আজ পহেলা ফাল্গুন, বুধবার সকাল থেকে নেত্রকোণায় চলছে বসন্তকালীন সাহিত্য উৎসব। এ উপলক্ষে নেত্রকোণা সাহিত্য সমাজের পক্ষ হতে জেলা শহরের মোক্তারপাড়ায় সাধারণ গ্রন্থাগার প্রাঙ্গনের বকুলতলায় নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে, জাতীয় ও সাংগঠণিক পতাকা উক্তোলন, বরেন্য সাহিত্যিক খালেকদাদ চৌধুরীর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, বসন্তবরণ, শিশুদের মুক্ত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, স্বরচিত কবিতা, ছড়া ও গল্প পাঠ, তবলা লহরা, বাঁশি, নৃত্য, গীত ও বাউল গান পরিবেশনা, আলোচনা সভা ও খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরষ্কার প্রদান।
সকাল সাড়ে ৯টায় জাতীয় ও সাংগঠণিক পতাকা উক্তোলন ও বসন্ত বন্দনার মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানমালার সূচনা হয়। প্রাবন্ধিক, গবেষক, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর উৎসব উদ্বোধন করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে কবি মোহাম্মদ সাদিক এমপি, সাহিত্যিক অধ্যাপক যতীন সরকার, সাহিত্যিক ফারুক মহিউদ্দীন, কবি তুষার দাস, নেত্রকোনা সাহিত্য সমাজের সভাপতি অধ্যাপক মতীন্দ্র সরকার উপস্থিত ছিলেন। সাহিত্য সমাজের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল্লাহ ইমরান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
সাহিত্য সমাজের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল্লাহ ইমরান বলেন, নেত্রকোণা সাহিত্য সমাজ বিগত ২৭বছর ধরে প্রতিবছরের পহেলা ফাল্গুন এই উৎসবের আয়োজন করে আসছে। এই উৎসবের মাধ্যমে বিশিষ্ট লেখক, কবি ও সাহিত্যিকদের খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরষ্কার প্রদান করা হয়। খালেকদাদ চৌধুরী ১৯০৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারী নেত্রকোণার মদন উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম সংগঠক, খ্যাতিমান প্রাবন্ধিক, গল্পকার, নাঠ্যকার ও উপন্যাসিক। এ ছাড়া তিনি ছিলেন লোকসাহিত্যের অন্যতম সংগ্রাজক। ২০১৮ সালে তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে সরকার। ১৯৮৫ সালে ১৬ অক্টোবর তিনি মৃত্যূবরন করেন।
সাইফুল্লাহ ইমরান জানান, চলতিবছর বিশিষ্ট কবি ও গদ্যশিল্পী গোলাম ফারুক খানকে খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরষ্কার প্রদান করা হবে। এর আগে একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক যতীন সরকার, কবি নির্মলেন্দু গুণ, সাংবাদিক গোলাম সারোয়ারসহ বরেন্য কবি, সাহিত্যিক ও সাংবাদিককে পুরস্কৃত করা হয়েছে। আজকের অনুষ্ঠানমালায় অন্যতম আকর্ষন হচ্ছে শতকন্ঠে গান, শতশিল্পীর অংশগ্রহণে নৃত্য, শতকন্ঠে আবৃত্তি ও বিশিষ্ট কবি-সাহিত্যিকদের স্বরচিত কবিতা ও প্রবন্ধপাঠ।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, ঢাকা থেকে বহুদূরে নেত্রকোণায় শতকন্ঠে গান, নৃত্য আবৃত্তির মধ্যে দিয়ে বসন্ত উৎসবের আয়োজন সত্যিই অভাবনীয়। সকল জেলায় এমন উৎস্যবের আয়োজন করা হলে দেশের সংস্কৃতি আরো উর্বর ও প্রাণবন্ত হবে।