কক্সবাজার বাদশাঘোনা এলাকায় অবৈধভাবে সরকারি পাহাড় কেটে নেয়ার ঘটনায় অবশেষে নিয়মিত মামলা দায়ের করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। বুধবার রাতে ৩ জনকে আসামি করে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিদর্শক মো. আবদুস সালাম বাদি হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
এর আগে গত বুধবার পাহাড় কাটা নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ। সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে পরিবেশ অধিদপ্তর। পাহাড় বাঁচাতে এগিয়ে আসে সংস্থাটি।
মামলার বাদি পরিদর্শক মো. আবদুস সালাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে পাহাড় কাটা হচ্ছিল। গতকাল পর্যন্ত সেখানে এক লক্ষ ২০ হাজার ঘনফুট পাহাড় কাটার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে গতকাল রাতে ৩ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় আসামীরা হলেন- যথাক্রমে বান্দরবান মৌজার লালমোহনবাগান এলাকার (বর্তমান- বাদশাঘোনা, কক্সবাজার পৌরসভা) চমশিম বমের মেয়ে মাঙাই বম প্রকাশ মেঘা, কক্সবাজার শহরের শীর্ষ পাহাড় কর্তনকারি মোহাজেরপাড়া এলাকার ফকির মোহাম্মদের পুত্র রবি আলম ও বাদশাঘোনা এলাকার লাল মোহাম্মদের পুত্র শাহজাহান। এছাড়া আরও ২/৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুজ্জামান বলেন, 'পাহাড় কাটার ঘটনায় পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে পাওয়া একটি এজাহার এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। মামলাটি পরিবেশ অধিদপ্তর তদন্ত করবে।
পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপল এর প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, 'ছয় মাস ধরে পাহাড় কাটা চলতে থাকলেও পরিবেশ অধিদপ্তর অনেকটা নিরব ছিল। শুরুতেই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হলে পাহাড়টি রক্ষা পেত। আশা করি দক্ষতার সাথে মামলাটি তদন্ত করে পাহাড় কর্তনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে পরিবেশ অধিদপ্তর কাজ করবে।'
এর আগে ছয় মাস ধরে কক্সবাজার পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের বাদশাঘোনা এলাকায় নৌবাহিনীর সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে সরকারি পাহাড় কেটে আসছিলেন বান্দরবান মৌজার লালমোহনবাগান এলাকার চমশিম বমের মেয়ে মাঙাই বম প্রকাশ মেঘা, কক্সবাজার শহরের শীর্ষ পাহাড় কর্তনকারি মোহাজেরপাড়া এলাকার ফকির মোহাম্মদের পুত্র রবি আলমসহ কয়েকজন। গত দুই বছর ধরে বাদশাঘোনা এলাকায় একের পর এক কয়েকজন দখলদারের কাছ থেকে আনুমানিক ২০ শতক সরকারি পাহাড় কিনে নেন মেঘা। এরপর থেকে তিনি সেখানে শ্রমিক দিয়ে পাহাড় কাটা শুরু করেন।
একদিকে পাহাড় কাটছিলেন অন্যদিকে অবৈধভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ করছিলেন। পাহাড় কাটতে গিয়ে তিনি সেখানে নৌবাহিনীর সীমানা প্রাচীরের বেইজ ভেঙে প্রাচীর ঘেঁষে পাহাড়ের মাটি কেটে নেন। এতে সীমানা প্রাচীরটি ঝুঁকিতে পড়েছে। যেকোনো সময় এটি ধসে পড়লে আশপাশের বসতি উচ্ছেদ সহ নানা আইনি জটিলতায় পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। এতে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হন এবং পরিবেশবাদিরা প্রতিবাদ জানান। এ ঘটনায় বুধবার দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।