চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া (৭৫) গত শুক্রবার রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎিসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শুক্রবারই ইন্তেকালের পর ঢাকার স্কাটন গার্ডেন জামে মসজিদে প্রথম নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তার পরে ২দিন পর রোববার ৬দফা জানাজা শেষে ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়ার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় জেলা শহরের বাবুরহাট স্কুল এন্ড কলেজ মাঠ, বেলা ১১টায় শহরের হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, বাদ যোহর ফরিদগঞ্জ উপজেলার আবিদুর রেজা পাইলট মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে, বিকেল ৩টায় গৃহকালিন্দিয়া হাজরা হাসমত ডিগ্রী কলেজ মাঠে, সর্বশেষ নিজ বাড়ি কাউনিয়া শহীদ হাবিবুল্লা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে ফরিদগঞ্জ উপজেলার রুপস দক্ষিন ইউনিয়নের কাউনিয়া ভুঁইয়া বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে মরহুমকে দাফন করা হয়।
এদিকে জানাযা শেষে জেলা আওয়ামী লীগ, জেলা পরিষদসহ সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মরহুমকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-৪ (সদর ও হাইমচর) ও ৫-(ফরিদগঞ্জ) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে তিনি প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। নির্বাচনের পর অসুস্থ হয়ে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী চিকিৎসক ডা. আনোয়ারা হক, ২ ছেলে ও ২মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন এবং রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ও শুভাকাঙ্খি রেখে যান।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, চাঁদপুরের এ রাজনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া ১৯৪৮ সালের ১ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈত্রিক বাড়ি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার কাউনিয়া গ্রামে। তার পিতার নাম মো. হাসমত উল্ল্যাহ এবং মায়ের নাম হাজেরা বেগম। তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন
কর্মজীবন তিনি লেখাপড়া শেষ করে প্রকৌশলী হিসেবে কর্ম জীবন শুরু করেন। তিনি অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন। এছাড়াও তিনি দেশের অনেক স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া ছাত্রজীবনে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। কর্মজীবন শেষ করে তিনি ২০০৫ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। এরপর টানা ১২ বছর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালে চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এ ছাড়াও ঢাকাস্থ ফরিদগঞ্জ ও চাঁদপুর জেলা সমিতি সভাপতি, বৃহত্তর কুমিল্লা জেলা সমিতি সভাপতি, বঙ্গবন্ধু সমাজকল্যাণ পরিষদ কেন্দ্রীয কমিটির সভাপতি, একাধিকবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট সদস্য ছিলেন এই নেতা।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার স্বনামধন্য গৃদকালিন্দিয়া হাজেরা হাসমত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। এটি ফরিদগঞ্জ উপজেলার একমাত্র অনার্স কলেজ। যা ফরিদগঞ্জের একটি স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ। এছাড়া তিনি কাওনিয়া শহীদ হাবিব উল্যা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।