভটিজিং বাড়ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

কাউখালী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, আমি নির্বাচনকালীন সময় এই থানায় যোগদান করেছি মাদক বিক্রেতা এবং সেবনকারীদের একটি নতুন তালিকা তৈরি করা হয়েছে। উপজেলাকে মাদকমুক্ত করার জন্য আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করব। পুলিশের তৎপর অব্যাহত আছে।

তিনি আরো বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান ,মেম্বার এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজের সহযোগিতা ছাড়া মাদক নির্মূল করা সম্ভব না। তিনি মাদক নির্মূলের জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

এ ব্যাপারে আইন শৃক্সখলা কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল মোল্লা বলেন, মাদকের বিষয় কোন ছাড় দেয়া হবে না। তিনি জনপ্রতিনিধিদের সুনির্দিষ্টভাবে মাদকের তথ্য প্রদানের জন্য বলেন এবং মাদক বিরোধী মতবিনিময় সভা পুনরায় করবেন বলে জানান।

কাউখালী,মাদক,আস্থানা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত