শেকলে বেঁধে নিযার্তন, চারদিন পর শ্রমিককে উদ্ধার করলো পুলিশ
প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:২২ | অনলাইন সংস্করণ
ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে একটি ইটভাটা থেকে চারদিন ধরে শিকলে বাঁধা অবস্থায় সবুজ আলী (৩৬) নামে এক শ্রমিককে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ইটভাটার মালিকসহ দুইজনকে গ্রেফতারের পর গতকাল শনিবার তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সুত্র ও পুলিশ জানায়, উপজেলার তরফ পাচাইল গ্রামে অবস্থিত এজিবি ব্রিকস নামে ইটভাটায় গত প্রায় দুই মাস ধরে কাজ করছিল সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার সাম্ভান গ্রামের মো. আবজাল হোসেনের(৫৪) এর ছেলে সবুজ আলী। কাজ রেখে পালিয়ে চলে যাবে এই সন্দেহে ওই শ্রমিককে পায়ে শিকল বেঁধে কাজ করাতেন ভাটার মালিক। দিনে কাজ করানোর পর রাতে মালিকের কক্ষে একটি খুঁটির সাথে বেঁধে রেখে চালানো হতো নির্যাতন। এমন ঘটনা জানতে পেরে সবুজের বাবা আবজাল হোসেন থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ গত শুক্রবার গভীর রাতে শিকলে বাধা শ্রমিককে উদ্ধার ও ভাটার মালিক এবং ম্যানেজারকে গ্রেফতার করে।
থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, গত প্রায় দুই মাস আগে নাটোরের হালশা এলাকার ইটভাটার সর্দার আনসার আলী নামে ব্যক্তি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার এজিবি ব্রিকস নামের ইট ভাটার মালিকের কাছ থেকে অগ্রিম ৩ লাখ টাকা নিয়ে সবুজ আলীসহ মোট ১৮জন শ্রমিক দেয়। পরে তিনি লাপাত্তা হয়ে গেলে অন্য শ্রমিকরা বুঝতে পেরে তারাও চলে যায়। থেকে যায় সবুজ আলী। এ অবস্থায় পারিশ্রমিক না পেয়ে তিনিও চলে যেতে চাইলে ব্রিকসের মালিক ও ম্যানেজার ঘটনা বুঝতে পেয়ে পালিয়ে যাওয়ার সন্দেহে তাঁকে গত ৫ ফেব্রুয়ারি পায়ে শিকল বেধে আটকে রেখেই কাজ করানো হয়। সেই সাথে চলে নির্যাতন। এমনাবস্থায় কৌশলে সবুজ আলী অন্য একটি মোবাইলে এ ঘটনাটি বাবা আবজাল হোসেনকে জানায়। পরে গত শুক্রবার রাতে আবজাল হোসেন ঈশ্বরগঞ্জ থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দিয়ে পুলিশ ইটভাটায় গিয়ে শ্রমিক সবুজ আলীকে ইটভাটার মালিকের কক্ষ থেকে পায়ে শিকল বাধা অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। এ সময় ভাটায় অবস্থান করা ভাটার মালিক খাইরুল আলম রাসেল(৪২) ও ম্যানেজার আসাদ মিয়া (৭০) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
এ ব্যাপারে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত ফরিদ আহম্মেদ জানান এ ঘটনায় তিনজনকে অভিযুক্ত করে নিয়মিত মামলা হয়েছে। অন্য অভিযুক্তকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।