কক্সবাজারের পেকুয়ায় পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করে আসছে একটি চক্র। অভিযানে গিয়েও স্কেবেটর (মাটি কাটার যন্ত্র) জব্দ করেনি এসিল্যান্ড। যার কারনে স্থানীয়রা এই অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে অভিযানে নেতৃত্বদানকারী পেকুয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) রুম্পা ঘোষ পাহাড় কাটার খবর পেয়ে রাতে অভিযান পরিচালনা করার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, মাটি কাটার একটি স্কেবেটর বিকল করে দেয়া হয়েছে। তবে অভিযানের খবর পেয়ে জড়িতরা সটকে পড়েছে। আপনি অভিযানে গেলেন ঘটনাস্থলে স্কেবেটরও পেলেন? কেন জব্দ করা হয়নি প্রশ্ন করা হলে তিনি কৌশলে প্রশ্নটি এড়িয়ে যান। এক পর্যায়ে প্রতিবেদকে ধন্যবাদ জানিয়ে সংযোগ বিছিন্ন করে দেন।
সূত্র মতে, গত এক সপ্তাহ ধরে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পাহাড় কেটে মাটি পাচার করছে পেকুয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুবাইদুল্লাহ লিটন ও আবুল কাসেম নামের এক ব্যক্তি। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে টইটং ইউনিয়নের জালিয়ার চাং এলাকায় পাহাড় কেটে সাবাড় করছে তারা। মাটি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতি নিলেও এতদিন নিরব ছিল প্রশাসন।
স্থানীয়দের দাবি টইটং বনবিট কর্মকর্তা জমির উদ্দিনকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে দিব্যি মাটি পাচার করে ছিল জুবাইদুল্লাহ লিটন। টইটং ইউনিয়নে পাহাড়খেকো সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা জুবাইদুল্লাহ লিটন।
এবিষয়ে জানতে জুবাইদুল্লাহ লিটনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, কল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
অভিযানে অংশ একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে দাবি করেন, অভিযানের সময় এসিল্যান্ডের মুঠোফোনে একটি কল আসে। ওই সময় তিনি স্কেবেটরটি জব্দ না করে কৌশলে দায়সারাভাবে বিকল করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। তার মতে, যদি স্কেবেটরটি জব্দ করে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বারের জিম্মায় দেয়া যেত। তার তথ্য মতে, ওইদিন স্কেবেটরটির দুইটি ব্যাটারি খুলে নেয়া হলেও এখনো জব্দ তালিকা করা হয়নি। বিক্রি করার পাঁয়তারা চলছে বলে জনান তিনি।
স্থানীয়দের তথ্য মতে, বিকল করা স্কেবেটরটি এখন ওই স্পটে নেয়। অভিযানের পরপরই পাহাড় খেকোরা রাতে আধারে স্কেবেটরটি সরিয়ে পেলেছে।
ঘটনাস্থলে একজন এসিল্যান্ড গিয়ে স্কেবেটর জব্দ না করার কারনে পরিবেশ ধ্বংসকারীরা আরো সৎসাহিত হবে বলে মন্তব্য করেন পরিবেশবাদীরা। বিকল করা স্কেবেটরটি জব্দ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করার দাবি করেন পরিবেশবাদীরা।
মঙ্গলবার বিকালে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চাই থোয়াইহলা চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযানের সত্যাতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযানটি রাতেই হওয়াতে জনবল সংকটের কারনে স্কেবেটরটি জব্দ করা হয়নি। তবে স্কেবেটরটি বিকল করে দেয়ার দাবি করেন তিনি। এই স্কেবেটর দিয়ে পুনরায় মাটি কাটা হচ্ছে, এ প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, প্রয়োজনে পুনরায় অভিযান চালানো হবে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাতের আঁধারে স্কেবেটর (মাটি কাটার যন্ত্র) দিয়ে মাটি কাটার খবর পেয়ে অভিযান পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভুমি) রুম্পা ঘোষ। তবে এই অভিযান নিয়ে রহস্য রয়েছে বলে মন্তব্য করেন অনেকেই।