গাজীপুরের শ্রীপুরে স্ত্রীর হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় দিয়ে চোখের সামনেই হৃদয় নামে এক যুবক ফ্যানের হুকের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। গত মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে পৌরসভার মসজিদ মোড় এলাকায় আফাজ উদ্দিনের ভাড়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত হৃদয় মাগুরার মোহাম্মদপুর থানার পারিঘাটা গ্রামের পিঞ্জর মিয়া শাহিনের ছেলে।
জানা গেছে, হৃদয়ের বাবা প্রায় দুই যুগ ধরে তার নানার বাড়ি কেওয়া পশ্চিম খন্ড গ্রামের নুরুল ইসলাম চেয়ারম্যানের বাড়ির এলাকায় বসবাস করে আসছিলেন। তার বাবার কাপড়ের ব্যবসা ছিল। হৃদয়ের স্ত্রীর নাম আর্জিনা। এটি তার দ্বিতীয় বিয়ে। তিন-চার মাস আগে আর্জিনার সঙ্গে হৃদয়ের বিয়ে হয়। তাদের বিয়ের বিষয়টি গোপন ছিল। বিয়ের পর হৃদয় শ্রীপুর পৌরসভার মসজিদ মোড় এলাকার আফাজ উদ্দিনের বহুতল ভবনের নিচ তলায় একটি ফ্ল্যাটের কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। সেখান থেকে আর্জিনা তার বাবার বাড়ি যাওয়া-আসা করেন।
মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আর্জিনা ওই ভাড়া বাড়িতে আসেন খবর পেয়ে হৃদয়ও যান তার সঙ্গে দেখা করতে। কিছু সময় পর সে আবার দোকানে চলে যায়। আধাঘণ্টা পর ফিরে এসে হৃদয় প্রথমে আর্জিনার বাম হাত, পরে ডান হাত খাটের সঙ্গে বেঁধে ফেলেন। এরপর দুই পা বেঁধে ফেলে মুখে কাপড় গুঁজে দিয়ে আত্মহত্যার জন্য ঘরে ফ্যানের হুকে ওড়না বাঁধতে থাকে।
এসময় আর্জিনা চিৎকার শুরু করলে তার মুখের ভেতর গুঁজে দেওয়া কাপড় বের হয়ে যায় কিন্তু হৃদয় ফের তার মুখে গেঞ্জি গুঁজে দেন। এরপরই হৃদয় আর্জিনার সামনেই ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে আর্জিনার ডাক চিৎকারে কিছু সময় পর স্থানীয়রা ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে হৃদয়ের ঝুলন্ত মরদেহ এবং আর্জিনাকে হাত-পা বাঁধা ও মুখে কাপড় গুজে দেওয়া অবস্থায় দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হৃদয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত হৃদয়ের নানা এমরান হোসেন বলেন, হৃদয়ের আগে আরেকটি স্ত্রী আছে। তার নাম মোহনা। দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। তবে কেন, কি কারণে হৃদয় আত্মহত্যা করতে পারে তা আমি জানতে পারিনি।
দ্বিতীয় স্ত্রী আর্জিনা বলেন, আমি জানতাম হৃদয়ের আগে একটা স্ত্রী আছে। সে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে আমি তা মেনে নিয়ে বিয়ে করি। কিন্তু কি কারণে হৃদয় আত্মহত্যা করলো সে বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। শ্রীপুর থানার এসআই এনায়েত কবির জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
