বেশ ধুমধাম করে গ্রাম-বাংলার আর দশটা বিয়ের মতোই উভয় পরিবারের সম্মতিতে দুই বাক প্রতিবন্ধীর বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার রাতে উপজেলার রাজাবাড়ি ইউনিয়নের রামখালি পাড়া গ্রামে কনের বাড়িতে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের বর বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী সোহান (২৫) এবং কনে রিমু আক্তার (১৯)। এ সময় মাথা ঝাঁকিয়ে বিয়ের কবুল বলে সম্মতি জানান তারা।
জানা যায়, গ্রাম-বাংলার রীতি অনুযায়ী উভয় পরিবারের সম্মতিতে দুই প্রতিবন্ধীর বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বর সোহান মাথায় টুপি পরে বরযাত্রী নিয়ে কনের বাড়িতে হাজির হন। সেখানে অস্থায়ী সংবর্ধনা মঞ্চে আগে থেকেই মাথায় টিকলি পরে কনের সাজে বসেছিলেন রিমু আক্তার।
বরকে গ্রহণ শেষে নির্ধারিত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। অতিথিদের আপ্যায়নসহ সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ৩ লাখ টাকা দেনমোহরে দুই প্রতিবন্ধীর বিয়ে সম্পন্ন হয়।
বিয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন দুই পরিবার ও এলাকার মানুষ। বর মির্জাপুর উপজেলার বাশতৈল ইউনিয়নের আমড়াতৈল গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে। সে একজন অটোভ্যান চালক।
কনে সখীপুর উপজেলার রাজাবাড়ি ইউনিয়নের রামখালি গ্রামের মৃত রায়হান আলীর বাক প্রতিবন্ধী মেয়ে রিমু।
বিবাহত্তোর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম কাজী বাদল, হতেয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গিয়াসউদ্দিন, তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা নিয়ামুল হোসেন।
উপজেলা প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতির সভাপতি সুমন সরকার বলেন, প্রতিবন্ধীরাই এভাবে একে অপরের প্রতি যদি হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে আমাদের সমাজের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটবে।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শফিউল ইসলাম বলেন, প্রতিবন্ধীদের সমাজে বোঝা হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু আসলে তারা বোঝা নয়। তাদেরকে ঠিকভাবে গড়ে তুলতে পারলে তারাও আমাদের সম্পদ। আর আজকের এই আয়োজন আরেকটি অনুপ্রেরণা।
প্রতিবন্ধী কনে রিমুর মা হেনা আক্তার এই দম্পতির সংসার যেন সুখের হয় সে জন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করেছেন।