নববধূ ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা, বাসর রাতেই ফাঁস

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে ধর্ষনের শিকার হয়ে কাউকে না বলতে পারা নববধূ ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। ঘটনাটি বাসর রাতেই ফাঁস হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীকে তালাক দিলেন স্বামী মমিন মিয়া। এলাকা বাসীর চাপে নববধূর পরিবার বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। তাদের ঘরে এখন তালা ঝুলছে।

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এ বিয়ে ও বিচ্ছেদের ঘটনার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়র্ডের ইউপি সদস্য মো. সেলিম মিয়া তালুকদার।

এ লোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের উত্তর সকদিরামপুর গ্রামের কৈলা বাড়ীতে। এ বাড়ির কৃষক সফিকের মেয়ে স্মৃতি আক্তারের সাথে বিয়ে হয় চাঁদপুরের মমিন মিয়ার। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারী) রাতে। আজ শনিবার পরীক্ষার পর প্রকৃত ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যায়।

ইউপি সদস্য মো. সেলিম মিয়া জানান, মেয়ের বাবা শফিক মিজি একজন কৃষক। তার পরিবারে ৪ জন মেয়ে সন্তান রয়েছে। গত শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারী) বিয়ে দেন ৩য় মেয়ে স্মৃতি আক্তারের। ৩ বছর পূর্বে বড় দুই মেয়ের বিয়ে হয়। ৩য় মেয়ে স্মৃতিকে পুরাণ বাজারে বিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জেনেছি। স্মৃতির বাবা আমাকে কিছুদিন আগে বাজারে যাওয়ার পথে জানান যে তার মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তখন তিনি লিটন নামের এক যুবকের নাম বলেছে। শফিক মিজিকে এ বিষয়ে আমি চেয়ারম্যানকে অবগত করতে এবং আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেই।

মিজি বাড়ীর (অন্তঃসত্ত্বা স্মৃতির বাড়ী) লোকজন অভিযোগ করে বলেন, কৃষক সফিকের পরিবারের লোকজন বহুদিন অসামাজিক কাজের সাথে লীপ্ত রয়েছে। তাদেরকে এসব কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য বললে তারা উল্টো অন্যদেরকে অপবাদ দিয়ে থাকে। বাড়ীর নারী-পুরুষ সকলেই এই ধর্ষণের ঘটনার সাথে জড়িত লিটনের ও স্মৃতির পরিবারের জড়িত সদস্যদের আইনানুগ শাস্তি হওয়া উচিত। মিজি বাড়ির লোকেরা এ বিষয় নিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান।

নব গৃহবধূও অন্তঃসত্ত্বা স্মৃতি আক্তার কান্না জড়িত কন্ঠে গনমাধ্যমকে জানান, গত এক বছরের মধ্যে আমাদের বাড়ির লিটন, ইলিয়াছ মাষ্টার, শিমুল ও এলাকার রনি নামে যুবকরা তাকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে।

এদিকে বর মমিনের মা জানান, তার ছেলে ঢাকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকরী করে। ছেলের বিয়ের পূর্বে এমন কোন ঘটনা তারা জানে না। বিয়ের পর এখন ছেলের বউয়ের এমন পরিস্থিতি দেখে তারা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। পরে তাকে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করে অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি ফাঁস হয়। এ ঘটনায় আমার ছেলে বাধ্য হয়ে ওই মেয়েকে তালাক দিয়েছে।

এদিকে স্মৃতিকে বাড়িতে আনার পর লোকজনের মধ্যে সামালোচনা শুরু হয়। এক পর্যায়ে বাড়ীর লোকজনের চাপে পরিবারটি বাড়ী ছেড়ে পালিয়েছে।

এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: সাইদুল ইসলাম মুঠো ফোনে জানান, এ ধরনের ঘটনা শুনেছি। বিষয়টি জেনে ভিকটিমকে খোঁজ করে পাওয়া যায়নি। ভুক্তভোগি পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।