চাঁদপুর জেলার নদী উপকূলীয় উপজেলা ও চরাঞ্চলর জমিগুলো কৃষি আবাদের জন্য অন্যতম। সরিষার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় তুলনামূলক এ বছর চরাঞ্চলে সরিষার আবাদ বেড়েছে। একই সাথে চরের অনাবাদি জমিগুলো এবছর প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে কৃষকরা সরিষার আবাদ করেছে। শুধুমাত্র সদরের রাজরাজেশ^র ইউনিয়নের ৫টি মৌজায় আবাদ হয়েছে ৫০০ হেক্টর। চরাঞ্চলে দিগন্ত জুড়ে হলুদ আর হলুদ সরিষার জমিগুলো। কোন ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে বাম্পার ফলনের আশা কৃষকদের। কৃষি বিভাগ বলছে-স্থানীয়ভাবে তেলের চাহিদা মেটাতে চরাঞ্চলে পরিকল্পিতভাবে সরিষার আবাদ বেড়েছে।
সরেজমিন মেঘনা নদীর পশ্চিমে রাজরাজেশ^র ইউনিয়নের মুগাদি ও গোয়ালনগর গিয়ে দেখাগেছে অধিকাংশ জমিতে সরিষার আবাদ। পাশাপাশি মৌসুমী অন্য ফসল থাকলেও কম।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, এ বছর জেলার ৮ উপজেলায় ৩৭৪০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। গতবছরের তুলনায় ২০০ হেক্টর বেশী। এর মধ্যে মলতব উত্তর, চাঁদপুর সদর, হাইমচর উজেলার চরাঞ্চল এবং কচুয়া ও হাজীগঞ্জ উপজেলায় বেড়েছে সরিষার আবাদ। একই সাথে পরিকল্পিতভাবে চরাঞ্চলের অনাবাদি জমিগুলো সরিষার মাধ্যমে আবাদের আওতায় আনা হয়েছে।
রাজরাজেশ^র ইউনিয়নের মুগাদি চরে জনবসতি কম। নদী ভাঙনের শিকার মো. ইউসুফ আলী। তিনি এ বছর এখানে এসে অস্থায়ীভাবে থাকার ঘর তৈরী করেছেন এবং ৪ একর জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। তার এই সরিষার জমিগুলোতে ফলন ভাল হয়েছে। তিনি ভাল দাম পাবেন বলে আশাবাদী।
গোয়ালনগর চরের বাসিন্দা হাজের খাতুন জানান, এ বছর কুয়াশা পড়লেও সরিষার ফলন ভাল হয়েছে। তাদের পারিবারিক ভোজ্য তেলের চাহিদা মিটিয়ে সরিষা বিক্রি করে তাদের সংসারের কাজে লাগে।
একই চরের কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, প্রতিবছরই নিজ জমিতে সরিষার আবাদ করেন। এ বছরও করেছেন। এ বছর ফলন ভাল হলে আগামীতে করার পরিকল্পনা আছে।
ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হজরত আলী বেপারী জানান, গত বছর সরিষার আবাদ ভাল হয়েছে। যে কারণে এ বছর চরের ৫টি মৌজায় প্রায় ৫শ’ একর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। এ বছর সরিষায় লাভবান হলে তারা আবারও আবাদ করবে।
চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. সাফায়েত আহম্মদ সিদ্দিকী জানান, সরকার ঘোষিত তেল ফসলের আবাদ বৃদ্ধির জন্য যে প্রনোদনা সেই প্রনোদনার কারণে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছর ২০০ হেক্টর জমিতে আবাদ বেড়েছে। বিশেষ করে চরাঞ্চলের অনবাদি জমিগুলো এই সরিষার আবাদের আওতায় আনা হয়েছে। এক্ষেত্রে সরিষার স্থানীয় জাতগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। যে কারণে কৃষকরা খুশি। দিগন্ত জুড়ে হলুদ সরিষার ফুল। সেক্ষেত্রে আমরা যদি চরাঞ্চলে ক্রমান্বয়ে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি করতে পারি তাহলে স্থানীয় চাহিদা সম্পন্ন করতে পারব।