চাঁদপুরে দুর্বৃত্তদের ছোঁড়া এসিড নিক্ষেপে ঝলসে গেছে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে থাকা মা রাশেদা আক্তার ও মেয়ে মিলি আক্তার শরীর। এদের মধ্যে মেয়ে মিলি আক্তারের অবস্থা গুরুতর। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সফিকুল ইসলাম মানিক নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ১১টায় মতলব উত্তরের সুজাতপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর স্বজনরা তাদের দুজনকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে তাদের অবস্থার অবনতি দেখা দিলে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এই ঘটনায় মিলি আক্তারের বাবা আইয়ুব আলী বাদী হয়ে মতলব উত্তর থানায় মামলা করেছেন। মামলায় দুই জনের নাম এবং অজ্ঞাতনামা ৬জনকে আসামী করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিলি আক্তার ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তার স্বামী মো. সায়েম প্রবাসে থাকেন।
স্থানীয়রা জানান, এলাকার একযুবক মিলি আক্তারকে বিয়ের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। কিন্তু মিলি আক্তারের অন্যত্র বিয়ে হয়ে যায়। তবে বিয়ের পর মিলি আক্তার স্বামীর বাড়িতেই বসবাস করতেন। এরমধ্যে বাপের বাড়িতে বেড়াতে এলে রোববার রাতে এমন দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি ও তার মা।
এসিডদগ্ধদের স্বজন সাকিব হাসান জানান, রাতে মা ও মেয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় কে বা কারা জানালার ফাঁক দিয়ে বাইরে থেকে এসিড ছুঁড়ে মারে। পরে তাদের চিৎকারে বাড়ির অন্যরা ছুটে আসেন। পরে আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।
মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান জুয়েল জানান, এসিডে মেয়ে মিলি আক্তারের (২০) মুখ, বুক, পিঠ ও ডান হাত এবং মা রাশেদা আক্তারের (৫৫) বাম হাত ও উরু ঝলসে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের দ্রুত ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহীদ হোসেন জানান, এসিড ছুঁড়ে মারার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনায় জড়িত দুর্বৃত্তদের পরিচয় জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে রাত ১টায় সফিকুল ইসলাম মানিক নামে এক যুবকের এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ওসি আরও জানান, এ যুবক মিলি আক্তারের বিয়ের আগে তাকে উত্যক্ত করতো। তাই সন্দেহভাজন হিসেবে তাকে আটক করা হয়েছে।